—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
লাইনে দাঁড়িয়েও ভোট দিতে পারেননি পঞ্চায়েত ভোটে। এ বারের লোকসভা ভোট দিয়ে মুখে হাসি মালদহের রতুয়ার বাহারালের এক পঞ্চাশোর্ধ্বের। হাসছেন কেন? তিনি বলেন, “নাম প্রকাশ করবেন না। লাইনে দাঁড়িয়েও পঞ্চায়েতে ভোট দিতে পারিনি! বুথ দখল, ব্যালটবাক্স লুট—সব দেখেছি। সে যন্ত্রণা বুকের মধ্যে চেপে এ বারের লোকসভায় শান্তিতে ভোট দিয়েছি।”
বাহারালের মতো রতুয়া, হরিশ্চন্দ্রপুর, কালিয়াচক, মানিকচক, বৈষ্ণবনগরের একাধিক বিধানসভা এলাকায় পঞ্চায়েত ভোটে ‘হিংসার’ ঘটনা ঘটেছিল মালদহে। পঞ্চায়েত ভোটের দিন মানিকচক ও বৈষ্ণবনগরে নিহত হন দুই তৃণমূল কর্মীও। তির, গুলি, বোমায় জখম হন শাসক-বিরোধী শিবিরের একাধিক কর্মী-সমর্থক। সে সব কেন্দ্রে এ বারের লোকসভা ভোট কার্যত নির্বিঘ্নেই হয়েছে, দাবি প্রশাসনের। পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার ঘটনা ঘটা বিধানসভা কেন্দ্রগুলির ভোট নিয়ে লাভ-ক্ষতির হিসেব কষছে শাসক-বিরোধী শিবির।
প্রশাসনের দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে কালিয়াচক ১, ২ ও ৩ নম্বর ব্লকে ৮৬.৪৩, ৮৮.৫৮ ও ৮৭.০৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল। রতুয়া ১ ও ২ ব্লকে ৮৩.৪১ ও ৭৯.২৫ শতাংশ, হরিশ্চন্দ্রপুর ১ ও ২ ব্লকে ৮১.১০ ও ৮২.০৯ শতাংশ ভোট পড়েছিল। লোকসভা ভোটে রতুয়ায় ৭৩.১১, কালিয়াচকের সুজাপুরে ৭৪.৪৯, মোথাবাড়িতে ৭৫.২৯ ও বৈষ্ণবনগরে ৭৯.৭৩ শতাংশ, হরিশ্চন্দ্রপুরে ৭৪.৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছে। কালিয়াচকের সুজাপুরের গয়েশবাড়ির এক বাসিন্দা বলেন, “পঞ্চায়েতে তো ভোটই হয়নি। সব ভোট নিজেরাই দিয়েছে। ফলে, পঞ্চায়েতে ১০০ শতাংশ ভোট পড়লেও অবাক হওয়ার কিছু নেই।”
পঞ্চায়েত ভোটে শাসক দলের ‘সন্ত্রাসের’ জবাব সাধারণ মানুষ এ বারের লোকসভা ভোটে দিয়েছেন বলে একযোগে দাবি করেছেন কংগ্রেস ও বিজেপি নেতৃত্ব। কংগ্রেসের উত্তর মালদহের প্রার্থী মোস্তাক আলমের দাবি, “পঞ্চায়েতে তৃণমূল মানুষকে ভোট দিতে দেয়নি। লোকসভায় মানুষ ভোট দিয়ে তৃণমূলকে জবাব দিয়েছেন।” বিজেপির উত্তর মালদহের প্রার্থী বিদায়ী সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, “২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট লুটের জবাব মানুষ তৃণমূলকে ২০১৯-এ দিয়েছিলেন। এ বারও মানুষ তৃণমূলকে জবাব দিয়ে দেবেন।” রতুয়ার বাসিন্দা তৃণমূলের জেলা সভাপতি আবদুর রহিম বক্সী বলেন, “পঞ্চায়েতে বাম, কংগ্রেস, বিজেপি সন্ত্রাস করে। আমাদের দুই কর্মী নিহত হন। মানুষ এ বার কাকে জবাব দিয়েছেন, বিরোধীরা ৪ জুন টের পাবেন।”