—প্রতীকী চিত্র।
মাস ছয়েক আগে হয়ে যাওয়া ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ঘা এখনও শুকোয়নি। সেই নির্বাচনে শাসক ও বিরোধীদল মিলিয়ে মুর্শিদাবাদ জেলায় ভোটের বলি হয়েছে অন্ততপক্ষে ১৫ জন। ইতিমধ্যে জেলা জুড়ে একের পর এক বেআইনি অস্ত্র, বিস্ফোরক, বোমা, গুলি উদ্ধার করছে জেলা পুলিশ। এরই মধ্যে আরও একটি নির্বাচন দোরগোড়ায়। আর এই লোকসভা নির্বাচনকে সন্ত্রাসমুক্ত করতে বিরোধীদলগুলি নির্বাচন কমিশনের কাছে নানা দাবি করেছে। এ সবের মধ্যে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে আজ শুক্রবার থেকে রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে মুর্শিদাবাদেও কেন্দ্রীয় বাহিনী আসছে। আগামী ১ ও ৭ মার্চ মুর্শিদাবাদের দুই পুলিশ জেলায় ৮ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁদের দিয়ে উপদ্রুত এলাকায় টহল দেওয়ানো, রুটমার্চ করানো হবে বলে জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে বিরোধীদলগুলির দাবি, কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হচ্ছে ঠিকই। তবে তাদের যেন বসিয়ে না রাখা হয়। উপদ্রুত এলাকা এবং ভীত ভোটার, দুষ্কৃতী চিহ্নিত করে ওই সব এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে টহল দিতে হবে। ভোটারদের মনোবল বাড়াতে হবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, ৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলায় এবং ৪ কোম্পানি জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার জন্য আসছে। আজ সন্ধ্যার মধ্যে ৬ কোম্পানি এবং ৭ মার্চের মধ্যে আরও দু’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী জেলায় আসবে। মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র বলেন, ‘‘আমরা মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের অফিস থেকে নির্দেশ পেয়েছি তাতে ১ ও ২ মার্চের মধ্যে মুর্শিদাবাদ জেলায় ৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে। এ ছাড়া পরে আরও দু’কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে।’’ মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব বলেন, ‘‘১ মার্চ আমাদের পুলিশ জেলায় তিন কোম্পানি এবং ৭ মার্চ আরও এক কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী আসবে। তাঁদের দিয়ে এলাকায় রুট মার্চ করানো হবে। ভোটারদের মনোবল বাড়ানো হবে।’’
বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শাখারভ সরকার বলেন, ‘‘ভোটের আগেই জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। কারণ বিগত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে যেমন শাসকদলকে সন্ত্রাস করে ভোট করতে দেখেছি, তেমনই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনেও সীমাহীন সন্ত্রাস দেখেছি। তাই এ ভাবে ভোটের আগে বাহিনী এলে ভোটারদের মনোবল চাঙ্গা হবে।’’’ তাঁর দাবি, ‘‘নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠাচ্ছে। সেই বাহিনীকে বসিয়ে রাখা হচ্ছে, না ঠিক মতো কাজে লাগানো হচ্ছে তার দিকেও আমরা নজর রাখব। আমরা চাই উপদ্রুত অঞ্চল চিহ্নিত করে রুটমার্চ করিয়ে ভোটারদের মনোবল বাড়ানো হোক।’’
জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘উপদ্রুত ও কাটমানির জেলায় কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢোকা ভাল। মানুষের সাহস বাড়বে। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় ঢুকলে রাজ্য পুলিশের দেখানো পথ না দেখে, নিজের পথ নিজে দেখবে। তাঁদের এলাকা সম্পর্কে যেমন ধারণা তৈরি হবে, তেমনই প্রতিটি এলাকার দুষ্কৃতীদের ধরতে সুবিধা হবে। তাই কেন্দ্রীয় বাহিনীকে জেলায় স্বাগত।’’
তবে বহরমপুর মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি অপূর্ব সরকার বলেন, ‘‘যদি ভোট ঘোষণার আগেই শুধু পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্রীয় বাহিনী আসে তার প্রতিবাদ আমাদের থাকবে। তার কারণ বিজেপি শাসিত অন্য রাজ্যগুলিতে মামলা, খুন, সন্ত্রাস বেশি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় বাহিনী অন্য রাজ্যগুলিতে আসবে না কেন?’’