Lok Sabha Election 2024

রচনার কর্মিসভায় গরহাজির অনেকে, প্রকাশ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব

রবিবার দলের প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভায় অনেক নেতাকেই দেখা গেল না। এই তালিকায় দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি থেকে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধানরা রয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পান্ডুয়া শেষ আপডেট: ১৮ মার্চ ২০২৪ ০৮:২৭
Share:

পান্ডুয়ার একটি প্রেক্ষাগৃহে বক্তব্য পেশ করছেন রচনা। —নিজস্ব চিত্র।

এক বছর আগে পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় পান্ডুয়ায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সামনে এসেছিল নানা ঘটনায়। ভোটে এখানে শাসকদলের আশানুরূপ ফল হয়নি। ভোটের পরে ব্লক সভাপতি বদল করা হয়। তবে, গোষ্ঠীকোন্দলে যে লাগাম পরেনি, লোকসভা ভোটের প্রচারের শুরুতেই তা কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেল।

Advertisement

রবিবার দলের প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কর্মিসভায় অনেক নেতাকেই দেখা গেল না। এই তালিকায় দলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি থেকে বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান-উপপ্রধানরা রয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, বৈঠকে ডাক মেলেনি। এ নিয়ে সরাসরি দলের নেতৃত্বকে দুষেছেন প্রাক্তন ব্লক সভাপতি অসিত চট্টোপাধ্যায়, সঞ্জয় ঘোষেরা। এলাকার বিধায়ক রত্না দে নাগ বা ব্লক সভাপতি আনিসুল ইসলাম সে কথা মানেননি।

দলের ‘অনৈক্য’ সামনে আসায় চিন্তায় তৃণমূল নেতৃত্ব। বিষয়টি খানিক লঘু করে দেখানোর চেষ্টায় হুগলি-শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল সভাপতি অরিন্দম গুঁইনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নয়, তবে মনোমালিন্য হয়েছে। মিটিয়ে নেব।’’ রচনার প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপের উত্তরও দেননি।

Advertisement

এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ সিমলাগড় কালীমন্দিরে পুজো দেন রচনা। বিকেলে পান্ডুয়ায় জিটি রোডের ধারে একটি প্রেক্ষাগৃহে কর্মিসভা হয়। সেখানে রচনা ছাড়াও রত্না, ধনেখালির বিধায়ক অসীমা পাত্র, জেলা সভাধিপতি রঞ্জন ধারা প্রমুখ ছিলেন। তবে সঞ্জয়, অসিত, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ময়না মাজি-সহ কয়েক জন কর্মাধ্যক্ষ, সমিতির প্রাক্তন সভাপতি চম্পা হাজরা আসেননি। ব্লকে তৃণমূলের দখলে থাকা ১৪টি পঞ্চায়েতের মধ্যে বেশিরভাগের প্রধান-উপপ্রধানদেরও দেখা যায়নি।

তৃণমূলের প্রবীণ নেতা অসিত বলেন, ‘‘প্রার্থীকে জেলা এবং ব্লকের নেতারা ভুল বোঝাচ্ছেন। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলে রয়েছি। অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে দলের নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। অথচ, প্রার্থীকে নিয়ে কর্মিসভায় ডাকই পেলাম না।’’ সঞ্জয়ের মন্তব্য, ‘‘আমি ব্লক সভাপতি থাকাকালীন বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হয়নি। ব্লকের প্রত্যেক নেতা-কর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতাম। অথচ বিধায়ক এবং বর্তমান সভাপতি এই বৈঠকের কথা আমাকে জানাননি। জেলা নেতাদেরও কেউ যোগাযোগ করেননি।’’ গরহাজির এক পঞ্চায়েত প্রধানের বক্তব্য, ‘‘আমরা ডাক পাইনি। প্রেক্ষাগৃহ ভরাতে অন্য ব্লক থেকে কর্মীদের আনতে হয়েছে।’’

আনিসুলের অবশ্য দাবি, ‘‘ব্লক তৃণমূলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে জানানো হয়েছিল। এ ছাড়াও ফোনে সবাইকে বলা হয়েছে। অনেকেই এসেছেন।’’ রত্নারও দাবি, ‘‘সবাইকে জানানো হয়েছিল।’’

কর্মিসভায় রচনা বলেন, ‘‘আমি অভিনয়ের পাশাপাশি আমার টিভি শো-তেও মহিলাদের অধিকারের কথা বলেছি। এখন দিদি চেয়েছেন, রাজনীতিতে নেমেছি। আপনাদের ভালবাসা পেলে জয়ী হব। আপনাদের পাশেই থাকব।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘যখন যে কাজ করেছি, তা ১০০ শতাংশ দায়িত্ব পালন করেছি। আমি রাজনৈতিক বক্তব্য দেব না। জিতে এলেও না। আমি আপনাদের পাশে আছি, পাশে থাকব।’’

দলের অনৈক্য রচনা টের পেয়েছেন কি না, তা অবশ্য
জানা যায়নি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement