প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
সব ঠিক থাকলে আর তিন মাস পরেই লোকসভা নির্বাচন। হাত আর একশো দিন। সেই সময়ে বিজেপিকে কেমন ভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে, তা রবিবার ঠিক করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজেপি নেতাদের কথায়, পাঁচ ‘মন্ত্র’ দিয়েছেন মোদী।
শনিবার দিল্লির ভারত মণ্ডপম-এ বিজেপির রাষ্ট্রীয় অধিবেশন বসে। যোগ দিয়েছিলেন দেশের সব রাজ্যের বিজেপি নেতৃত্ব। জেলাস্তরের নেতৃত্ব ছাড়াও যোগ দিয়েছিলেন সব রাজ্যের সাংসদ, বিধায়করা। রবিবার সেই অধিবেশন শেষ হয় মোদীর বক্তব্যের মধ্যে দিয়ে। পাঁচ বছর আগে এমনই এক অধিবেশন থেকে মোদী দলের নেতা-কর্মীদের লোকসভা নির্বাচনে লড়ার ‘ভোকাল টনিক’ দিয়েছিলেন। দু’দিনে জেপি নড্ডা, অমিত শাহ, রাজনাথ সিংহ-সহ দলের সব নেতাই ভোট প্রস্তুতি নিয়ে, মোদী সরকারের সাফল্য নিয়ে কথা বলেন। নিজের বক্তব্যেও মোদী ১০ বছরে তাঁর সরকার কী কী কাজ করেছে, তার বর্ণনা দিয়েছেন। আর একেবারে শেষে উপস্থিত সকলকে দিয়ে সঙ্কল্প করিয়ে নিয়েছেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ যাতে ৪০০-র বেশি আসনে জিততে পারে, সেটা নিশ্চিত করতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের নামে স্লোগানের পরে ভোটের স্লোগানও ঠিক করে দেন। বলেন, ‘‘এ বারের স্লোগান, আব কি বার, চারশো পার।’’
একই সঙ্গে ভোটের আগে কী কী করতে হবে বলতে গিয়ে পাঁচটি কথা বলেছেন মোদী। প্রথম নির্দেশ, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন এমন সব উপভোক্তাকারীর (লাভার্থী) কাছে পৌঁছতে হবে। মোদী বলেন, ‘‘সকলের কাছে কাছে গিয়ে বলতে হবে প্রধান সেবক নরেন্দ্র মোদী তাঁদের প্রণাম জানিয়েছেন।’’ দ্বিতীয় নির্দেশ, কোথাও এক জনও নতুন ভোটার থাকবেন না যাঁর কাছে বিজেপি কর্মীরা পৌঁছননি। দশ বছরে বিজেপি সরকার কী কী কাজ করেছে, তার বিবরণ দিতে হবে নতুন ভোটারদের। তৃতীয় নির্দেশ, ভোটের দিনে সবাইকে বুথে নিয়ে আসতে হবে এবং বিজেপি বা এনডিএ শরিকদের প্রতীকে ভোট দেওয়াতে হবে। চতুর্থ নির্দেশ, যে কোনও কারণে এখনও বিজেপি থেকে দূরে রয়েছেন, এমন মানুষদের কাছে পৌঁছতে হবে। আর পঞ্চম নির্দেশ, এ সব করার জন্য নমো অ্যাপের সাহায্য নিতে হবে। যত দ্রুত সম্ভব, বেশি মানুষকে ওই অ্যাপের মাধ্যমে বিকশিত ভারতের অ্যাম্বাসাডর বানাতে হবে।
পর পর দু’বার দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকার পরেও তৃতীয় বারের জন্য এত লড়াই কেন? এমন প্রশ্ন তুলে মোদী বলেন, ‘‘এটা রাজনীতির ভাবনা। কিন্তু আমি রাষ্ট্রনীতিতে বিশ্বাস করি।’’ এই প্রসঙ্গে শিবাজির উল্লেখ করে মোদী বলেন, ‘‘ছত্রপতি হয়ে যাওয়ার পরেও তিনি লড়াই ছাড়েননি। কারণ, রাষ্ট্রের জন্য সঙ্কল্পবদ্ধ ছিল তাঁর জীবন। আমিও রাষ্ট্রের জন্য সঙ্কল্পবদ্ধ। নিজের ঘরের কথা ভাবিনি বলেই এত মানুষের আবাস হয়েছে। গরিব, শিশু, মহিলা এবং যুবদের স্বপ্নপূরণই আমার স্বপ্ন।’’ এখন ভারতের স্বপ্ন দিন দিন বড় হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন মোদী।
রবিবারের বক্তৃতায় মোদী মহিলাদের জন্য আনা বিভিন্ন প্রকল্প থেকে তিন তালাক নিষিদ্ধ করা কিংবা কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারা বিলোপের কথা উল্লেখ করেন। অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন থেকে কর্তারপুর সাহিব যাওয়ার সুযোগ তৈরি করে দেওয়াকে তাঁর সরকারের সাফল্য হিসাবে দাবি করেন। একই সঙ্গে ক্ষমতায় ফিরলে আগামী পাঁচ বছরে তাঁর সরকার কী কী করবে, তার স্বপ্নও দেখিয়েছেন মোদী।