সেলিমের নাম ঘোষণার পরেই সিপিএমের দেওয়াল লিখন শুরু হরিহরপাড়ায়। শনিবার বিকেলে। ছবি: মফিদুল ইসলাম mofidulabp@gmail.com
ইনসাফ যাত্রা থেকে পদযাত্রা, ছোট কর্মিসভা থেকে মৃত কর্মীর বাড়িতে পৌঁছে যাওয়া। তাঁর এই ঘন ঘন মুর্শিদাবাদ আসাকে ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তিনিই হচ্ছেন মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী। আর কংগ্রেস মুর্শিদাবাদ কেন্দ্র ছেড়ে রাখায় সেই জল্পনা আরও প্রবল হয়েছিল দিন দুয়েক আগে থেকে। শেষ পর্যন্ত সেই জল্পনাতেই সিলমোহর দিল বাম নেতৃত্ব। মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রে জোটের হয়ে প্রার্থী হলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। ফলে খুব স্বাভাবিক ভাবেই মুর্শিদাবাদের বাম নেতাকর্মীরা সন্ধ্যা থেকেই খুশির জোয়ারে ভেসেছেন। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই অনেক জায়গায় দেওয়াল লিখন করতে মাঠে নেমে পড়ে কর্মীরা। শুরু হয়েছে প্রচার। সেলিমও আজ, রবিবারই এলাকায় পৌঁছবেন।
এই ঘোষণার পরেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে, মহম্মদ সেলিম প্রার্থী হওয়ায় কতটা বেগ পেতে হবে তৃণমূলকে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের দাবি, এক দিকে বাম-কংগ্রেসের কাছাকাছি আসা, অন্য দিকে হেভিওয়েট প্রার্থী হওয়ায় এই দুটো বিষয়েই মিলেমিশে তৃণমূলের প্রার্থী আবু তাহের খানের ঘাড়ে যে নিঃশ্বাস ফেলবেন সেলিম, তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই।
এ কথা ঠিক, গত লোকসভা নির্বাচনে ২ লক্ষেরও বেশি ভোটে জয়ী হয়েছিল তৃণমূল। তারপর মুর্শিদাবাদ কেন্দ্রের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া পদ্মায় জল গড়িয়েছে অনেক। সিপিএমের সঙ্গে কংগ্রেসের গত পাঁচ বছরে ঘনিষ্ঠতা বেড়েছে অনেকটা। বিশেষ করে গত গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে বাম-কংগ্রেস। তাছাড়া এই কেন্দ্রে ঘনঘন বাম কংগ্রেস নেতারা যাতায়াত করার ফলে মজবুত হয়েছে তাদের সংগঠন। পায়ের তলায় কিছুটা হলেও মাটি ফিরে পেয়েছে বাম ও কংগ্রেস।
যদিও তৃণমূল প্রার্থী আবু তাহের খান একেবারেই এ সব আমল দিতে রাজি নন। তাঁর দাবি, ‘‘মানুষ ভোট দেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে দেখে। ফলে কে কোথায় প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে আমাদের কোনও চিন্তা নেই। জয় নিয়ে আমরা ১০০ শতাংশই নিশ্চিত।’’
গত লোকসভা নির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল কংগ্রেস। চতুর্থ স্থানে চলে গিয়েছিল সিপিএম। সেখানে সিপিএম কেন এই আসন পেল, সে প্রশ্নের উত্তরে বামেদের দাবি, গত লোকসভা নির্বাচনের সঙ্গে এ বারের তফাত আকাশ পাতাল। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে জোট বেঁধে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিও দখল করেছে বাম-কংগ্রেস। মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের সভায় উপচে পড়া ভিড় হয়েছে। সেই আশাতেই বুক বাঁধছে জোট।