আসানসোলে রবীন্দ্র ভবনে কর্মিসভায় প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা ও মন্ত্রী মলয় ঘটক। ছবি: পাপন চৌধুরী।
আসানসোল কেন্দ্রে নিকটতম প্রতিপক্ষের চেয়ে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হাকে চার লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জেতাতে হবে। রবিবার কর্মী সম্মেলনে এই নির্দেশ দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা আসানসোল উত্তরের বিদায়ক মলয় ঘটক। এ জন্য নেতা-কর্মীদের কী করণীয় তারও ব্যাখ্যা দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আগামী দিনে দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে দেখতে চান বলে মন্তব্য করেছেন।
রবিবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে তৃণমূলের বুথ থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত নেতা কর্মীদের নিয়ে একটি ‘মেগা’ কর্মী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। জেলা নেতৃত্ব ছাড়াও এই সম্মেলনে ছিলের রাজ্যের দুই মন্ত্রী মলয় ঘটক ও প্রদীপ মজুমদার। মলয় জানান, গত উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা তিন লক্ষের কিছু বেশি ভোটে জিতেছিলেন। এ বার সেই ব্যবধানকে ছাপিয়ে কমপক্ষে চার লক্ষ ভোটে দলকে জেতাতে হবে। তিনি বলেন, “আপনরা সেই শপথ নিয়ে বাড়ি ফিরুন। এটাই দলের নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসানসোলের নেতা-কর্মীদের দেওয়া শ্রেষ্ঠ উপহার হবে।”
কী ভাবে এই ব্যবধান বাড়বে? মলয় দাবি করেন, সীমীত আর্থিক ক্ষমতার মধ্যে থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী প্রায় ৭৫টি জনমুখী প্রকল্প চালাচ্ছেন রাজ্যে। যার সুফল ভোগ করছেন রাজ্যের মানুষ। এই প্রকল্পগুলির ধারাবাহিক প্রচারের পাশাপাশি ‘মোদীর গ্যারান্টি’ বলে যে প্রচার করা হচ্ছে, তা যে কার্যত ফাঁকা আওয়াজ সে কথা সাধারণ ভোটারদের কাছে তুলে ধরতে হবে। এই কাজ করতে হলে এলাকায় ঘুরতে হবে। শুধুমাত্র টিভির পর্দায় মুখ দেখালে হবে না। সাধারণ মানুষের হৃদয়ে থাকতে হবে। মলয় বলেন, “কেন্দ্রের বিজেপি দলটি ধাপ্পাবাজ। এরা দেশের দু’কোটি বেকারের চাকরি দেওয়ার গ্যারান্টি দিয়েছিল। পূরণ করেনি। প্রতি পরিবারে ১৫ লক্ষ টাকা দেওয়ার গ্যারান্টি দিয়েছিল। তা রক্ষা করেনি।”
এ দিন দলীয় নির্বাচনী কর্মসূচীতে এসেছিলেন বিদায়ী সাংসদ, প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হা। তিনি বলেন, “দিল্লিতে ইন্ডিয়া জোটের সভা হচ্ছে। এই সভা কেন্দ্রের সরকারের কাছে চিন্তা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই বিজেপি নানা ভাবে বিরোধীদের চুপ করাতে চাইছে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী জানান, রবিবারের এই কর্মী সম্মেলনে বুথ থেকে জেলা স্তর পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের তাঁদের নিজেদের কাজের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনে ভোটের প্রচারে কী ভাবে দল কোন কোন বিষয়কে তুলে ধরবে সে সব পরিষ্কার ভাবে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
চার লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জেতানোর যে লক্ষ্য মলয় ঠিক করে দিয়েছেন, সে বিষয়ে বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওঁদের নেতা-কর্মীদের মনোবল তলানিতে ঠেকেছে। তাই এ সব বলে উৎসাহ বৃদ্ধির চেষ্টা করছেন নেতারা। তাতে কোনও লাভ হবে না।”