হুগলিতে মিঠুন চক্রবর্তী ও লকেট চট্টোপাধ্যায়। —নিজস্ব চিত্র।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের সময় ব্রিগেডে প্রধানমন্ত্রীর সভায় নিজেকে ‘জাতগোখরো’ বলেছিলেন তখন সদ্য বিজেপিতে যোগ দেওয়া অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী। তা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। নির্বাচন কমিশনে নালিশের পর জনসভায় আকার-ইঙ্গিতে তৃণমূলকে ‘ছবি’ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন নয়া পদ্মনেতা। তিন বছর সেই সংলাপ খানিক ঘুরিয়ে আওড়ালেন মিঠুন। মঙ্গলবার পাণ্ডুয়ায় বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়ের সমর্থনে সভামঞ্চে নিজের অভিনীত নানা ছবির সংলাপ বলেন বিজেপি নেতা। তাঁর কথায়, ‘‘সিনেমার ডায়লগ থেকে নাকি হিংসা হচ্ছে! যাই হোক, ডায়লগ তো আমি বলবই। তবে একটু ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে বলব।’’ তার পরেই ‘অভিমন্যু’ ছবির সংলাপকে এ দিক-ও দিক করে মিঠুন বলেন, ‘‘আমি জলঢোঁড়াও নই, বেলেবোড়াও নই। আমি এই রকম একটা সাপ, যে গর্ত থেকে ছোট ছোট ইঁদুর বার করে নিয়ে আসে।’’
সভামঞ্চে তখন জনতার আবদার উড়ে আসছে। কেউ বলছেন, ‘এমএলএ ফাটাকেষ্ট’র ডায়ালগ শোনান। কেউ চান হিন্দি ছবির সংলাপ। এক জন তো চিৎকার করে বললেন, ‘‘দাদা মারব’টা এখানে হোক।’’ মিঠুন সেই সংলাপ ঘুরিয়ে বললেন, ‘‘চিমটি কাটব এখানে, আর লাল পিঁপড়ের জ্বলন জ্বলবে ওখানে।’’ হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেটের পাশে দাঁড়িয়ে সংলাপের ফুলঝুরি ছোটাতে ছোটাতে মিঠুন বলেন, ‘‘আমি তুফান। বছরে এক-আধ বার আসি। তবে এ বার প্রত্যেক বার আসব আপনাদের সঙ্গে দেখা করতে।’’ তিনি বলতে থাকেন, ‘‘আমি খবর পড়ি না, খবর দেখি না, আমি শুধু খবর তৈরি করি।’’
তৃণমূলকে নিশানা করে মিঠুনের মন্তব্য, ‘‘আমাদের বিপক্ষ দলের জন্ম মিথ্যা লগ্নে, রাশি দুর্নীতি।’’ সভামঞ্চ থেকে মিঠুন একশো দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে শাসকদলের অভিযোগকে নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘দু’লক্ষ ৩০ হাজার কোটি টাকার হিসাব এই সরকার দেয়নি। তাই এদের টাকা ক্যাগ বন্ধ করে রেখেছে।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘ওই টাকা বন্ধ করে রাখার ক্ষমতা বিজেপির নেই।’’ আবার নাগরিকত্ব ইস্যু নিয়ে মিঠুন বলেন, ‘‘সিএএ সবার জন্য। আসল আধার কার্ড। সেটা থাকলেই হবে। তা ছাড়া বিজেপি মুসলমানদের বিপক্ষে নয়।’’
উল্লেখ্য, মঙ্গলবারই রাজ্যে পঞ্চম দফা লোকসভা নির্বাচনে নিরাপত্তার জন্য ১৬ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী শ্রীরামপুরে এসে পৌঁছে গিয়েছে। আগামী ২০ মে হুগলি জেলার শ্রীরামপুর, হুগলি, আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রে ভোট রয়েছে। হুগলিতে লকেটের প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূলের রচনা।