—নিজস্ব চিত্র।
লোকসভা ভোটের আগে, অন্তর্বর্তীকালীন কেন্দ্রীয় বাজেট (ভোট অন অ্যাকাউন্ট) নিয়ে হতাশ উত্তরের বণিকসভা, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর একাংশ। কারও মতে, এটি অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট বলে কিছুই স্পষ্ট করে বলা নেই। আবার কেউ ‘খুড়োর কল’-এর মতো কিছু জিনিস সামনে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে টিপ্পনীও কেটেছেন। বাস্তবে তা কোথায়, কী ভাবে হবে, বরাদ্দ কত সে সব স্পষ্ট নয় তাঁদের কাছে। এমনকি, বাজেটের আগে বিভিন্ন বণিকসভাগুলোর তরফে যে প্রস্তাবনা পাঠানো হয় অন্তর্বর্তীকালীন বাজেট বলে, উত্তরবঙ্গ থেকে তা কার্যত কেউই পাঠায়নি।
‘ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স’-এর উত্তরবঙ্গ শাখার চেয়ারম্যান সঞ্জয় গোয়েল বলেন, ‘‘এমনিতে কিছুই নেই। বাজেটে বলছে, রাজ্যগুলোকে পর্যটনের উন্নয়নে সুদ ছাড়া ঋণ দেবে কেন্দ্র। সে ক্ষেত্রে এ রাজ্য তা পেলে, উত্তরবঙ্গের মতো এলাকায় পর্যটন বিকাশে সহায়ক হতে পারে। তা ছাড়া, আলাদা করে বলার মতো উত্তরবঙ্গের জন্য কিছু নেই।’’ বণিক মহলের একাংশের মত, সেটা কারা পাবে, স্পষ্ট নয়। তা ছাড়া, আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রে কর কাঠামোয় কোনও বদল আনা হয়নি, য়ে দিকে সাধারণ অনেকেই তাকিয়ে থাকেন।
‘ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ় অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া’র সাম্মানিক সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ পালের কটাক্ষ, ‘‘এই বাজেট সোজা কথায়, সুকুমার রায়ের খুড়োর কল। ঘোড়ার মুখের কাছে কয়েকটি ছোলা দিয়ে বস্তা বাঁধা রয়েছে। বাকি বস্তা ফাঁকা। কয়েকটি ছোলার লোভে ঘোড়া ছুটছে। কোনও বরাদ্দ নেই। কোনও কিছু স্পষ্ট করে বলা নেই। বিগত বাজেটের সঙ্গে এর ফারাক নেই। দু’চারটে জিনিস যোগ করা হয়েছে মাত্র।’’
বণিকসভার সদস্যদের দাবি, কৃষিজ উপকরণে কর ছাড় নেই। উৎপাদনের উপকরণে দাম না কমলে, উৎপাদন ব্যয় কমবে কী করে? উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে মেডিক্যাল কলেজ, আইআইটির মতো কেন্দ্র গড়ার করার কথা বলা হলেও, কোথায় সে সব হবে ঠিক নেই। ‘পুবে তাকাও’ বলে উল্লেখ করা হলেও, কী করা হবে, স্পষ্ট নয়। উত্তরবঙ্গের এত বড় চা শিল্প নিয়ে কোনও শব্দই খরচ করা হয়নি বলেও তাঁরা হতাশ।
‘ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ়, নর্থ বেঙ্গল’ (ফোসিন)-এর সম্পাদক বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘কিছুই নেই এই বাজেটে। পর্যটনের উন্নয়ন, বাড়ির ছাদে সোলার পাওয়ার তৈরি, কৃষি উৎপাদনে সহায়তা মূল্য বৃদ্ধির মতো কিছু ভাল কথা বলা হলেও, সেগুলো উত্তরবঙ্গের মানুষের কাছে কতটা কার্যকর হবে তা পরিষ্কার নয়। তা ছাড়া, অন্তর্বর্তী বাজেট বলে আমরাও কোনও প্রস্তাব পাঠাইনি।’’ ভোটের পরে পূর্ণাঙ্গ বাজেট হলে, তবেই সব পরিষ্কার হবে বলে মনে করেন বণিকসভাগুলির একাধিক কর্তা।