তারাপীঠের কড়কড়িয়ার জনসভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার। ছবি: সব্যসাচী ইসলাম।
অনুব্রত-হীন বীরভূমে লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে এসে প্রিয় ‘কেষ্ট’র কথাই ফের উঠে এল মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে। অনুব্রত ও তাঁর মেয়ে সুকন্যাকে জেলবন্দি রাখার বিষয়ে বিজেপিকে আক্রমণ করার পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, ভোট মিটলেই ছেড়ে দেওয়া হবে অনুব্রতকে।
মঙ্গলবার দুপুরে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে হাঁসন বিধানসভা এলাকার কড়কড়িয়ায় সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘বিজেপি নেতারা এত ভয়ানক কথা বলছেন। তাতে মর্মাহত। এর জন্য আগামী দিনে ওঁদের মূল্য দিতে হবে। অনেক তো চেষ্টা করেছেন। হল কী!’’
এর পরেই গরুপাচার মামলায় তিহাড় জেলে বন্দি অনুব্রত মণ্ডলের নাম উল্লেখ করে মমতা বলেন, ‘‘কেষ্ট আজ আমাদের মধ্যে নেই। তাকে ও তার মেয়েকে বন্দি করে রাখা হয়েছে। ইচ্ছে করে জেলে রাখা হয়েছে, যাতে সে তৃণমূল করতে না-পারে, ভোটের আগে বেরোতে না-পারে।’’ সভাস্থলে উপস্থিত কর্মীদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, ‘‘আমি আপনাদের বলছি, দেখে নেবেন, ভোট মিটলেই ওদের ছেড়ে দেওয়া হবে।”
চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি সিউড়ির মঞ্চ থেকে একই ভাবে অনুব্রতের পাশে থাকার বার্তা দিয়েছিলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতা অভিযোগ করে বলেছিলেন, ‘‘বীরভূমে চক্রান্ত চলছে। কেষ্টকে কত দিন জেলে ভরে রেখেছে। কিন্তু মানুষের মন থেকে ওকে দূর করে রাখতে পারেনি।’’
মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের মন্তব্য প্রসঙ্গে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। বিজেপির বীরভূম সাংগঠনিক জেলা সভাপতি ধ্রুব সাহার কটাক্ষ, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী এই জেলায় এলেই তাঁর স্নেহধন্য গরুপাচারকারী কেষ্টর কথা মনে পড়ে যায়। আসলে এখন কেষ্ট নেই। তাই তৃণমূলের ভোট মেশিনারিও নেই। মুখ্যমন্ত্রী কেষ্টর মতোই ভয়-হুমকি-সন্ত্রাস চালিয়ে অনুগামীদের ভোট করতে বলছেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘তিহাড় জেলে বন্দি কেষ্টর জন্য মুখ্যমন্ত্রীর স্বাভাবিক ভাবেই মন খারাপ হওয়া উচিত। কারণ, এর আগে ভোটে সন্ত্রাস করার জন্য কেষ্টকেই তো উনি ব্যবহার করেছেন! তাই দলীয় কর্মীদের কাছে আশ্বাস দেওয়া ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর আর কী বলার আছে!’’