—প্রতীকী চিত্র।
চা পাতাকেও তাঁর সরকার শস্যবিমার আওতায় আনতে চায় বলে সোমবার আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ার ডিমডিমা চা বাগানে নির্বাচনী জনসভায় জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হলে চা শ্রমিকেরা নন, বরং, বাগান মালিকেরাই উপকৃত হবেন বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। পাশাপাশি, আলিপুরদুয়ার জেলার বীরপাড়া যে বিধানসভা এলাকায় পড়ে, সেই মাদারিহাটে একাধিক চা বাগান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কেন তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করলেন না, সে প্রশ্নও তুলেছে বিজেপি।
লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রে এ দিন জনসভা করেন মুখ্যমন্ত্রী। বীরপাড়ার ডিমডিমা চা বাগানের যাত্রা ময়দানের যে সভায় নাম না করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “(উনি) আগে বলেছিলেন, ভোট দিন চা বাগান খুলে দেব। কিন্তু খোলেননি। ৫৯টি চা বাগান আমরা খুলেছি। বিজেপি খোলেনি। চা শ্রমিকদের আমরা জমির পাট্টা দিচ্ছি। পাট্টার জায়গায় ঘর বানাতে এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা দিচ্ছি। আজ আমাদের বাগান হাসছে।”
এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী জানান, চা পাতাকেও শস্যবিমার আওতায় আনার কথা ভাবছে তাঁর সরকার। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “যেমন কৃষকদের আমরা বিনা পয়সায় শস্যবিমা দিই, তেমনই চা বাগানকে এর অধীনে আনলে ভালই হবে। চা পাতা যদি নষ্টও হয়ে যায়, তা হলে আপনাদের আর্থিক কোনও ক্ষতি হবে না। এই টাকা সরকারি বিমা থেকে পাওয়া যাবে।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণার পরেই সরব হয়েছেন বিরোধীরা। আলিপুরদুয়ারের বিজেপি প্রার্থী তথা বিধানসভায় দলের মুখ্য সচেতক মনোজ টিগ্গা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা হাস্যকর। কারণ, এই ঘোষণা বাস্তবায়িত হলে চা শ্রমিকদের কোনও উপকার হবে না। উপকৃত হবেন বাগান মালিকেরা। তা ছাড়া, মাদারিহাট বিধানসভায় চারটি চা বাগান বন্ধ থাকা সত্ত্বেও মুখ্যমন্ত্রী কেন সেই বাগানগুলোকে নিয়ে কোনও বার্তা দিলেন না, সেটা বুঝতে পারলাম না।’’ বিজেপির আরও অভিযোগ, চা বলয় প্রধান বীরপাড়ায় এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জনসভা করলেও, সেখানে বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকেরা ছিলেন না।
আলিপুরদুয়ারের তৃণমূল প্রার্থী তথা রাজ্যসভার সদস্য প্রকাশ চিক বরাইক বলেন, “উত্তরবঙ্গে চা বলয়ের উন্নয়ন এক মাত্র মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে হয়েছে এবং হয়ে চলছে। সে জন্যই মুখ্যমন্ত্রীর এ দিনের জনসভাতেও মূল ভিড়টা ছিল চা শ্রমিকদের। আসলে, তাদের প্রচারে চা শ্রমিকদের দেখা যাচ্ছে না বলেই বিজেপি মিথ্যা প্রচার চালানোর চেষ্টা করছে।”