Mamata Banerjee

‘আজ কত ফুটানি! আমিই তুলে এনেছিলাম’, বিজেপি বিধায়ককে নিশানা মমতার, আক্ষেপও ঝরে পড়ল গলায়

গৌতম দেবকে পরাজিত করে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে পদ্ম ফোটান বিজেপির শিখা চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শিখার জবাব, ‘‘কেউ তো কাউকে তুলে নিয়ে আসেই।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:৩২
Share:

শিলিগুড়িতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবের হয়ে প্রচার করতে এসেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাঠভর্তি দর্শক ছিল। কিন্তু ভোটবাক্সে তার প্রভাব পড়েনি। শনিবার জলপাইগুড়ি লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী নির্মলচন্দ্র রায়ের হয়ে প্রচার করতে এসে আক্ষেপই ঝরে পড়ল মমতার গলায়। পাশাপাশি নাম না করে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রের বিধায়ক শিখা চট্টোপাধ্যায়কে বিঁধলেন তিনি। ২০২১ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না-হয়, সেই আবেদনও রাখলেন ভোটারদের কাছে। মমতার এই মন্তব্যের পর পাল্টা কটাক্ষ ছুড়ে দিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক শিখাও।

Advertisement

শিলিগুড়ির জাবরাভিটার জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বলেন, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী গৌতম দেবের প্রচারে এসে দেখেছিলাম মাঠ উপচানো ভিড়। কিন্তু পরে দেখলাম গৌতম হেরে গেল। আর যাকে আপনারা জেতালেন তার সম্বন্ধে বিজেপির মত কুরুচিকর মন্তব্য করতে চাই না। কিন্তু মনে রাখবেন, তাকে রাস্তা থেকে তুলে এনে গ্রাম পঞ্চায়েত বা সমিতির মেম্বার আমিই বানিয়েছি। আর তার কত ফুটানি। ডাবগ্রামের কথা তার মনে থাকে না! কী করেছে জিজ্ঞেস করুন তাকে।’’

২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে ১৮টি আসন জিতেছিল বিজেপি। উত্তরবঙ্গের আটটি লোকসভা আসনের মধ্যে সাতটিই বিজেপির দখলে যায়। শুধুমাত্র মালদহ দক্ষিণ কেন্দ্রে জয়ী হয় কংগ্রেস। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে উত্তরবঙ্গে কিছুটা জমি শক্ত করেছিল তৃণমূল। তবে তার পরেও কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, দার্জিলিং, জলপাইগুড়িতে ভাল ফল করে বিজেপি। গত পঞ্চায়েত ভোটে অবশ্য উত্তরবঙ্গে তুলনামূলক ভাল ফল করেছে ঘাসফুল শিবির। মমতার দাবি, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে কোনও বৈরিতা করেনি তাঁর সরকার। সমান উন্নয়ন করেছে। কিন্তু বিজেপি এতগুলো লোকসভায় জিতেও কোনও কাজ করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি। মমতার কথায়, ‘‘উত্তরবঙ্গের সিংহভাগ আসন তো বিজেপির। কিন্তু বিজেপি উত্তরবঙ্গের জন্য কোনও কাজই করেনি। আমরা বেঙ্গল সাফারি পার্ক করেছি। বাগডোগরা বিমানবন্দরে নাইট ল্যান্ডিংয়ের জন্য জমি দিয়েছি। বিনা পয়সায় রেশন দিচ্ছি। আর বিজেপি আটকে রেখেছে সাধারণ মানুষের ১০০ দিনের কাজের টাকা থেকে আবাস যোজনার টাকা।’’ তার পরেই নাম-না করে ডাবগ্রাম ফুলবাড়ি বিধানসভার বিজেপি বিধায়ক শিখাকে নির্বাচনী সভামঞ্চ থেকেই একহাত নেন তৃণমূল নেত্রী মমতা।

Advertisement

২০২১ সালে রাজ্যের তৎকালীন মন্ত্রী গৌতমকে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি আসন থেকে তৃণমূল প্রার্থী করার পরই গোষ্ঠীকোন্দল দেখা যায়। তখন তৃণমূল থেকে বেরিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন শিখা। গৌতমকে পরাজিত করে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়িতে পদ্ম ফোটান শিখা। শনিবার মুখ্যমন্ত্রী যে কথা বলেছেন, তা নিয়ে শিখার প্রতিক্রিয়া, ‘‘কেউ তো কাউকে তুলে নিয়ে আসেই। ওঁকেও সুব্রত মুখোপাধ্যায় এক দিন তুলে নিয়ে এসেছিলেন। সেটাও উনি মনে রাখুন। আসলে প্রত্যেককেই কেউ না কেউ তুলে নিয়ে আসেন।’’ পাশাপাশি তৃণমূল ত্যাগ নিয়ে বিজেপি বিধায়কের মন্তব্য, ‘‘আমিও নালিশ করছি মুখ্যমন্ত্রীর নামে। যখন আমি তৃণমূল ছেড়েছিলাম তার আগে জমি দুর্নীতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে পাঁচখানা চিঠি দিয়েছিলাম। যার একটিরও উত্তর পাইনি। এখন বলছেন, ‘তুলে এনে ক্যান্ডিডেট করেছিলাম!’ আমার কাজ দেখে করেছিলেন (প্রার্থী)। এখন আক্ষেপ করছেন গৌতম দেব জিততে পারেননি বলে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement