মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: ফেসবুক।
কোচবিহারের সভা থেকে বৃহস্পতিবার তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ তুলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এনেছিলেন সন্দেশখালির প্রসঙ্গও। শুক্রবার আলিপুরদুয়ারের সভা থেকে মোদীকে পাল্টা বিঁধলেন ‘দিদি’ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সন্দেশখালির ‘নারী নির্যাতন’ নিয়ে বৃহস্পতিবার ভোটের প্রচারে সরব হয়েছিলেন মোদী। তিনি বলেছিলেন, এ জন্য তৃণমূলকে ভুগতে হবে। শুক্রবার তার পাল্টা মমতা বলেন, ‘‘সন্দেশখালিতে কেউ মারা যায়নি। তা-ও আমরা ওখানে সবটা দেখে দিয়েছি। কিন্তু যখন হাথরস জ্বলছিল, কোথায় ছিলেন নরেন্দ্র মোদী?’’ তৃণমূলনেত্রী আরও বলেন, ‘‘আমরা যদি আরাবুলকে গ্রেফতার করতে পারি, শাহজাহানকে ধরতে পারি, তা হলে তোমরা কেন গুন্ডাকে হোম মিনিস্টার রাখো?’’ তৃণমূলের প্রথম সারির নেতাদের বক্তব্য, নাম না করলেও উত্তরবঙ্গে দাঁড়িয়ে ‘হোম মিনিস্টার’ বলতে মমতা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তথা কোচবিহারের বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিককেই বোঝাতে চেয়েছেন।
১০০ দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম নিয়েও তৃণমূলের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মোদী। আলিপুরদুয়ারে তৃণমূল প্রার্থী প্রকাশ চিক বরাইকের সমর্থনে শুক্রবারের সভায় মমতা বলেন, ‘‘তোমরা হিসেব দাও উত্তরপ্রদেশ, গুজরাত, মুম্বইয়ে কত দুর্নীতি হয়েছে। চ্যালেঞ্জ করছি! বাংলায় যে ক’টা কেস হয়েছিল আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ক্ষমতা থাকলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করো।’’ কী ভাবে দেশের টাকা লুট করে নীরব মোদীরা পালিয়ে গেলেন, সেই প্রশ্ন তুলেও মোদী তথা বিজেপিকে পাল্টা দুর্নীতির অভিযোগে বিঁধতে চেয়েছেন মমতা।
আবাস যোজনায় কেন্দ্রের ‘বঞ্চনা’র কথা উল্লেখ করে মমতা বলেছেন, ‘‘যদি ওরা বাড়ির টাকা দিত, তা হলে ঝড়ে এত মানুষের ঘর ভাঙত না।’’ তাঁর কথায়, ‘‘প্রধানমন্ত্রী যা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তা পূরণ করেননি। চা-বাগানের দশ লক্ষ মানুষকে বিপদে ফেলেছেন। ঝড়ে যাঁদের বাড়ি ভেঙেছে, তাঁদের নাম আবাসের তালিকায় ছিল। বাড়ি পেলে আজ ওদের এই দুর্দশা হত না।’’
সিএএ নিয়ে বাংলার মানুষকে ‘আশ্বস্ত’ করে মোদী বলেছিলেন, ‘‘বিজেপি সরকার সিএএ নিয়ে এসেছে। প্রতি পরিবারকে নাগরিকত্ব দেওয়া মোদীর গ্যারান্টি। বাংলার প্রতি পরিবারকে বলব তৃণমূল, বামেরা আপনাদের ভয় দেখাতে পারে। কিন্তু আপনারা ১০ বছর আমার কাজ দেখেছেন। মোদীর গ্যারান্টির উপর ভরসা রাখুন।’’ পাল্টা মমতা বলেছেন, ‘‘আমরা সিএএ, এনআরসি করতে দেব না। সিএএ-তে আবেদন করলেই আপনারা বিদেশি হয়ে যাবেন! আমার বাবারই তো সার্টিফিকেট ছিল না। আপনাদের কী করে থাকবে?’’