অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিচ্ছেন কুনার হেমব্রম। —নিজস্ব চিত্র।
আচমকা নয়। বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অনেক ভেবেচিন্তেই। রবিবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে ঘাসফুল আঁকা ঝান্ডা তুলে নেওয়ার পর এমনই জানালেন ঝাড়গ্রামের বিদায়ী সাংসদ কুনার হেমব্রম। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে তুলনাও টানলেন কুনার। তাঁর দাবি, বিশেষত জঙ্গলমহলের উন্নতিকল্পে যে কাজ এবং কাজের প্রচেষ্টা তৃণমূল দেখিয়েছি, তার ধারেকাছে নেই মোদী সরকার।
রবিবার ঝাড়গ্রাম লোকসভার তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সোরেনের সমর্থনে সভা করেন অভিষেক। সেই সভার আগে তৃণমূলে যোগ দেন বিজেপির বিদায়ী সাংসদ কুনার। ঘটনাচক্রে বিজেপি প্রার্থীর প্রচারে তখন খড়্গপুরে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিষেক দাবি করেন, আদিবাসী, তফসিলিদের জন্য মোদী সরকার কিছুই করেনি। তার প্রতিবাদে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন কুনার। আর ঝাড়গ্রামের বিদায়ী সাংসদের কথায়, ‘‘হঠাৎ নয়। চিন্তাভাবনা ছিলই (তৃণমূলে যোগদানের)।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘জঙ্গলমহলে যে কাজ হয়েছে তৃণমূলের তরফে তথা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে, সেটা যদি কম্পেয়ার (তুলনা) করেন কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে— তার কোনও তুলনা হয় না।’’
বিদায়ী সাংসদের দাবি, তিনি ভোটের টিকিট না পেয়ে দল ছাড়েননি। তাঁর দাবি, ‘‘আমার তো চাওয়া-পাওয়া সেই রকম কিছু নেই। কাজ হলেই হল। আর এঁরা (তৃণমূল) যে ভাবে কাজ করছেন, তাতে একটু হাত লাগাতে চাই। সহযোগিতা করতে চাই।’’
বিজেপি ধর্মীয় বিভাজনের পথে হেঁটে ভোটের বৈতরণী পার হতে চাইছে বলে অভিযোগ কুনারের। তাঁর অভিযোগ, ‘‘হিন্দুত্ব সবার উপরে চাপিয়ে দিতে চাইছে বিজেপি।’’ তিনি বলেন, ‘‘ভারতবর্ষে এত দিন বসবাস করছে আদিবাসীরা। কিন্তু আমাদের পরিচিতি থাকবে না!’’
অন্য দিকে, বিদায়ী সাংসদ কুনারের দলবদলে বিজেপিতে কোনও প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করেছেন পদ্মশিবিরের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, এটা কোনও খবরই নয়। আমাদের বাতিল করা জিনিস অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়ে বেড়াচ্ছেন। বিজেপির যেগুলো উচ্ছিষ্ট, সেগুলো নিচ্ছে ওরা। মানে বিজেপি বাড়ছে।’’