দেবদাস মণ্ডল, বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি। — ফাইল চিত্র।
রাত পোহালেই ভোট বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রে। তার ঠিক আগের দিন বাঁশপেটা করার দাওয়াই দিয়ে বিতর্কে বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতি দেবদাস মণ্ডল। ভোট লুট রুখতে সাংবাদিক বৈঠক করে দলীয় কর্মীদের বাঁশ ধরার নিদানের পাশাপাশি, মহিলাদেরও ঝাঁটা, খুন্তি নিয়ে বিদায় দেওয়ার আবেদন রেখেছেন দেবদাস। বিজেপি নেতার এই মন্তব্যের বিরোধিতা এসেছে তৃণমূলের তরফে। হার নিশ্চিত বুঝে পাগলের প্রলাপ, কটাক্ষ করেছে রাজ্যের শাসকদল।
একটা সময় ছিল, যখন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের ‘গরম-গরম’ বাণী শুনলেই বোঝা যেত, ভোট এসেছে জেলায়। ইদানীং তিনি জেলবন্দি। কিন্তু তাঁর শূন্যতা পূরণের লোকের অভাব নেই। বনগাঁয় ভোটের ঠিক এক দিন আগে সেই কথাই যেন ফলে গেল অক্ষরে অক্ষরে। কেষ্টর সুর এ বার বিজেপির জেলা সভাপতি দেবদাসের গলায়। ভোটের মুখে বিজেপির পোস্টার, ফ্লেক্স ছিঁড়ে দিচ্ছে তৃণমূল। প্রশাসনে নালিশ জানিয়েও কাজ হচ্ছে না। এই অভিযোগে রবিবার সকালে সাংবাদিক বৈঠক করেন দেবদাস। সেখানেই বাঁশপেটা করার নিদান দিয়ে বিতর্কে জড়ালেন এই বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, ‘‘যদি তৃণমূলের কোনও হার্মাদ, গুন্ডাবাহিনী আসে, বাড়িতে আপনাদের ঝাঁটা আছে, রান্না করার খুন্তি আছে, তা নিয়ে বেরিয়ে এদেরকে বিদায় দেবেন আপনারা। আর বিজেপির কার্যকর্তা এবং সাধারণ মানুষকে বলব, ভোট দিতে বাধা দিলে তিন হাত লম্বা বাঁশ রেডি করে রাখবেন। ঠ্যাং ভেঙে দেবেন। মেরে হার্মাদদের ঠ্যাং ভেঙে দেবেন। মেরুদণ্ড সোজা করে ভোট দিন।’’
দেবদাসের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসতেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। সমালোচনা করেছে বিরোধীরা। তাদের প্রশ্ন, নিরাপত্তার বিষয়টি দেখভাল করে পুলিশ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী। ভোটার বা দলীয় কর্মীদের লাঠি ধরার নির্দেশ দিয়ে তিনি কি সামগ্রিক ভোট পরিচালন ব্যবস্থারই বিরুদ্ধাচরণ করছেন না? তৃণমূল অবশ্য বিজেপিকে এ নিয়ে কটাক্ষ করেছে। তাঁদের দাবি, হার নিশ্চিত বুঝে পাগলের প্রলাপ বকছে বিজেপি। বনগাঁ সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সহ-সভাপতি প্রসেনজিৎ ঘোষ বলেন, ‘‘এই লোকসভায় পরাজয় নিশ্চিত, তা বিজেপি বুঝে গিয়েছে। পায়ের তলা থেকে মাটি হারিয়ে গিয়েছে। নিশ্চিত পরাজয় জেনে উন্মাদের মতো আচরণ করছে। শেষ কথা তো মানুষ বলবেন, এখানে বিজেপির গুন্ডামির কী আছে! আসলে, বিশ্বজিৎ দাস লক্ষাধিক ভোটে জিততে চলেছেন। তা বুঝতে পেরেই পাগলের প্রলাপ বকে যাচ্ছেন।’’ দেবদাসের তোলা পোস্টার ছেঁড়ার অভিযোগও মানতে চাননি প্রসেনজিৎ। তাঁর দাবি, হারের ভয়ে দিশেহারা হয়ে বিজেপিই নিজেদের পোস্টার ছিঁড়ে তা তৃণমূলের ঘাড়ে চাপাতে চাইছে।