কালীপদ সোরেন। —ফাইল চিত্র।
তৃণমূল প্রার্থী কালীপদ সরেন রাজনীতিতে একেবারেই নতুন। সাহিত্যিক, অভিনেতা হিসেবে সাঁওতালি মহলে পরিচিতি রয়েছে তাঁর। অচেনা ময়দানে সেটাকেই পুঁজি করতে চাইছেন। ভোটারদের মন কাড়তে সাঁওতালি ভাষার নানা সচেতনতা ও বিনোদনমূলক গানও গাইছেন তিনি। এবার সরাসরি রাজনীতির কথা বলতে নেত্রীর আদর্শ ও উন্নয়ন নিয়েও গান লিখে ফেললেন তিনি। খুব শীঘ্রই সেই গান বাজবে তৃণমূলের প্রচারে।
সাহিত্যিক কালীপদ পদ্মশ্রী ছাড়াও সাহিত্য অকাদেমি, বঙ্গবিভূষণ, সারদাপ্রসাদ কিস্কু স্মৃতি পুরস্কার, সাধু রামচাঁদ মুর্মু স্মৃতি পুরস্কার, পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু-সহ নানা পুরস্কার পেয়েছেন। শুধু লেখাই নয়, যাত্রাপালাতেও চুটিয়ে অভিনয় করেছেন তিনি। এর আগেও নিজে গান লিখে সুর দিয়েছেন। ৪০টি গানের সব মিলিয়ে ৪টি অডিয়ো সিডি প্রকাশিত হয়েছে তাঁর। নিজস্ব যাত্রাদলও আছে। গল্প, কবিতা, রম্য রচনার বাইরে ২০০৫ সালে ‘সেরেঞ আখড়ারে খেরওয়াল’ নামে সাঁওতালি গানের বইও বের করেছিলেন তিনি। এবার আবার গান লিখতে কলম ধরলেন তিনি।
ঝাড়গ্রাম লোকসভা এলাকায় আদিবাসী ভোটার কমবেশি ৩০ শতাংশ। সেই ভোট নিজের ঝুলিতে টানতে মরিয়া সাহিত্যিক প্রার্থী। নয়াগ্রাম, গোপীবল্লভপুর, গড়বেতা, বান্দোয়ান— যেখানেই যাচ্ছেন সাঁওতালি গান শোনাচ্ছেন তিনি। প্রচারের মাঝে সময় পেলে বাড়িতেও গানের মহড়া দিয়ে নিচ্ছেন। কালীপদ বলছেন, ‘‘যেখানে জনগণ শুনতে চাইছেন, সেখানে গান করছি। গতকাল পুরুলিয়ার বোরোতে গিয়েছিলাম। সেখানে আনন্দমূলক গান করেছি। আবার কখনও প্রচারে গিয়ে সচেতনতামূলক গান করছি। নিজেদের আত্মমর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য গান করছি। এবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা বলব গানে গানে। কাজ চলছে।’’
বুধবার, রামনবমীর দিন প্রচার কর্মসূচি ছিল না। বাড়িতেই ছিলেন কালীপদ। এদিনও বেশ কয়েকটি গান লেখেন তিনি। জানালেন, সাঁওতালি ভাষায় দিদির আদর্শ ও উন্নয়ন নিয়ে বেশ কয়েকটা গান ইতিমধ্যেই ‘কম্পোজ’ করে ফেলেছেন। সেগুলো রেকর্ডিং করে বিভিন্ন সভায় বাজানো হবে। মনে করিয়ে দিলেন, ‘‘নিজে হিরো, ভিলেনের অভিনয় করেছি। ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত টানা যাত্রার অভিনয় করেছি বাংলা, বিহার এবং ওড়িশায়। কমপক্ষে ৩০টি যাত্রায় অভিনয় করেছি। ফলে গান লিখে মানুষের আরও কাছে পৌঁছতে পারব।’’
কালীপদের এই কৌশলে ঝাড়গ্রাম জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মুও খুশি। দুলাল বলছেন, ‘‘উনি সাহিত্যিক ও নাট্যকার। আদিবাসী মানুষের ইচ্ছায় উনি গান করছেন। মানুষজন গান শুনতে চাইছেন। খুশিও হচ্ছেন।’’