Lok Sabha Election 2024

মানিক জেলে, তৃণমূলের ‘লিড’ নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

বারে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। তৃণমূল সূত্রে খবর, মহুয়া ও মানিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement

সাগর হালদার  

পলাশিপাড়া শেষ আপডেট: ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৮
Share:

ভোট প্রচারে মহুয়া মৈত্র। —ফাইল চিত্র।

গত লোকসভা বা বিধানসভা নির্বাচনে পলাশিপাড়া বিধানসভায় এগিয়ে ছিল তৃণমূল। তবে স্থানীয় বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এখন জেলবন্দি। তার অভিঘাতে লোকসভা ভোটে সমীকরণ কী দাঁড়াবে তা নিয়ে ধন্দ বিভিন্ন মহলে। যদিও ওই বিধানসভায় আগের মতো ‘লিড’ দিতে পারবে বলে দাবি ক্ষমতাসীন তৃণমূলের। যদিও তা মানতে নারাজ বিরোধীরা।

Advertisement

পলাশিপাড়া বিধানসভার মধ্যে রয়েছে ১৩টি পঞ্চায়েত। তার মধ্যে হরনগর, বিক্রমপুর, ধনঞ্জয়পুর ও বিলকুমারি পঞ্চায়েত নাকাশিপাড়া ব্লক এবং চাঁদেরঘাট, পাথরঘাটা ২ পঞ্চায়েত তেহট্ট ১ ব্লকের অন্তর্গত। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে ১০টি পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে রাখতে পেরেছিল ঘাসফুল শিবির। এরই মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য গ্রেফতার হন। সেই ঘটনার পর ২০২৩ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮টি পঞ্চায়েত নিজেদের দখলে আনতে পেরেছিল তৃণমূল। যদিও তৃণমূলের দাবি, পঞ্চায়েত বেদখল হওয়ার সঙ্গে বিধায়কের জেলে যাওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।

এ বারে কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী মহুয়া মৈত্র। তৃণমূল সূত্রে খবর, মহুয়া ও মানিকের মধ্যে দ্বন্দ্ব মাঝেমধ্যে প্রকাশ্যে এসেছে। এখন বিধায়ক জেলে। ফলে সমীকরণ কী দাঁড়াবে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। মানিক গোষ্ঠীর লোকজন মহুয়াকে কতটা সমর্থন করবেন, তা নিয়েও স্পষ্ট ধারণা নেই কারও। এই বিধানসভা থেকে গত লোকসভা নির্বাচনে প্রায় ত্রিশ হাজার লিড ছিল তৃণমূলের। এ বার কী হবে সে দিকে তাকিয়ে
সব মহল।

Advertisement

পলাশিপাড়ায় প্রায় ৬০ শতাংশ সংখ্যালঘু ভোট রয়েছে। এ দিকে সিপিএমের প্রার্থী হয়েছেন এসএম সাদি। সূত্রের খবর, পলাশিপাড়া বিধানসভা হাতের তালুর মতো তাঁর চেনা। ২০১১ সালে বিধানসভা ভোটে মানিক ভট্টাচার্যকে হারিয়েই বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। তবে ২০১৬ সালে তিনি হেরেছিলেন। ২০২১ সালেও মানিক ভট্টাচার্যের কাছে পরাজিত হন। সিপিএমের দাবি, মানুষ ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ তৃণমূলের বিকল্প চাইছেন। আর তার বিকল্প সিপিএম। সে কারণেই গত লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় গত বিধানসভা ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ওই বিধানসভা এলাকায় সিপিএমের ভোট বেড়েছে।

অন্য দিকে, ওই বিধানসভা এলাকায় বেশ কিছু জায়গায় এসইউসি বেশ মজবুত। তারাও এ বার ওই কেন্দ্রে প্রার্থী দিয়েছেন। তাদের প্রার্থী ইসমত আরা খাতুন। প্রার্থী দিয়েছে আইএসএফও। আফরোজা খাতুন তাদের প্রার্থী। সংখ্যালঘু ভোটারেরা ওই দুই প্রার্থীকে সমর্থন করলে বিপদ বাড়তে পারে তৃণমূলের। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যেহেতু ওই বিধানসভা কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটারের সংখ্যা বেশি, সে ক্ষেত্রে ভোট ভাগাভাগি হলে আগের মতো লিড নাও থাকতে পারে তৃণমূলের। ভোট ভাগ হলে লাভবান হতে
পারে বিজেপি।

তেহট্ট ২ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি দেবাশিস বিশ্বাস বলেন, “আইএসএফ কিংবা সিপিএম সবাই বিজেপির এজেন্ট। এ বিষয়টি মানুষকে বোঝাতে আমরা পেরেছি। ফলে আগের থেকে ভাল ফলের আশা আমরা রাখছি।” নদিয়া জেলা উত্তর বিজেপির সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “দুর্নীতিপরায়ণ তৃণমূলের চেহারা সবাই দেখেছেন। ফলে তাদের দিকে কেউ যাবেন না। বিজেপি ভাল ফল করবে।” সিপিএমের পলাশিপাড়া এরিয়া কমিটির সম্পাদক সলিল কর বলেন, “মানুষ বুঝছেন আর আমরাও বুঝতে পারছি সিপিএম এই কেন্দ্রে জিতবে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement