অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
‘নির্ণায়ক’ ভূমিকা নিতে পারে রাজ্য সরকারের ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’। সে বিষয়ে জেলার বিজেপি নেতাদের কণ্ঠেও কখনও মিলেছে উদ্বেগের সুর। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা একাধিকবার কেন্দ্রের অন্নপূর্ণা প্রকল্পের সুবিধা দেওয়ার ব্যাপারে নিজের বক্তৃতায় উল্লেখ করেছেন। এমন পরিস্থিতে তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের প্রচারেও উঠে আসছে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রসঙ্গ। তাঁকে দাবি করতে শোনা যাচ্ছে, লক্ষ্মী ভান্ডার কারও ব্যক্তিগত অর্থ থেকে নয়, জনসাধারণের করের টাকা থেকে বিলি করা হচ্ছে।
সোমবার বিকেলে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ক্ষুদিরাম মোড়ে প্রচার সারেন তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ। চণ্ডীপুর-নন্দীগ্রাম সড়ক সংলগ্ন মাঠে ওই সভায় ছিলেন বিজেপি তমলুক সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি প্রলয় পাল। সভায় অভিজিৎ বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তাঁর ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ব্যক্তিগত অর্থ থেকে দিচ্ছেন না। এটা সরকারি কোষাগার থেকে আসছে। যা আমার আপনার করের টাকা থেকে দেওয়া হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কোষাগারে কেন্দ্রীয় সরকারও টাকা দেয়। লক্ষ্মী ভান্ডার একটা উন্নয়নমূলক প্রকল্প। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় থাকুক বা না থাকুক, লক্ষী ভান্ডার বন্ধ হবে না। কারণ ভারতবর্ষে কোনও উন্নয়নমূলক প্রকল্প বন্ধ হয় না।’’
রাজনৈতিক মহল মনে করাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীকে নানা সময়ে একাধিকবার দাবি করতে শোনা গিয়েছে, তিনি একাধিক প্রকল্প পৌঁছে দিচ্ছেন জনসাধারণের দোরগড়ায়। বিজেপির বক্তব্য, যে কোনও সরকারেরই এটাই কাজ— জনগণকে পরিষেবা দেওয়া। তাই এ নিয়ে এত আহমিকা করার কিছু নেই। যদিও মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী বলেন, ‘‘বিজেপি বুঝতে পারছে, লক্ষ্মী ভান্ডার দেওয়ার ফলে মানুষ বিজেপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। সেটা জেনেই ওরা উল্টেপাল্টা বলছে।’’ সোমবার রাতে নন্দীগ্রামের আমদাবাদ-১ পঞ্চায়েত এলাকাতেও অভিজিৎ প্রচার চালান। সঙ্গে ছিলেন তমলুকের বিদায়ী সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারী।
অন্যদিকে, এ দিন হলদিয়া মহকুমা এলাকায় প্রচারে ছিলেন তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যও। তিনি সকালে মহিষাদল ব্লকের গড়কমলপুর এলাকাতে জনসংযোগ কর্মসূচি করেন। সঙ্গে ছিলেন মহিষাদলের তৃণমূল বিধায়ক তিলক চক্রবর্তী। মহিষাদল বাজারে বিভিন্ন দোকানে ক্রেতা-বিক্রেতার সাথে কুশল বিনিময় করেন দেবাংশু। বিকেলে রূপনারায়ণ পেরিয়ে পাড়ি দেন মীনদ্বীপ মায়াচরে। স্থানীয়দের অভাব অভিযোগ শোনেন। সন্ধ্যায় গেঁওখালি বাজারে পথসভা করেন দেবাংশু। অভিজিতের লক্ষ্মীর ভান্ডার মন্তব্য প্রসঙ্গে দেবাংশু বলেন, ‘‘রাজ্যে ক্ষমতা এলে কেন লক্ষ্মী ভান্ডার করতে হবে? বিজেপি কেন্দ্রে ১০ বছর ক্ষমতায় রয়েছে। কেন করতে পারল না বিজেপি। বিজেপি যতগুলি রাজ্যের ক্ষমতায় আছে সেই রাজ্যে চালু করেননি কেন? রাজ্যে ক্ষমতায় এলে আশ্বাস দিচ্ছেন তিন হাজার টাকা করে অন্নপূর্ণা ভাণ্ডার দেবেন।’’