—প্রতীকী চিত্র।
রাজনৈতিক সন্ত্রাসের দাগ লেগে রয়েছে গায়ে। সেই কোতুলপুরে এ বারে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে ভোট পড়ল সব চেয়ে বেশি। ভোটে কি ‘জল’ মিশেছে, না কি প্রকৃত ভোটারেরা খোলা মনে ভোট দিতে পারায় বেড়েছে ভোটের হার, চলছে জোর চর্চা।
বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সোনামুখী, ইন্দাস ও কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্রগুলি ‘রাজনৈতিক সন্ত্রাস’-কবলিত হিসেবে পরিচিত। ২০১৮-র পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই তল্লাটে কোথাও বিরোধী প্রার্থী ছিলেন না। এ বারের পঞ্চায়েত ভোটে সব জায়গায় জেলা পরিষদ স্তরে ভোট হলেও বড় অংশে পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে বিরোধী প্রার্থী না থাকায় বিনা বাধায় পঞ্চায়েত দখল করেছে তৃণমূল। লোকসভা নির্বাচনের শুরু থেকেও ওই এলাকাগুলিতে চাপা উত্তেজনা ছিল। প্রশাসনের তরফেও ভোটে শান্তি বজায় রাখতে সব চেয়ে বেশি ‘কুইক রেসপন্স টিম’ (কিউআরটি)-ও ওই তিনটি বিধানসভা কেন্দ্রের সন্ত্রাস-কবলিত এলাকাগুলিতে মোতায়েন করা হয়েছিল।
শনিবার মাঝরাত পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য বলছে, বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে ভোট পড়েছে ৮৩.৯৫ শতাংশ। সেখানে কোতুলপুর বিধানসভা কেন্দ্রে ৮৭.৩২ শতাংশ, ইন্দাসে ৮৩.৩৪ শতাংশ ও সোনামুখী কেন্দ্রে ৮৩.৩৭ শতাংশ ভোট পড়েছে।
কোতুলপুরে এত ভোট পড়ল কী করে, উত্তর খুঁজছে রাজনৈতিক শিবির। উঠে আসছে নানা মতও। সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অজিত পতি বলেন, “কোতুলপুরের অন্তত ১০০টি বুথে সন্ত্রাসের জন্য আমরা পোলিং এজেন্ট বসাতেই পারেনি। আমার মনে হয়, সেখানে ভুয়ো ভোট হয়েছে। এলাকায় নেই এমন বা মৃত ভোটারের পরিচয়পত্র নিয়ে গিয়ে অনেকেই ভোট দিতে পারেন। বিজেপি ও তৃণমূল, যার সংগঠন যেখানে শক্ত, সেখানে তারাই ভুয়ো ভোট দিয়ে থাকতে পারে।”
বিজেপি শিবির অবশ্য ভুয়ো ভোটের সরাসরি অভিযোগ তুলছে না। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অমরনাথ শাখা বলেন, “এখানকার মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে তৃণমূল। সেই আক্ষেপ ভোটারদের মধ্যে রয়েছে। লোকসভা ভোটে নিরাপত্তা পেয়ে মুক্ত মনে ভোট দেওয়ার সুযোগ মানুষ ছাড়তে চাননি। তবে বুথভিত্তিক ফলাফলে এ নিয়ে আরও নিশ্চিত ভাবে জানা যাবে।”
ভোটে কারচুপির দাবি মানছে না তৃণমূলও। দলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিক্রমজিৎ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মানুষ উৎসবের মেজাজে ভোট দিয়েছেন। বিশেষ করে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য ভোট দেওয়ায় বাড়তি উৎসাহ পেয়েছেন মহিলারা।”