—প্রতীকী চিত্র।
উলুবেড়িয়া লোকসভার অধীন সাতটি বিধানসভার মধ্যে ছ’টিতে গড়ে ৩০ শতাংশ করে সংখ্যালঘু ভোট আছে। ব্যতিক্রম উদয়নারায়ণপুর। সেখানে সংখ্যালঘু ভোটার মাত্র ৭ শতাংশ। এ বারের লোকসভা নির্বাচনে সেই উদয়নারায়ণপুরেও দাঁত ফোটাতে পারল না বিজেপি। উল্টে বিজেপিকে এখানেই সবচেয়ে বেশি ভোটের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়তে হয়েছে। তৃণমূলের সঙ্গে এই ব্যবধান প্রায় ৪৭ হাজার ভোটের।
উদয়নারায়ণপুর ছাড়া বাকি ছ’টি বিধানসভাতেও (বাগনান, উলুবেড়িয়া উত্তর, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ, উলুবেড়িয়া পূর্ব, শ্যামপুর এবং আমতা) তৃণমূল টেক্কা দিয়েছে বিজেপিকে। ওই সব বিধানসভায় গড়ে ৩০ শতাংশ করে সংখ্যালঘু ভোটার থাকার সুবিধা তাঁরা পেয়েছেন বলে দাবি গ্রামীণ জেলা তৃণমূল নেতাদের। তাঁরা আরও জানান, এই প্রবণতা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনেও ছিল। সে বারেও অবশ্য নামাত্র সংখ্যালঘু ভোটারের উদয়নারায়ণপুরেও জয় পায় তৃণমূল। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে জয়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ১৪ হাজারের। যা সাতটি বিধানসভার মধ্যে সবচেয়ে কম। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব তখন জানিয়েছিলেন, সংখ্যালঘু ভোট কম থাকায় তাঁদের জয়ের ব্যবধান কমেছে। যে সুবিধা অন্য বিধানসভাগুলিতে পাওয়া গিয়েছিল, তা উদয়নারায়ণপুরে মেলেনি।
কিন্তু এ বার উদয়নারায়ণপুরেও চমকপ্রদ ফল তৃণমূলের। স্থানীয় বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘২০২১ সালে বাকি বিধানসভাগুলিতে যখন আমাদের দল স্বস্তিদায়ক ব্যবধানে বিজেপিকে হারায়, সেখানে আমার ব্যবধান হয় খুব কম। সেই ঘটনাই আমাকে নতুন করে ভাবতে শেখায়।’’
সমীর গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান। তিনি এ বার জানপ্রাণ লড়িয়ে দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন অন্য তৃণমূল নেতারা। সমীর বলেন, ‘‘এত বড় দায়িত্বে থাকা সত্ত্বেও আমি এ বার নিজের কেন্দ্রেই পড়ে ছিলাম বলা চলে। এই এলাকায় মেরুকরণের যাবতীয় প্রচেষ্টা লোকসভা নির্বাচনে করেছে বিজেপি। কিন্তু আমার হাতিয়ার ছিল মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজ। ফলে, এখানে বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতি দাঁত ফোটাতে পারেনি।"
বিজেপি নেতাদের পাল্টা দাবি, তাঁরা মেরুকরণের রাজনীতি করেন না। তৃণমূল বিজেপির বিরুদ্ধে মেরুকরণ নিয়ে অপপ্রচার করে। দলের নেতা রমেশ সাধুখাঁ বলেন, ‘‘উদয়নারায়ণপুরে তৃণমূল ব্যপক সন্ত্রাস করেছে। নির্বাচনের অনেক আগে থেকে আমাদের কর্মীদের ঘরছাড়া করা হয়েছে। কার্যত ফাঁকা মাঠে খেলেছে তৃণমূল। জয়ের ব্যবধান তো বাড়বেই।’’
সন্ত্রাসের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিধায়ক। মন্ত্রী পুলক রায় বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজের সুফল সবাই পেয়েছেন। সেই কারণে আমরা সব বিধানসভা কেন্দ্রেই ভাল ব্যবধানে বিজেপিকে পিছনে ফেলেছি। বিভাজনের রাজনীতি নয়, উন্নয়নকেই বেছে নিয়েছেন মানুষ।’’