উত্তম বারিক। —ফাইল চিত্র।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেকে 'রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার' বলেন। এ বার লোকসভায় তাঁর দল যে জেলায় সবচেয়ে খারাপ ফল করেছে, সেই পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি কেন্দ্রে তৃণমূলের পরাজিত প্রার্থী উত্তম বারিককেও বাঘ বললেন দলনেত্রী। শনিবার কালীঘাটে দলীয় বৈঠকে মমতার মন্তব্য, ‘‘উত্তম কাঁথিতে বাঘের মতো লড়াই করেছে।’’
তবে, এ দিনের বৈঠকে কাঁথির প্রার্থী এবং সাংগঠনিক পদাধিকারীরা উপস্থিত থাকলেও তাৎপর্যপূর্ণভাবে গরহাজির ছিলেন জেলার আরেক লোকসভা তমলুক কেন্দ্রের প্রার্থী এবং তূণমূলের সাংগঠনিক নেতৃত্ব।
লোকসভা ভোটে রাজ্যে বিপুল সাফল্যের পরে এ দিন দলের জয়ী সাংসদদের নিয়ে কালীঘাটে বৈঠক করেন মমতা। সেখানে ছিলেন কাঁথির পরাজিত প্রার্থী তথা পূর্ব মেদিনীপর জেলা পরিষদের সভাপতি উত্তম বারিক, সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি পীযূষকান্তি পন্ডা, সাংগঠনিক চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক তরুণকুমার মাইতি প্রমুখ। সূত্রের খবর, দলের পরাজিত প্রার্থীদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি পূর্ব মেদিনীপুরের দুই আসনের ভোটের ফল নিয়ে কথা বলেন তৃণমূল নেত্রী।
জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের ভোট নিয়ে সামগ্রিকভাবে হতাশা ব্যক্ত করেছেন মমতা। তবে তিনি একই সঙ্গে বলেছেন, ‘‘কাঁথির প্রার্থী উত্তম বারিক একা সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করেছেন। ওঁকে কেউ সাহায্য করেনি।’’ তমলুক লোকসভার প্রতি আরও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মমতা। জানিয়েছেন, তমলুকের অবস্থা আরও খারাপ। সেখানে প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সব কিছু ভাল বললেও তাঁর প্রচার নিয়ে মমতা অসন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি দাবি করেন, কোনও প্রার্থী ১২টার সময় প্রচার শেষ করে ঘরে ফিরে গেলে যা হওয়ার, তা-ই হয়েছে।
বৈঠকের পরে উত্তম বলেন, ‘‘নেত্রী মন খারাপ করতে না বলেছেন। যে সব জায়গাতে ফলাফল খারাপ হয়েছে সেখানে আগামী দিনে কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ানো হবে তার জন্য দল রণকৌশল ঠিক করবে বলেও নেত্রী জানিয়েছেন।’’
তবে এ দিন তমলুক লোকসভার প্রার্থী কিংবা সাংগঠনিক পদাধিকারীরা কেউই বৈঠকে ছিলেন না। জানা গিয়েছে, পরাজিত প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্য, তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় আর চেয়ারম্যান চিত্ত মাইতিকে প্রথমে বৈঠকে ডাকা হয়েছিল। কিন্তু পরে তাঁদের ‘‘আপাতত আসতে হবে না’ জানানো হয়। দলীয় সূত্রে খবর, তমলুকের ফল নিয়ে আগেই জেলা নেতৃত্বের তরফে রিপোর্ট জমা দেওয়া হয়েছে। তাই এ দিন তাঁদের যেতে না বলা হয়।
জেলা তৃণমূল সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘শনিবার দলেরবৈঠক সম্পর্কে কিছুই জানি না।’’ তবে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান চিত্ত মাইতি মানছেন, ‘‘দলীয়ভাবে রিপোর্ট নেত্রীর কাছে জমা দেওয়া হয়েছিল। তাই প্রথমে ডাকা হলেও এ দিন যেতে না বলা হয়েছে। এ দিন জেলা নেতা কিংবা প্রার্থী কারও মতামতও
নেওয়া হয়নি।’’
কাঁথির ক্ষেত্রে অবশ্য ভিন্ন ছবি। কালীঘাটে বৈঠক শেষে উত্তম-সহ কাঁথির নেতৃত্ব দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলাদা করে বৈঠক করেন বলে খবর।