মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল ও বিজেপির থেকে পিছিয়ে রয়েছে বাম-কংগ্রেস জোট। সিপিএম প্রার্থী জাহানারা খান তাঁর নিজের বুথ তো বটেই, দলের রাজ্য স্তরের মুখ হিসেবে পরিচিত মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়ের বুথেও ভরাডুবি হয়েছে। কেন এই বিপর্যয় তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দলের কর্মীরা।
জামুড়িয়া বিধানসভার কেন্দা পঞ্চায়েতের ২২৫ নম্বর বুথের ভোটার জাহানারা খান। এই বুথে সিপিএম ৪৭, তৃণমূল ২৫০ ও বিজেপি ১৬৮ ভোট পেয়েছে। পঞ্চায়েতে সামগ্রিক ভাবে তৃণমূল জিতেছে। আর কুলটি বিধানসভা কেন্দ্রের ১৩ নম্বর বুথের ভোটার ডিওয়াইএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়। এখানে সিপিএম, তৃণমূল ও বিজেপি যথাক্রমে ৪৬, ২৩৬ ও ৩৪৮টি ভোট পেয়েছে।
সিপিএম কর্মীদের একাংশের মতে, এর থেকে পরিষ্কার তাঁরা এখনও মানুষের সমস্যা নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করতে পারেননি। খনিশ্রমিক অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা লড়াই করলেও, শ্রমজীবীর মন জয় বা বিশ্বাস অর্জন করতে পারেননি। যদিও সিপিএমের রাজ্য সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, “সামগ্রিক ভাবে ভারতের রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতেই ভোট হয়েছে। তাতে প্রমাণ হয়েছে ধর্মের রাজনীতির ভিত্তিতে ভোট হয়নি। তবে এটাও সত্যি রাজনীতিতে ধর্মীয় আবেগ পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। এখন আমাদের সামনে দীর্ঘ লড়াইয়ের প্রস্তুতিটাই মূল লক্ষ্য। কোথায় কত কম ভোট পড়েছে সেটা ভাববার সময় নয়।”
বামেদের ‘হেভিওয়েট’রা যেমন তাঁদের বুথে হেরেছে। তেমনি বিজেপি ও তৃণমূলের ‘হেভিওয়েট’রা অনেক জায়গায় একে অপরের থেকে পিছিয়ে। দেখা যাচ্ছে, বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তিওয়ারির বুথে দল ২৪টি ভোটে হেরেছে। একই ভাবে তৃণমূলের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল পুরসভার মেয়র বিধান উপাধ্যায়, পুরসভার অধ্যক্ষ অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, দলের অন্যতম রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসনের বুথে বিজেপির জয় জয়কার। তবে মন্ত্রী মলয় ঘটক ও বিজেপির আসানসোল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় তাঁদের নিজেদের বুথে দল জিতেছে। তৃণমূলের বিধায়ক হরেরাম সিংহ ও নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর বুথে তৃণমূল জিতেছে।
বিজেপির জেলা সভাপতি বাপ্পার দাবি, “সিপিএম-তৃণমূল আঁতাঁত রাজ্যবাসীর জানা। আসানসোল পুর-এলাকায় ৭৭টি ওয়ার্ডে তৃণমূল হেরেছে। বেশির ভাগ মেয়র পারিষদ তাঁদের ওয়ার্ডে জয় আনতে পারেননি। গ্রামীণ এলাকায় সন্ত্রাস আটকাতে পারিনি বলেই সেখানে তৃণমূলের জয় হয়েছে। তাই গ্রামীণ এলাকায় জোর দেওয়া হবে।” তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ বলেন, “সিপিএম-বিজেপি অশুভ আঁতাঁতে লিপ্ত হয়েও তৃণমূলকে হারাতে পারেনি। সিপিএম প্রার্থীর বুথ প্রমাণ করেছে তাদের পায়ের তলায় কোথাও মাটি নেই।”