বাড়ির খুদে দের সঙ্গে নিয়ে ভোট দিয়ে বাড়ির পথে গরুবাথানে। ছবি দীপঙ্কর ঘটক।
উৎসবের মেজাজে ভোট মিটলেও নিয়ন্ত্রণ ও অস্তিত্ব রক্ষার ভোট দেখলেন দার্জিলিংবাসী। কোনও গোলমাল না হলেও, দিনভর বিভিন্ন এলাকার দখল নিয়ে রাখলেন পাহাড়ের শাসক দল প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার নেতারা। এলাকাভিত্তিক ‘বিশেষ টিম’ গড়ে নিয়ন্ত্রণ রাখার লড়াই চালিয়ে গেলেন ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-প্রধান অনীত থাপা। শুক্রবার দিনভর নিজের ‘খাসতালুক’ কার্শিয়াংয়ে বসে ভোট করালেন অনীত। মিরিক, কালিম্পং, দার্জিলিং ‘রক্ষার’ দায়িত্বে থাকা দলের সদস্যরা দিনভর চেষ্টা চালিয়ে গেলেন পাহাড়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ কায়েম রাখার। বিজেপির জোট-সঙ্গী জিএনএলএফের মন ঘিসিং, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার বিমল গুরুং নিজেদের সাধ্য মতো অস্তিত্ব রক্ষার চেষ্টা করে গেলেও, কোথায় যেন লোকবল কিছুটা কম পড়ায় গত লোকসভার মতো হয়নি পরিস্থিতি। দেখা মিলল না পাহাড়ের ‘বিতর্কিত’ নেতা বিনয় তামাংয়ের।
দুপুরের পরে ভোট চলাকালীন বিজেপি তরফে অভিযোগ, বহু বুথে এজেন্টকে বসতে দেওয়া হয়নি। টাকা দিয়ে ভোট করানো হচ্ছে পাহাড়ে। কার্শিয়াং মহকুমার পাঁচটি বুথে পুনরায় ভোটের দাবিও তোলেন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। তাঁর দাবি, ‘‘এজেন্টদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, বসতে দেওয়া হয়নি। পুলিশের সাহায্যে পাহাড়ের নেতারা টাকা গিয়ে এলাকা দখল করে ভোট কিনেছে। আমরা কমিশনে যাব।’’ ততক্ষণ কার্শিয়াং কমিউনিটি হল লাগোয়া এলাকা থেকে বাজারে চলে এসেছেন প্রজাতান্ত্রিক মোর্চার সভাপতি অনীত। মিরিক, কালিম্পং থেকে ফোন আসার পর মৃদু হাসিও দেখা গেল তাঁর মুখে। বিজেপির পাহাড়-জেলার নেতারা ততক্ষণে কমিশনে অভিযোগ জানানোর প্রস্তুতি নেন, মিরিকের সঙ্গে কালিম্পঙে বিধায়ক রুদেন সাদা লেপচার নেতৃত্বে শাসক দল নিজের মতো ভোট করাচ্ছে। অনীত বললেন, ‘‘একটাও পুলিশ অভিযোগ হয়নি। ওদের লোক নেই, এজেন্ট নেই। টাকা দিয়ে ভোট কি সব সময় হয়!’’
এ দিন বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা, কংগ্রেস প্রার্থী মুনীশ তামাং থেকে শুরু করে তৃণমূল প্রার্খী গোপাল লামা কেউ পাহাড়ে যাননি। সব দলের পাহাড়ের নেতারাই পাহাড় সামাল দেন। বিমল গুরুং সকাল থেকে পাতলেবাসেই ছিলেন। সিংমারির দলীয় দফতর থেকেই ভোটে নজর রাখেন। গুরুং বলেন, ‘‘ছাপ্পা ভোট রোখার জন্য সবাইকে বলেছি। তা-ও কিছু ভোট এ দিক-ও দিক হচ্ছে। কম ভোটে রাজু বিস্তা জিতবেন।’’ হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ড দার্জিলিঙে পরিবারের সঙ্গেই থেকেছেন। তিনি বলেছেন, ‘‘কঠিন সময়ের মধ্যে আমাদের লড়াই করতে হয়েছে।’’