তৃণমূলের উদ্যোগে ভোজের আসর। দাসপুরের বাসুদেবপুরে। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও দুপুরে, কোথাও আবার রাতে। ‘আমন্ত্রিত’রা আসছেন। গল্প-গুজব করছেন। তারপর মাংস-ভাত খেয়ে বাড়ি ফিরছেন।
ভোটের মুখে শাসক তৃণমূলের উদ্যোগে ঘাটাল লোকসভা এলাকার বিভিন্ন গ্রামে চলছে ‘মোরগ-ভাত’ (মুরগির মাংস ও ভাত) কর্মসূচি। ভোটারদের প্রভাবিত করার অভিযোগ তুলে সিপিএম-বিজেপি সরব হলেও তাতে ঝাঁঝ তেমন নেই। কোথাও কোনও অভিযোগও নেই। তৃণমূলের সাফ বক্তব্য, দলীয় বৈঠকে দলের কর্মীরা খাওয়া দাওয়া করবেন, এতে অন্যায় কোথায়!আর কোথাও মাইক ফুঁকে কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ভোটের আগে কর্মীদের মাংস-ভাত খাওয়ানো তো বিজেপি ও সিপিএমের ঘরে হামেশাই দেখা যায়। তৃণমূল খাওয়ালেই কি অন্যায়?
বিজেপির ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি তন্ময় দাস বলেন,“ঘাটালের সাংসদের অবস্থা ভাল নয়। গত দশ বছরের দুর্নীতির কারণে মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই মন পেতে মদ-মাংস খাওয়ানো শুরু করেছে তৃণমূল।” সিপিএম নেতা অশোক সাঁতরারও দাবি, “গ্রামেগঞ্জে প্রকাশ্যে মাংস-ভাত খাওয়ানো হচ্ছে। ভোটারদের প্রভাবিত করা হচ্ছে। আমরা কমিশনে অভিযোগ জানাব।”
পুরসভা, পঞ্চায়েত হোক বা লোকসভা-বিধানসভার ভোট— ভোটারদের নানা ভাবে প্রভাবিত করার কমবেশি অভিযোগ ওঠে সব রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধেই। বিগত ভোটগুলিতে ভোটারদের মন পেতে মদ বিলির ভুরিভুরি অভিযোগও উঠেছিল। এ বারও বেশ কয়েকদিন ধরেই তৃণমূলের তৎপরতায় মূলত তফসিলি জাতি ও জনজাতি এলাকায় চলছে মাসং-ভাত খাওয়ানো। ক’দিন ধরেই ঘাটাল, দাসপুর, চন্দ্রকোনা-সহ বিভিন্ন এলাকায় মোরগ-ভাতের আসর নিয়ে চলছে নানা আলোচনা। আগে গোটা গ্রাম জুড়ে জনসংযোগ কর্মসূচি চলে। নির্দিষ্ট সময়ে হাজির হন দলের কর্মী-সমর্থকরা। সেখানেও ভোট নিয়ে আলোচনা সেরে নেন উপস্থিত সকলেই।তারপর শুরু হয়ে যায় খাওয়াদাওয়া।
বৃহস্পতিবার ঘাটালের ইড়পালায় ওই কর্মসূচিতে প্রায় আড়াইশো মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তৃণমূলের ঘাটাল ব্লক সভাপতি দিলীপ মাজি মানছেন, “ইড়পালায় ওই কর্মসূতেচি ভাল সাড়া পড়েছে। এতে স্থানীয় স্তরে উৎসাহও বাড়ছে।” এ দিনই দাসপরের বাসুদেবপুর গ্রামের কালীতলায় দুপুরে ওই আসরে শ’দুয়েক আমন্ত্রিত হাজির ছিলেন। মাংস-ভাত ছাড়াও মেনুতে ছিল তরকারি, শেষপাতে চাটনিও। সেখানে বাসুদেবপুর ১৩১ এবং ১৩২ নম্বর বুথের মালিক পাড়া, দর্জি পাড়া, দোলই পাড়া,হাঁসদা পাড়া, মান্ডি পাড়া এবং সর্দার পাড়ার লোকজন হাজির ছিলেন। তৃণমূলের ঘাটাল সাংগাঠনিক জেলা সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, “ভোটের আগে দলের কর্মীদের নিয়ে দলীয় বৈঠক। সেখানে খাওয়া দাওয়া তো হবেই। এখন সেটাই চলছে।”