Lok Sabha Election 2024

কিছু বিক্ষিপ্ত গোলমাল, কিছু ইভিএমে বিভ্রাট

সকালে উলুবেড়িয়া হাই স্কুলের ২২১ নম্বর বুথে ইভিএম বিভ্রাট ঘটে। এই বুথের ভোটার ছিলেন বিজেপি প্রার্থী অরুণউদয় পাল চৌধুরী।

Advertisement

নুরুল আবসার

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২১ মে ২০২৪ ১০:২০
Share:

হাসিমুখে ভোট উলুবেড়িয়ার একটি বুথে । ছবি: সুব্রত জানা।

কিছু বিক্ষিপ্ত গোলমাল, কিছু ইভিএম বিভ্রাট ছাড়া সোমবার উলুবেড়িয়ায় ভোট হল শান্তিপূর্ণ ভাবে। সকাল থেকেই বিভিন্ন বুথে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন ছিল। বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে ভোট পড়ে ৭৪.৫০%। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর তৎপরতা ছিল দেখার মতো। বুথে অবাঞ্ছিত ভিড় তারা কড়া হাতে নিয়ন্ত্রণ করে। গোটা লোকসভা কেন্দ্র জুড়ে ঘুরতে দেখা গিয়েছে কুইক রেসপন্স টিমকে।

Advertisement

সকালে উলুবেড়িয়া হাই স্কুলের ২২১ নম্বর বুথে ইভিএম বিভ্রাট ঘটে। এই বুথের ভোটার ছিলেন বিজেপি প্রার্থী অরুণউদয় পাল চৌধুরী। তিনি সকাল সকাল ভোট দিতে যান। লাইনে তিনিই প্রথমে ছিলেন। কিন্তু ইভিএম চালু না হওয়ায় ভোটগ্রহণ শুরু করা যায়নি। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে বিগড়ে যাওয়া ইভিএম ঠিক করা হয়। ক্ষুব্ধ অরুণ অভিযোগ করেন, ‘‘ইচ্ছাকৃত ভাবে এই যন্ত্র বিগড়ে দেওয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল আমাকে এখানে আটকে রাখা। যাতে আমি বুথে বুথে যেতে না পারি।" মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা পুলক রায় পাল্টা বলেন, ‘‘এই ধরনের অভিযোগের কোনও ভিত্তি নেই। নির্বাচন কমিশনের কাছে উনি জানাননি কেন?’’

তবে, শুধু এখানে নয়, উলুবেড়িয়ায় ১৮৬৩টি বুথের মধ্যে ৩৪টি বুথে ইভিএম বিভ্রাট দেখা দেয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ভিভিপ্যাট নিয়ে গোলমাল দেখা দেয়। ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই বিগড়ে যাওয়া ইভিএমগুলি চালু করে দেওয়া হয় বলে জেলা প্রশাসন তথা জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রের খবর।

Advertisement

গোলমাল হয় বাগনানের কাজিরচক প্রাথমিক স্কুলে। পুলিশ জানিয়েছে, সকাল ন’টা নাগাদ এই স্কুলের বুথে তৃণমূল ও বিজেপি সমর্থকদের মধ্যে মারপিটে দু’জন জখম হন। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। জখমদের দলীয় সমর্থক বলে দাবি করে তৃণমূলের গ্রামীণ জেলা সভাপতি তথা বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, "তৃণমূল ও সিপিএম যৌথ ভাবে আমাদের দুই সমর্থকের উপরে হামলা চালিয়েছে।’’ বিজেপি নেতা রমেশ সাধুখাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘তৃণমূলই আমাদের দলের ছেলেদের মারধর করেছে।’’ অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএমও।

পেঁড়োর ঘোড়াদহ প্রাথমিক স্কুলের বুথেও গোলমাল হয়। এখানে কংগ্রেসের এজেন্টকে তৃণমূল বের দেয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেস প্রার্থী আজহার মল্লিক সেই এজেন্টকে বসিয়ে দিয়ে আসেন। ফের তাঁকে তৃণমূল বের করে দেয় বলে অভিযোগ। তাঁকে আবার বুথে ঢোকাতে গেলে গোলমাল হয়। আজহারের অভিযোগ, তাঁকে মারধর করে তৃণমূল। অভিযোগ অস্বীকার করে উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, "হাস্যকর অভিযোগ। কংগ্রেস প্রার্থী যে এখানে আছেন সেটাই জানতাম না।’’

আমতার উদং ফতেপুর প্রাথমিক স্কুলের বুথে এক তৃণমূল কর্মীর মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজি। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই তৃণমূল কর্মী বুথে গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছিলেন। তাই তাঁকে বাহিনী আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

ভোটকে কেন্দ্র করে সাধারণ মানুষ তো বটেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে উৎসাহে যেন কিছুটা ঘাটতি ছিল— এমন কথা শোনা গিয়েছে বহু সাধারণ ভোটারের মুখে। শাসক-বিরোধী কোনও দলের মধ্যেই অন্য ভোটগুলির মতো তৎপরতা বিশেষ দেখা যায়নি। তবে, ভোটাররা তাঁদের দায়িত্ব পালনে সচেতন ছিলেন। মন্ত্রী পুলক বলেন, ‘‘ভোটের সময় বিরোধীরাই ঝড় তোলে। কিন্তু এ বারে বিরোধীদের সে ভাবে রাস্তায় নামতেই দেখা গেল না। মানুষ আমাদের একতরফা ভোট দিয়েছেন।" বিজেপি নেতা রমেশের পাল্টা দাবি, ‘‘বিরোধীদের পক্ষে মানুষ নিঃশব্দে রায় দিয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement