সভাস্থলে মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র।
তাপপ্রবাহের লাল সতর্কতা জারি করছে প্রশাসন। তার মাঝেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভা পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে। ফলে সভাস্থলে পর্যাপ্ত জলের জোগান থাকছে। জলের পাউচ আনা হচ্ছে পড়শি রাজ্য ওড়িশা থেকে। বুধবার খড়্গপুরে পৌঁছে দলীয় নেতাদের কাছ থেকে সভা সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। খড়্গপুরে থেকেই দু’দিনে একাধিক কর্মসূচি সারবেন তিনি।
আজ, বৃহস্পতিবার দুপুর একটায় মুখ্যমন্ত্রী সভাস্থলে পৌঁছবেন। তবে তার আগে এগারোটা থেকেই মানুষ আসতে শুরু করবেন। তখন তাপমাত্রা থাকতে পারে ৪২-৪৩ ডিগ্রির আশেপাশে। তৃণমূল জানাচ্ছে, তাপপ্রবাহকে উপেক্ষা করে বহু মানুষ আসবেন। লক্ষ্যমাত্রা বাঁধা হয়েছে ৪০-৪৫ হাজার। তবে সে ক্ষেত্রে জলের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা, মাথার ওপর ছাউনি থাকছে। চারপাশ খোলা থাকছে। বাতাস যাতে চালাচল করতে পাশে সে দিকে নজর দেওয়া হয়েছে। খড়্গপুর পুরসভা থেকে পাঁচটি নিয়ে মোট ছয়টি জলের ট্যাঙ্ক থাকছে। পর্যাপ্ত জলের পাউচের ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। তৃণমূল সূত্রে খবর, পিএইচইর কাছ থেকে জলের পাউচ পাওয়া যায়নি (সম্ভবত নির্বাচনী আচরণবিধির জন্য)। তাই ওড়িশা থেকে তিরিশ হাজার জলের পাউচ আনা হচ্ছে। থাকবে ১০টি এয়ার কুলার। থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স-সহ মেডিকেল টিম।
সভাস্থলের পাশেই করা হয়েছে হেলিপ্যাড। এ দিন সভাস্থল পরিদর্শন করেন মন্ত্রী মানসরঞ্জন ভুঁইয়া, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা, বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র প্রধান, পরেশ মুর্মু প্রমুখ। মানস বলেন,"তিনি ভারতবর্ষের একজন মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। তার জীবনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অভিষেককে মারার চক্রান্ত হচ্ছে। পেরে উঠছে না বিরোধীরা।" গরমে সভার ক্ষেত্রে কী সতর্কতা নেওয়া হয়েছে? বিধায়ক বিক্রমচন্দ্র বলেন,"পুরো সভায় মাথার ওপর আচ্ছাদন থাকছে। পর্যাপ্ত জলের ব্যবস্থা ও এয়ার কুলার থাকছে।" গরমের মধ্যে দুপুরে সভা নিয়ে কটাক্ষ করছে বিজেপি। বিজেপির জেলা সহ সভাপতি অরূপ দাস বলেন, "তিনি তো এই জেলাকে সেকেন্ড হোম করেছেন। তাই ঘন ঘন আসতে হচ্ছে। আসলে দেওয়ালের লেখা পড়া হয়ে গিয়েছে।"
এ দিন বিকেলে খড়্গপুর শহরের উপকণ্ঠে খড়্গপুর গ্রামীণের রূপনারায়ণপুরে পৌঁছন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দু’দিন এই রূপনারায়ণপুরের একটি হোটেলেই থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী। জাতীয় সড়কের ধারে ওই হোটেল সংলগ্ন এলাকাতেই হেলিপ্যাড গড়া হয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে নামার পরে তাঁকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী মানস, তৃণমূলের রাজ্য নেতা প্রদ্যোত ঘোষ, প্রার্থী জুন মালিয়া, তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুজয়, আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি গোপাল খাটুয়া। তবে প্রতিবার জেলায় মুখ্যমন্ত্রী এলে বিধায়ক তথা জেলা নেতা অজিত মাইতিকে দেখা যায়। এ দিন অজিতকে দেখা যায়নি। কেন গেলেন না? অজিত বলেন, “ওখানে যাইনি। আসলে পিংলার সভার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত রয়েছি। পিংলায় একটা বৈঠকও করলাম।”
হেলিকপ্টার থেকে নেমে মিনিট খানেক মানস, প্রদ্যোত, সুজয়ের সঙ্গে কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তৃণমূলের রাজ্য নেতা প্রদ্যোত ঘোষ বলেন, “ দিদি হেলিকপ্টার থেকে নেমে কিছুক্ষণ ওই দাঁতনের সভা নিয়েই কথা বললেন। দুপুরে সভা তাই ছাউনি আছে কি না জানতে চাইছিলেন। ভিড় কেমন হবে সেটাও জানলেন। সভায় সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছি আমরা।” হেলিপ্যাড ছেড়ে গাড়িতে উঠে হোটেলের উদ্দেশে রওনা দেন মুখ্যমন্ত্রী।