রানাঘাটের তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর হয়ে প্রচারে মমতা বন্দোপাধ্যায়। শনিবার চাকদহে। ছবি: প্রণব দেবনাথ।
রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে বাংলার শাড়ির দোকান খুলবেন বলে তন্তুবায় অধ্যুষিত দক্ষিণ নদিয়ায় গিয়ে ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শনিবার রানাঘাট ও বনগাঁ কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে বীরনগরে জনসভা করতে গিয়ে মমতা বলেন, “আমি যে শাড়িটা পরে মিটিং করছি, এটা কিন্তু শান্তিপুরের শাড়ি। আমি যত ডিজ়াইন বানাই আর বানিয়ে তৈরি করতে দিই এখানে। ধনেখালিতেও কিছুটা দিই।” চাকদহের জনসভায় তিনি বলেন, “তাঁতিদের জন্য 'তাঁত সাথী' প্রকল্প হয়েছে। আমি তো ঠিক করেছি, রাজ্যের সব ব্লকে একটা করে বাংলার শাড়ির দোকান খুলব। তাঁতিদের হাতে গড়া শাড়ি সেখানে বিক্রি হবে। যদি কেউ ফ্র্যাঞ্চাইসি নিতে চান, আমার আপত্তি নেই।”
গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই বিজেপির শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত দক্ষিণ নদিয়ায় এক দিকে যেমন মতুয়া ও নমঃশূদ্রদের প্রতি বার্তা দিতে চেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী, অন্য দিকে অন্যতম বিপণনযোগ্য পণ্য তাঁতশিল্পের উপরে জোর দিয়েছেন। ঘটনাচক্রে, রানাঘাট কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভার মধ্যে যে দু’টি বর্তমানে তৃণমূলের হাতে আছে সেই শান্তিপুর ও নবদ্বীপই বেশি করে তাঁতশিল্পী-অধ্যুষিত। মমতা এ দিন বলেন, “আপনাদের এখানে অনেক বিখ্যাত শাড়ির দোকান আছে। চারদিকে তাঁতিদের রমরমা। শান্তিপুরের শাড়ি, আপনাদের তাঁতের শাড়ি।” ফুলিয়ায় রাজ্যে প্রথম ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব হ্যান্ডলুম টেকনোলজি, কৃষ্ণনগরে মসলিন তীর্থ ও সরতীর্থ, নবদ্বীপের ধাত্রীগ্রামে তাঁতের হাট তৈরি করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
নবদ্বীপ ও শান্তিপুর বাদে রানাঘাট উত্তর-পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্রেও বেশ কিছু তন্তুবায় রয়েছেন। এই সমস্ত জায়গায় তাঁতশিল্পীরা যেমন ভোটে নির্ণায়ক ভূমিকা নেন, রানাঘাট কেন্দ্রের অন্যান্য অংশে এবং বনগাঁয় মতুয়া ভোটই অন্যতম নির্ণায়ক শক্তি। শুক্রবার নদিয়ায় এসে নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছিলেন, তাঁরা সিএএ মারফত উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার চেষ্টা করলেও তৃণমূল বিরোধিতা করছে। মমতার দাবি, “গত বার মিথ্যা কথা বলে বিজেপি বনগাঁ ও রানাঘাট জিতেছিল। বলেছিল, মতুয়া ভাইবোনেদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে।” তিনি বলেন, “আপনারা তো নাগরিক। আপনাদের ভোটে যদি নরেন্দ্র মোদী জিততে পারেন, আমরা জিততে পারি, তার মানে আপনাদের ভোটাধিকার রয়েছে। নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হবে কেন?” দুই সভার শেষেই মঞ্চে মতুয়াদের নৃত্যগীত হয়। চাকদহে তৃণমূল প্রার্থী মুকুটমণি অধিকারীর সঙ্গে ছিলেন মমতাবালা ঠাকৃুর। বীরনগরে মুকুটই ডঙ্কা বাজান।