অমিত শাহের সঙ্গে জেপি নাড্ডা। —ফাইল চিত্র।
নরেন্দ্র মোদীর পর এ বার নদিয়ায় নির্বাচনী জনসভা করতে আসছেন বিজেপির দুই সর্বোচ্চ স্তরের নেতা। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী রবিবার রানাঘাট কেন্দ্রে জনসভা করবেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা। মঙ্গলবার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে আসছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৃহস্পতিবার সকালে দলের তরফে এই বার্তা পাওয়ার পরে জেলার নেতারা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন।
প্রথম দফায় প্রচার সফরের দ্বিতীয় দিলেই কৃষ্ণনগরে এসে জনসভা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে অমিত শাহের মায়াপুরে আসার কথা থাকলেও একাধিক বার তা বাতিল হয়ে যায়। সেগুলি অবশ্য নির্বাচনী কর্মসূচি ছিল না। মহুয়া মৈত্রের কেন্দ্রে প্রচার চালাতে মোদীর পরে শাহ যে আসতে পারেন, এমন জল্পনা রাজনৈতিক মহলে ছিলই। সংসদে ‘ঘুষের বিনিময়ে প্রশ্ন’ তোলার অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছিল কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়াকে। মোদী-ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি আদানিকে নিয়ে সংসদে লাগাতার প্রশ্ন তোলার কারণেই তাঁকে নিশানা করা হয়েছে বলে মহুয়ার দাবি। ঘটনাচক্রে, যাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছিল, সেই আইনজীবী জয় অনন্ত দেহদ্রাই বৃহস্পতিবারই মহুয়ার বিরুদ্ধে ২ কোটি টাকার মানহানির মামলা কার্যত নিঃশর্তে প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
এই পরিস্থিতিতে কৃষ্ণনগর কেন্দ্র বিজেপি এবং তৃণমূল দুই পক্ষের কাছেই ‘মর্যাদার লড়াই’ হয়ে দাঁড়িয়েছে। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের পরিবারের সদস্য অমৃতা রায়কে প্রার্থী করে টক্কর দিতে মাঠে নেমেছে বিজেপি। তাঁকে হারাতে মোদী-শাহের মতো বিজেপির মহারথীরা আসবেন, এমন ইঙ্গিত দিয়ে আগেই কটাক্ষ করেছিলেন মহুয়া। ফলে সব মিলিয়ে শাহের আসা অনেকটা প্রত্যাশিতই ছিল। তবে তিনি এই কেন্দ্রের কোথায় আসছেন, কী তাঁর কর্মসূচি তা রাত পর্যন্ত বিজেপির জেলা নেতাদের কাছে স্পষ্ট হয়নি। তাঁদের প্রাথমিক ধারণা, কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠেই জনসভার আয়োজন হতে পারে। বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অর্জুন বিশ্বাস বলেন, “আগামী ৩০ এপ্রিল অমিত শাহ আসছেন বলে জানানো হয়েছে। তবে তাঁর কর্মসূচি নিয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয় নি। কর্মসূচি হাতে পেলেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাবে।”
জে পি নড্ডার কর্মসূচি অবশ্য ইতিমধ্যে পরিষ্কার। বিজেপি সূত্রের খবর, আগামী ২৮ এপ্রিল দুপুর ১২টায় বগুলা আইটিআই কলেজ মাঠে জনসভা করবেন নড্ডা। প্রথমে ২৭ এপ্রিল জনসভা করার কথা বলা হলেও পরে দিন বদলানো হয়। সেই সভায় শুধুমাত্র রানাঘাট কেন্দ্র থেকে হাজার তিরিশেক লোক নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। যদিও ওই কলেজ মাঠে বড় জোর হাজার বিশেক লোক ধরে। গত বিধানসভা ভোটের আগে এই মাঠেই জনসভা করে গিয়েছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী। বিজেপির নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আমরা চেষ্টা করব, রাস্তার ধারের আড়ালগুলো সরিয়ে দিতে। জায়ান্ট স্ক্রিনেরও ব্যবস্থা করা হবে। গোটা বিষয়টি নিয়ে রাতেই আমরা আলোচনায় বসছি।” আইটিআই কলেজের পাশের মাঠে হেলিপ্যাড তৈরি করা হবে বলে জানা গিয়েছে।