—প্রতীকী চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ লগ্নের হিসাব-নিকাশ করছে সব দলই। তাতে একটা ছবি স্পষ্ট, পঞ্চায়েত ভোটে যেখানেই বামেদের ভোট বেড়েছে, সেই সমস্ত এলাকায় প্রায় একই হারে ভোট কমেছে বিজেপির। গত বিধানসভা ভোট পর্যন্ত প্রবণতা ছিল ঠিক এর উল্টো। কিন্তু পঞ্চায়েত ভোট থেকে বাম-কংগ্রেস ফের মাথা তুলতে শুরু করেছে। তবে এই ওঠা-পড়ার বাজারে তৃণমূল বেশির ভাগ জায়গাতেই নিজের ভোট ধরে
রাখতে পেরেছে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশের ধারণা, তৃণমূল বিরোধিতার দরুণ বা তাদের হাত থেকে ‘বাঁচতে’ ভোটারদের একাংশ বিজেপির শিবিরে আশ্রয় খুঁজছিল।
বামেরা কিছুটা চাঙ্গা হতেই তাদের একাংশ ফিরতে শুরু করেছে। অঙ্কের হিসাব সামনে রেখে তৃণমূল ক্রমাগত দাবি করছে, বামেদের ভোট বাড়লে তাদের চিন্তার কোনও কারণ নেই। কারণ বিজেপিকর ভোট ভেঙেই সিপিএমে আসছে। অর্থাৎ বামেদের ভোট বাড়লে তাদের জয় বরং আরও নিশ্চিত হয়।
তবে এই প্রবণতা সংখ্যালঘু এলাকায় বেশি কেন, তবে কি সংখ্যালঘুদের একাংশও বিজেপিকে ভোট দিয়েছিলেন— সেই প্রশ্নও উঠছে। কৃষ্ণনগর কেন্দ্রের অন্তর্গত সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে চাপড়া, পলাশিপাড়া, কালীগঞ্জ ও নাকাশিপাড়া মূলত সংখ্যালঘু প্রভাবিত। মূলত এই চারটি কেন্দ্রের লিডের উপর ভিত্তি করেই ২০১৯ সালে জয়ের মুখ দেখেছিল তৃণমূল। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে এই চার কেন্দ্রেই তারা সহজ জয় পায়। কিন্তু মিশ্র এলাকা বলে পরিচিত কৃষ্ণনগর দক্ষিণ ও তেহট্ট কেন্দ্রে তাদের জিততে বেশ বেগ পেতে হয়েছিল। এই দুই মিশ্র এলাকায় কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের ভোট অনেকটাই বেড়েছে। এই ধাঁধার সমাধান করার চেষ্টা করছে সব দলই।
সিপিএমের নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য সুমিত বিশ্বাসের দাবি, “যারা তৃণমূলের অত্যাচারের হাত থেকে মুক্তি পেতে বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল, তারা বুঝতে পেরেছে যে বিজেপি ও তৃণমূল আসলে একই। সেই কারণেই তারা বামেদের কাছে ফিরে আসছে।”
প্রায় একই ব্যাখ্যা দিচ্ছেন তৃণমূল নেতারাও। তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান রুকবানুর রহমানের মতে, “বামেরা যে ভোট রামকে চালান করেছিল তা যে কোনও কারণেই হোক আবার তাদের দিকে ফিরছে। সংখ্যালঘুদেরও কিছু অংশ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল বলে এখন মনে হচ্ছে।”
তবে বিজেপির দাবি পুরো উল্টো। বিজেপির কিসান মোর্চার রাজ্য সভাপতি মহাদেব সরকার বলছেন, “বিজেপি ক্ষমতায় আসছে বুঝতে পেরে তৃণমূল সিপিএমকে চাঙ্গা করে সামনে তুলে আনার চেষ্টা করছে। কিন্তু লোকসভা ভোটে ওরা সেটা
পারবে না।”