ব্রাত্য বসু।
সংখ্যালঘুদের ভোট যেন কংগ্রেসে না যায়, সে ব্যাপারে দলীয় কর্মীদের সতর্ক করলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। রবিবার সন্ধ্যায় রামপুরহাট পুরসভার নেতাজি মুক্ত মঞ্চে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়ের সমর্থনে এক সভায় দলীয় কর্মীদের তিনি বলেন, ‘‘সংখ্যালঘুদের ভোট তৃণমূলে জুড়তে হবে। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া এবং সিএএ-এনআরসি করতে দেওয়া।’’ এ বিষয়ে কর্মীদের সতর্ক থাকার বার্তাও দেন শিক্ষামন্ত্রী।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বারবার মালদহের সুজাপুরের জনসভায় সংখ্যালঘুদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘‘ভোট কাটাকাটির জন্য যদি বিজেপি জিতে যায়, ক্ষতি কিন্তু শেষ পর্যন্ত আপনাদেরই। এটা মনে রাখবেন।’’ সোমবার মুর্শিদাবাদের সভা থেকেও একই কথা বলেছেন মমতা। সেই একই বার্তা দিয়েছেন ব্রাত্য বাসুও।
মালদহ, মুর্শিদাবাদের মতো এই জেলাতেও সংখ্যালঘু ভোট গুরুত্বপূর্ণ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায়, বিশেষ করে রামপুরহাট মহকুমা এলাকায় সংখ্যালঘু অধ্যুষিত বহু এলাকায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পেরেছিল সিপিএম এবং কংগ্রেস। বীরভূম জেলা পরিষদের একমাত্র বিরোধী সদস্য নলহাটি ২ ব্লক থেকেই বাম-কংগ্রেস জোট গড়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আবার বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের ৭টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে মুরারই, নলহাটি ও হাঁসন—এই তিন কেন্দ্রে সব থেকে বেশি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বসবাস। এই তিন বিধানসভা এলাকাতেই গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে সংখ্যালঘু ভোটে থাবা বসিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। লোকসভা নির্বাচনেও বামেদের সমর্থনে কংগ্রেস প্রার্থী হয়েছেন দলের জেলা সভাপতি মিল্টন রশিদ। সে কারণেই তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট নিয়ে বেশি চিন্তা বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন। শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যেও কিছুটা উদ্বেগ শোনা গিয়েছে। প্রতিক্রিয়ায় মিল্টন রশিদ কটাক্ষের সুরে বলেন, ‘‘বাম-কংগ্রেসের অস্তিত্ব নিয়ে ওদের নেতাদের মাঝেমধ্যে দূরবীণ ধরতে হয় বলে শুনেছি। তা হলে লোকসভা নির্বাচনে বাম-কংগ্রেসের ভোট নিয়ে এত চিন্তা করছে কেন তৃণমূল?’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব বর্মণ বলেন, ‘‘তৃণমূলের সর্বাত্মক দুর্নীতির বিরুদ্ধে মানুষ এ বার গর্জে উঠেছে। তাই শুধু সংখ্যালঘু নয়, সমস্ত স্তরের মানুষই ওদের এ বার বিসর্জন দিতে প্রস্তুত।’’