আগামী বরিবার পুরুলিয়া মফসসলের গেঙ্গেড়ায় রাজনৈতিক সভা করার কথা প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর.তার আগে জোর কদমে চলছে পেন্ডেল তৈরির কাজ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আসা রুখতেই একই দিনে পুরুলিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের কর্মসূচি রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলল বিজেপি। অভিযোগ অস্বীকার করে ওই কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত বলে দাবি তৃণমূলের।
আগামী রবিবার পুরুলিয়ার গেঙ্গাড়া ময়দানে জ্যোতির্ময় সিং মাহাতোর সমর্থনে সভা করার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর। শহর থেকে কম-বেশি সাত কিলোমিটার দূরে সভাস্থল ভরাতে গোটা জেলা থেকে কর্মী-সমর্থকদের আনার প্রস্তুতি চলছে। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গা বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর সভায় দেড় লক্ষ মানুষের জমায়েতের লক্ষ্যমাত্রা আমরা নিয়েছি। কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে সাধারণের মধ্যেও সভাকে ঘিরে ব্যাপক উন্মাদনা তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমাদের সভায় লোকজনের আসা আটকাতে মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রার কথা বলে বেশির ভাগ বাসই নিয়ে নিয়েছে তৃণমূল।”
হুড়ার বাসিন্দা দলের জেলা সম্পাদক আব্দুল আলিম আনসারিও বলেন, “হুড়ার দশটি পঞ্চায়েত থেকে অনেক মানুষ সভায় যেতে চাইছেন। সেই নিরিখে আমরা বাস পাচ্ছি না। তবে বাস না পেলেও ছোট গাড়ি, মোটরবাইকে মানুষ সভায় যাবেন।”
বিজেপির অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রীর সভা নিয়ে তৃণমূল শঙ্কিত। তাই ওই দিনে মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রার কর্মসূচি রাখা হয়েছে। বিবেকের দাবি, “২০১৯-এ মোদীজির সভা উপচে পড়েছিল। সেই সভার নিরিখে মুখ্যমন্ত্রীর সভা ফ্লপ হয়েছিল। পুরুলিয়া কার দখলে যাচ্ছে, তখনই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এ বারে প্রধানমন্ত্রীর সভা হবে বলে আমরা আগে ঘোষণা করেছিলাম। পরে শুনলাম সে দিনই মুখ্যমন্ত্রী পুরুলিয়া শহরে পদযাত্রা করবেন। প্রধানমন্ত্রীর সভা হলে ফের মুখ্যমন্ত্রীর সভা ফ্লপ হবে বলে এ বার আর তিনি সভা করছেন না।”
তৃণমূলের জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর পদযাত্রার কর্মসূচি পূর্ব নির্ধারিত।” তাঁর পাল্টা কটাক্ষ, “একশো দিনের কাজ করেও শ্রমিকেরা টানা দু’বছর পারিশ্রমিক পাননি। আবাস প্রকল্পে উপভোক্তাদের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে কারণেই সভায় লোক হবে না বুঝে আগাম অজুহাত তৈরি করছে বিজেপি।” তৃণমূলের পুরুলিয়া লোকসভার পর্যবেক্ষক তন্ময় ঘোষের দাবি, ‘‘মানুষ প্রধানমন্ত্রীর মিথ্যা ভাষণ আর শুনতে চান না।’’
মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পদযাত্রায় শামিল হতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কম-বেশি তিরিশ হাজার কর্মী শহরে আসতে চাইছেন জানিয়ে সৌমেনের দাবি, “কর্মীদের আনার জন্য যত বাস প্রয়োজন, তত বাসই আমরা নিয়েছি।” পুরুলিয়া বাসমালিক সংগঠনের এক সদস্যের দাবি, ভোটের জন্য বেশ কিছু বাস পুলিশ-প্রশাসন ইতিমধ্যে নিয়েছে। কিছু বাস পেতে বিজেপি ও তৃণমূল একই সঙ্গে দাবি জানিয়েছে। এ নিয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
রবিবারই ওন্দার নিকুঞ্জপুরে সভা প্রধানমন্ত্রীর। তৃণমূল সূত্রে খবর, ওই দিন বাঁকুড়া শহরেও পদযাত্রা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। শহরের কলেজ মোড় এলাকা থেকে লালবাজার হিন্দু স্কুল মাঠ পর্যন্ত পদযাত্রা হওয়ার কথা।