Lok Sabha Election 2024

আনিসুরের জেল নিয়ে শুভেন্দুকে আক্রমণ, সরব বিরোধীরা

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে মমতার এই দাবি নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ০৯:১০
Share:

কুরবান শা।—ফাইল চিত্র।

জেলা সফরে এসে আগেও শোনা গিয়েছিল দলের নেতার খুনের অভিযুক্তের পক্ষে সওয়াল করতে। সেই ছবির পুনরাবৃত্তি হল বৃহস্পতিবার। মহিষাদলের রাজ ময়দানে ভোটের প্রচার সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করলেন, মাইশোরার তৃণমূল নেতা কুরবান শা হত্যা মামলার মূল অভিযুক্ত আনিসুর রহমানের জেলে থাকার পিছনে ‘গদ্দার’ শুভেন্দু অধিকারীর হাত রয়েছে।

Advertisement

বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করতে গিয়ে মমতার এই দাবি নিয়ে জলঘোলা হচ্ছে। বিরোধী বিজেপি নেতৃত্ব জানাচ্ছেন, আনিসুরকে তো কেন্দ্রীয় সংস্থা ইডি, এনআইএ বা সিবিআই গ্রেফতার করেনি। করেছে রাজ্য পুলিশ। যে পুলিশের মন্ত্রী খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তা হলে শুভেন্দুর চক্রান্তে আনিসুর কীভাবে জেল বন্দি থাকছে, সে নিয়ে প্রশ্ন করছে বিজেপি।

তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে বৃহস্পতিবার মহিষাদলে সভা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে নন্দীগ্রাম আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, ‘‘সিপিএমের গুন্ডাবাহিনী সেদিন আমায় কোলাঘাটে আটকে দিয়েছিল। পরের দিন সকাল ১০টা নাগাদ আমি আনিসুরকে ডেকে পাঠাই। আনিসুর পাঁশকুড়ার ছেলে, যে এখন জেলে। এখানকার গদ্দারটার জন্য। আনিসুরের মোটরবাইকে চেপে গ্রামের রাস্তা ধরে আমি তমলুক হাসপাতালে পৌঁছেছিলাম।’’

Advertisement

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হন পাঁশকুড়া-১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি কুরবান শা। ওই হত্যা মামলায় আনিসুর রহমান-সহ আটজনকে গ্রেফতার করে পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট। সে সময় আনিসুর বিজেপিতে। জেল বন্দি অবস্থায় আনিসুর বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা ঘোষণা করেন। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে রাজ্য সরকার ৩২১ নম্বর ধারা প্রয়োগ করে কুরবান হত্যা মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়ার সুপারিশ করে। নিম্ন আদালত সেই নির্দেশ কার্যকর করে। পরে কলকাতা হাই কোর্ট রাজ্য সরকারের ৩২১ ধারার সুপারিশ বাতিল করে দেয়। আপাতত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে কুরবান হত্যা মামলা তমলুক আদালত থেকে কলকাতা নগর ও দায়রা আদালতে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্টের নজরদারিতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ প্রক্রিয়া চলছে। আর জামিন মঞ্জুর না হওয়ায় আনিসুর জেলে বন্দি।

এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে জেলা সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রীকে আনিসুরের হয়ে সওয়াল করতে শোনা গিয়েছিল। এ দিন ফের মুখ্যমন্ত্রীর ওই মন্তব্যে ভোটের আগে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। বিভিন্ন দুর্নীতি কাণ্ডে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের এক ঝাঁক নেতা-মন্ত্রী। এই সমস্ত ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার সঙ্গে বিজেপির আঁতাতের অভিযোগ তুলে সরব তৃণমূল। যদিও এ দিন মমতার মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপির দাবি, কুরবান হত্যা কাণ্ডে আনিসুরকে তো ইডি বা সিবিআই গ্রেফতার করেনি। তাহলে এক্ষেত্রে মমতা শুভেন্দুর ছায়া দেখেছেন কেন?

পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইত বলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের পুলিশ আনিসুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে। আনিসুর কেন জেলে তার উত্তর ওঁকেই দিতে হবে। আনিসুর দোষী না নির্দোষ, সেটা আদালতে প্রমাণিত হবে। তার আগেই মুখ্যমন্ত্রীর এই সাফাই প্রমাণ করে উনি খুনিদের পক্ষে।’’ যদিও তৃণমূলের তমলুক জেলার সভাপতি অসিত বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির দাবি প্রসঙ্গে বলছেন, ‘‘কুরবান শা যখন খুন হন শুভেন্দু অধিকারী তখন রাজ্যের মন্ত্রী। উনি সব কিছু নিজের নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন। ওঁর অঙ্গুলি হেলনেই আনিসুর গ্রেফতার হয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রী সেটাই বলতে চেয়েছেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement