অন্ডাল থেকে আসানসোলে যাওয়ার পরে সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিকে ঘিরে উচ্ছ্বাস বিজেপি কর্মীদের। নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় দেখা না পাওয়া, প্রয়োজনের সময়ে পাশে না পাওয়ার মতো নানা অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে প্রায়ই তুলেছে বিরোধীরা। আসানসোলে দল তাঁকে প্রার্থী করার পরে এলাকায় পৌঁছেই বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিদায়ী বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া দাবি করলেন, শুধু নিজের তহবিল নয়, তিনি কাজ করেছেন তাঁর সংসদের আগের সিপিএম ও তৃণমূল সাংসদের পড়ে থাকা তহবিল দিয়েও।
দল তাঁকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পরে বৃহস্পতিবার দিল্লি থেকে বিমানে অন্ডালে আসেন সুরেন্দ্র। তিনি দাবি করেন, এক জন যাযাবরের নিজের জন্মভূমিতে ফিরলে যেমন হয়, আসানসোলে দল তাঁকে প্রার্থী করায় তাঁরও তেমন অনুভূতি হচ্ছে। এ দিন তাঁকে বিমানবন্দরে স্বাগত জানান বিজেপির আসানসোল জেলা সভাপতি বাপ্পাদিত্য চট্টোপাধ্যায়, কুলটির বিধায়ক অজয় পোদ্দার-সহ কর্মী-সমর্থকেরা। সুরেন্দ্র বলেন, ‘‘জীবনে বিভিন্ন জায়গা থেকে সাংসদ হয়েছি। এ বার নিজের জন্মভূমি আসানসোলের জনতার রায় নিতে এসেছি।’’ তৃণমূলের ‘দুর্নীতি’, মহিলাদের অপমানের বিরুদ্ধে লড়াই বলেও জানান তিনি। তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিন্হার উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘রাজনীতিতে জনগণের আওয়াজ শুনতে হয়। তাঁদের ‘খামোশ’ যাঁরা করবে, তাঁদের চিরকালের জন্য ‘খামোশ’ করে দেবে জনগণ।’’ তৃণমূলের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর পাল্টা বক্তব্য, ‘‘কে কাকে ‘খামোশ’ করে, সেটা ভোটের ফলেই টের পাবেন উনি।’’
ইতিমধ্যে সমাজ মাধ্যমে তৃণমূলের তরফে সুরেন্দ্রকে কটাক্ষ করে প্রচার চলছে, ‘নিখোঁজ’ সাংসদ এ বার আসানসোলের প্রার্থী! সুরেন্দ্রর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমি যখন দার্জিলিং থেকে এসেছিলাম, তখনও এমন পোস্টার পড়েছিল। কিন্তু তার উত্তর জনগণ দিয়েছিল। এ বার আবার দেবে।’’ রাজ্যে সবচেয়ে বেশি সাংসদ তহবিলের অর্থ তিনি খরচ করেছেন বলেও দাবি করেন সুরেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘আমার সাংসদ তহবিলের ১৭ কোটি টাকা ছাড়াও, আগের দু’জন লোকসভার সাংসদ, সিপিএমের সাইদুল হক ও তৃণমূলের মমতাজ সঙ্ঘমিতার মোট ৪ কোটি ২২ লক্ষ টাকার কাজ করেছি।’’
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের দাবি, ‘‘আমাদের তৎকালীন সাংসদ, বিধায়কের উন্নয়ন তহবিলের টাকা খরচ করতে দেয়নি তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা এবং এডিডিএ। অথচ, বিজেপি সাংসদ বলছেন, নিজের তো বটেই সাইদুল হকের টাকাও খরচ করেছেন! তৃণমূলের সহযোগিতা ছাড়া এটা হয় না। বিজেপি ও তৃণমূল যে একই মুদ্রার দুই পিঠ, ফের তা প্রমাণ হল।’’
তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘সাংসদ ও বিধায়ক তহবিলের টাকা খরচের নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। নির্বাচন আসছে বলে হঠাৎ সিপিএম ভিত্তিহীন অভিযোগ করতে শুরু করেছে। বিজেপি সাংসদকে তো পাঁচ বছর ধরে এলাকার মানুষ দেখতেই পাননি। তিনি আবার কী উন্নয়নের কাজ করবেন? মানুষ জানেন, কারা প্রকৃত উন্নয়ন করছে, কারা তাঁদের পাশে আছে।’’