চুঁচুড়ায় জেলাশাসকের দফতরের বাইরে মায়ের সঙ্গে মিতালি। (বাঁ দিকে)। মনোনয়ন জমা দিচ্ছেন শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বসু। নিজস্ব চিত্র।
রোদের তেজ উপেক্ষা করে সোমবার তৃণমূল ও বিজেপি কর্মীদের ঢল নামল হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া শহরে। উপলক্ষ— লোকসভা ভোটের মনোনয়ন দাখিল। রোড শো করে প্রশাসনিক দফতরে এলেন হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর বসু। আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী মিতালি বাগ পদযাত্রা করে মনোনয়ন জমা দিতে যান। প্রশাসনিক কার্যালয়ে ঢোকার আগে তিনি আবেগে মাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেলেন।
চুঁচুড়ার খাদিনা মোড় থেকে রোড শো করেন রচনা। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না-সহ দলের একাধিক বিধায়ক। রচনা ছিলেন হুডখোলা গাড়িতে। তাঁকে দেখতে রাস্তার দু’ধারে ভিড় হয়। জেলাশাসক মুক্তা আর্যের হাতে তিনি মনোনয়নপত্র তুলে দেন। রচনা জানান, এ দিন তাঁর সঙ্গে স্বামী প্রবালকুমার বসু এবং অনেক বন্ধুবান্ধব এসেছিলেন। তবে তাঁরা প্রশাসনিক কার্যালয়ে ঢোকেননি। রচনা বলেন, ‘‘প্রচারে বহু মানুষের ভালবাসা পাচ্ছি। এখন শুধু ৪ জুনের জন্য অপেক্ষা।’’
মিতালি মনোনয়নপত্র জমা দেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) অমৃতেন্দু পালের হাতে। চুঁচুড়া বাস স্ট্যান্ড থেকে পদযাত্রায় তাঁর সঙ্গে ছিলেন মা সন্ধ্যা বাগ। ছিলেন তারকেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক তথা দলের আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি রামেন্দু সিংহরায় এবং হরিপালের বিধায়ক করবী মান্না। সংবাদমাধ্যমকে মিতালি জানান, তাঁর রাজনৈতিক পথপ্রদর্শক তাঁর বাবা। ২০১৬ সালে বাবা মারা যাওয়ার পরে মা সংসারের হাল ধরেন। মা সব সময় তাঁর সঙ্গে আছেন। প্রচারেও বেরিয়েছেন।
মিতালির দাবি, ‘‘আরামবাগে তৃণমূলই জিতবে।’’ দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে রীতিমতো চর্চা থাকলেও তাতে আমল দিতে চাননি তিনি। তাঁর বক্তব্য, প্রচারে দলের সব কর্মীই শামিল হচ্ছেন। মেয়ের জয় নিয়ে আশাবাদী সন্ধ্যাও।
শুক্রবার মনোনয়নপত্র দাখিলের আগে উত্তরপাড়ার কলেজ মোড় থেকে জিটি রোড ধরে চাঁপদানি পর্যন্ত রোড শো করেছিলেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার একই পথে রোড শো করেন বিজেপি প্রার্থী কবীরশঙ্কর। ফুল দিয়ে সাজানো বড় ম্যাটাডরে কবীরশঙ্করের পাশে ছিলেন রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা। এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করে ভজনলাল বলেন, ‘‘দিকে দিকে বিজেপিই জিতবে।’’
চাঁপদানি থেকে গাড়িতে হুগলি মোড়ে ভূমি দফতরে আসেন কবীরশঙ্কর। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি) কুহুক ভূষণের হাতে মনোনয়নপত্র তুলে দেন কবীরশঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘শ্রীরামপুরের মানুষ নরেন্দ্র মোদীর উপরেই ভরসা রাখবেন।’’ শুক্রবার কল্যাণ দাবি করেছিলেন, দু’লাখের বেশি ভোটে জিতে তিনি শ্রীরামপুর থেকে টানা চতুর্থ বার লোকসভায় যাবেন। কবীরশঙ্করের পাল্টা দাবি, শুধু শ্রীরামপুর নয়, হুগলি জেলার তিন আসনেই বিজেপির জয় নিশ্চিত। শ্রীরামপুরে বিজেপি দেড় লক্ষ ভোটের ব্যবধানে জিতবে বলেও তিনি দাবি করেন।