কেশপুরে নির্বাচনী জনসভা করতে আসতে পারেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
ভোটপ্রচারের আঁচ বাড়তে চলেছে কেশপুরে। এখানে সম্ভবত অমিত শাহ এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বৈরথ হতে চলেছে, জল্পনা এমনই।
জানা যাচ্ছে, কেশপুরে নির্বাচনী জনসভা করতে আসতে পারেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তার আগে কিংবা পরে এখানে জনসভা করতে পারেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব মানছেন, অভিষেকের প্রচারসূচি প্রায় চূড়ান্ত। তবে স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, শাহের প্রচারসূচি এখনও চূড়ান্ত নয়। তবে দলের অন্দরে আলোচনা শুরু হয়েছে। এক সময় চর্চা ছিল, ১০ মে কেশপুরে আসতে পারেন শাহ। তাঁর সভার জন্য মাঠ দেখাও শুরু করেছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। পরে তাঁদের কাছে বার্তা আসে, কেশপুরে নির্বাচনী জনসভা দিন কয়েক পরে হবে।
তৃণমূল সূত্রে খবর, সব ঠিক থাকলে ১৯ মে কেশপুরে অভিষেক জনসভা করবেন। বিধায়ক শিউলি সাহা মানছেন, ‘‘১৯ তারিখে অভিষেক আসছেন কেশপুরে।’’ অমিত শাহ কি কেশপুরে আসতে পারেন? জেলা বিজেপির সহ সভাপতি অমূল্য মাইতি বলেন, ‘‘প্রচারসূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি।’’ তবে সূত্রের খবর, ২০ থেকে ২২ মে- র মধ্যে শাহের সভা হতে পারে কেশপুরে।
কেশপুর বিধানসভা ঘাটাল লোকসভার অন্তর্গত। এখানে ভোট রয়েছে ২৫ মে। মনোনয়নপর্ব শেষ। ইতিমধ্যে এক ‘বিস্ফোরক’ আশঙ্কা প্রকাশ করে ভোটের আঁচ বাড়িয়ে দিয়েছেন ঘাটালের তৃণমূল প্রার্থী দেব। ১০ থেকে ২০ মে-র মধ্যে কেশপুরে একজন খুন হবেন— এমনই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তৃণমূলের তারকা প্রার্থী। এ ক্ষেত্রে তিনি নিশানা করেছেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী হিরণ চট্টোপাধ্যায়কে। হিরণও পাল্টা শুনিয়েছেন, ‘‘আমরা এফআইআর করছি এটার বিরুদ্ধে। আসলে খুনের পরিকল্পনা তো ওঁরই। উনি যে খুন করার পরিকল্পনা করেছেন, তার জন্য ওঁকে দ্রুত গ্রেফতারও করতে হবে। এই আর্জি র্বাচন কমিশনকে জানাচ্ছি।’’
ঘাটাল জিততেকেশপুর চাই, এটা যুযুধান দু’দলের কাছেই স্পষ্ট। দেব এর আগে দু’বার ঘাটাল থেকে জিতেছেন। ২০১৪ সালে এবং ২০১৯ সালে। দু’বারই তিনি কেশপুর থেকে বড় ‘লিড’ পেয়েছিলেন। গত লোকসভায় এখান থেকে তিনি প্রায় ৯২ হাজার ভোটে এগিয়েছিলেন। এরপরে অবশ্য ঘাসফুলের গড়ে খানিক ধাক্কা দেয় পদ্মফুল শিবির। দু’বছরের মাথায় তৃণমূলের মার্জিন কমে যায়। একুশের বিধানসভা ভোটে কেশপুর থেকে তৃণমূলের শিউলি সাহা জেতেন প্রায় ২২ হাজার ভোটে। চিন্তায় পড়েন নেতৃত্ব। দু’দিন আগে ইমাম ও মোয়াজ্জিনদের সংগঠনের সম্মেলনের সূচনায় ছিলেন দেব, শিউলি, মহম্মদ রফিকরা। সেখানে রফিক মেনেছেন, ‘‘ওঁরা সহযোগিতা করেন বলেই একুশের নির্বাচনে শিউলিদি জিততে পেরেছিল। খুব বাস্তব কথা। কেশপুরে ৩৫৯টা বুথ। আমরা ১৫৮টায় লিড পেয়েছিলাম, বিজেপি ২০১টায়। তাও আমরা ২২ হাজার ভোটে শিউলিদিকে লিড দিয়েছি।’’
এ বার এক লাখি ‘লিড’ পাওয়া যে কঠিন, সেটা বুঝেছেন দেবও। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব মেটানোর বার্তা দিয়ে একাধিক কর্মী বৈঠকে তাঁর বার্তা, ‘‘ঘাটালটা এতটাও সহজ সিট নয়। যতই কেশপুর সঙ্গে থাকুক। আর দ্বন্দ্ব আর না হলে ভাল হয়।’ আর হিরণ বলছেন, ‘‘মানুষ ভোট দিতে পারলে ৫০ হাজার ভোটে কেশপুর থেকে হারবেন উনি (দেব)।’’