কৃষ্ণনগরের জনসভায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —নিজস্ব চিত্র।
বক্তৃতা শেষে বাংলায় ৪২ আসনেই জয়ের প্রতিশ্রুতি চাইলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে বাংলায় এসে বিজেপির জন্য ৩৫ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। কিন্তু মোদী বাংলার মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি চাইলেন ৪২টি আসনের জন্যই।
বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের আগামী ১০০ দিনের জন্য দায়িত্ব বেঁধে দিলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা আগামী ১০০ দিন গ্রামে গ্রামে যান। গ্রামের সকলকে আমার প্রণাম জানান।’’
কৃষ্ণনগরের জনসভা থেকে রেশনকাণ্ড নিয়েও তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ মোদীর। তৃণমূলের বিরুদ্ধে রেশন বণ্টন দুর্নীতির অভিযোগ তুলে মোদী বলেন, ‘‘মানুষের রেশন নিয়েও দুর্নীতি করেছে পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার। বাংলায় ‘স্কিমকে স্ক্যাম’ বানিয়েছে তৃণমূল।’’ তাঁর মন্তব্য, ‘‘তৃণমূলের অর্থ, ‘তুমি, আমি আর দুর্নীতি’।’’
১০০ দিনের কাজ নিয়ে তৃণমূলকে তোপ দাগলেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে ২৫ লক্ষ ভুয়ো জবকার্ড তৈরি হয়েছে। যারা জন্ম নেয়নি, তাদের নামেও জবকার্ড দেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের তোলাবাজরা গরিবের টাকা নিয়ে নিয়েছে। তৃণমূল সরকার সব প্রকল্পেই দুর্নীতি করে।’’
মোদী বলেন, ‘‘মহিলাদের সুরক্ষার জন্য হেল্পলাইন নম্বর তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু তৃণমূল সরকার তা নিয়ে কিছু ভাবছে না। উজ্জ্বলা গ্যাস নিয়েও মানুষ যে লাভ পেতে পারেন, সে কথাও ভাবছে না রাজ্যের সরকার। মানুষের জন্য তৈরি প্রকল্পতে তোলাবাজদের ঢোকাতে চাইছে তৃণমূল সরকার।’’
আরামবাগের পর কৃষ্ণনগরের জনসভাতেও মোদীর মুখে উঠে এল সন্দেশখালির প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘মা, মাটি, মানুষের কথা বলে তৃণমূল মা-বোনেদের ভোট পেয়েছে। কিন্তু এখন মা, মাটি, মানুষ তৃণমূলের কুশাসনে কাঁদছে। সন্দেশখালির মানুষ বিচার চেয়ে গিয়েছে। কিন্তু সরকার তাঁদের কথা শোনেনি। রাজ্য সরকার চাইত না যে সন্দেশখালির মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হোক। বিজেপির প্রতিবাদ দেখে ঝুঁকতে বাধ্য হয়েছে রাজ্য সরকার।’’
কৃষ্ণনগরে গিয়ে কল্যাণী এমস তৈরির কৃতিত্ব নিলেন মোদী। বাংলার জন্য ‘গ্যারান্টিপূরণ’ হয়েছে বলে দাবি করলেন প্রধানমন্ত্রী। কল্যাণী এমসকে কেন দূষণ সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি? সেই প্রশ্নও তিনি তোলেন। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, কল্যাণী এমসের উদ্বোধন যাতে না হয়, তার চেষ্টা করেছে তৃণমূল। তৃণমূলের ‘তোলাবাজ’ এবং ‘মাফিয়া’রা টাকা খাওয়ার চেষ্টা করেছে। তবে রাজ্যে অনেকগুলি মেডিক্যাল কলেজ খোলার কৃতিত্ব নিয়ে মোদী বলেন, ‘‘বিজেপির শাসনকালে রাজ্যে অনেক মেডিক্যাল কলেজ খুলেছে। চিকিৎসা ব্যবস্থা উন্নত হয়েছে।’’
‘‘এ বার এনডিএ সরকার ৪০০ পার’’, বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করে মোদী বলেন, ‘‘এখানে যে ভাবে তৃণমূল সরকার চলছে, তাতে মানুষ নিরাশ হয়ে গিয়েছেন। বার বার তৃণমূল সরকারকে ফিরিয়ে এনেছেন মানুষ। কিন্তু অত্যাচার এবং দুর্নীতির অপর নাম হয়ে গিয়েছে তৃণমূল। তৃণমূল বাংলার মানুষকে গরিব করে রেখে দিতে চায়।’’
‘হরে কৃষ্ণ’ বলে বক্তৃতা শুরু করলেন মোদী। মোদী বলেন, ‘‘সকলের আশীর্বাদ পেয়ে আমি ধন্য।’’
কৃষ্ণনগরের ইতিহাস দিয়ে বক্তৃতা শুরু করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এর পর মহুয়ার উদ্দেশে তোপ দেগে শুভেন্দু বলেন, ‘‘লোকসভার পাসওয়ার্ড বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। এর বদলা নেওয়া হবে। সন্দেশখালির মা-বোনেদের বদলা নেওয়া হবে। ইভিএমে বদলা নেওয়া হবে। কৃষ্ণনগর এ বার আমাদের হবে।’’ বক্তৃতা শেষে গান গাইলেন শুভেন্দু।
নাম না করে মহুয়াকে আক্রমণ করলেন সুকান্ত। তিনি বলেন, ‘‘ভাবতে অবাক লাগে এখান থেকে এক জনকে সাংসদ করেছিলেন মমতা। ওই সাংসদ মা কালীকে নিয়ে কুমন্তব্য করেন। ভাবতে অবাক লাগে, এক জন সাংসদ লিপস্টিক এবং পাউডারের লোভে নিজের সংসদের লগ ইন-আইডি অন্যকে দিয়ে দেন। এর উচিত শিক্ষা দেব। আগামী নির্বাচনে এখানে পদ্ম ফুল ফোটাতে হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে পৌঁছতেই তাঁকে একটি বড় কাঁসার থালা উপহার দিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। পরিয়ে দেওয়া হল মালা।
জনতার মাঝখান দিয়ে এসে মঞ্চে উঠলেন প্রধানমন্ত্রী। তবে তার আগে থেকেই মঞ্চ থকে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেতে শুরু করে দেন বিজেপি নেতারা। মোদী ছাড়াও মঞ্চে রয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজমদার, অমিত মালবীয়, শমীক ভট্টাচার্য।
রথে চেপে কৃষ্ণনগরের জনসভায় প্রবেশ করলেন নরেন্দ্র মোদী। জনতার উদ্দেশে হাত নাড়তে নাড়তে জনসভায় আসেন প্রধানমন্ত্রী। জনসভায় উঠল ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি।
কৃষ্ণনগরের সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী। মোদীর পরনে সাদা কুর্তা-পাজামা এবং কোট। কাঁধে শাল। মঞ্চে মোদী ছাড়াও উপস্থিত রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস, সাংসদ শান্তনু ঠাকুর, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বাংলার উন্নয়নের জন্য ১৫ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পের ঘোষণা করলেন মোদী।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। — নিজস্ব চিত্র।
সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ কৃষ্ণনগর পৌঁছলেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর জনসভা উপলক্ষে মানুষের ঢল নেমেছে কৃষ্ণনগর গভর্নমেন্ট কলেজের মাঠে। উপস্থিত রয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার।
কৃষ্ণনগরের জনসভায় সুকান্ত মজুমদার। — নিজস্ব চিত্র।
শনিবার তাঁর লোকসভা কেন্দ্র, কৃষ্ণনগরে যাচ্ছেন প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবারের সভায় মোদীর নিশানায় তিনি থাকতে পারেন বলেই বিজেপির একাংশের মত। শনিবার সকালে মহুয়াকে দেখা গেল নদিয়ার করিমপুরের এক দোকানে ডালপুরি খেতে। তাঁর প্রিয় ডালপুরি খেয়ে যাওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মহুয়া। সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করে মহুয়া লেখেন, ‘‘আজ করিমপুরের রমেন ঘোষের দোকানের ডালপুরি দিয়ে সকাল শুরু হল। আমার খুব প্রিয়। প্রধানমন্ত্রী মোদীজি আসুন না একটু খেয়ে যান।’’
শুক্রবার আরামবাগে গিয়ে মোদী একই সঙ্গে সন্দেশখালি এবং দুর্নীতির অভিযোগে আক্রমণ করেন তৃণমূলকে। রাজ্য বিজেপি নেতারা মনে করছেন, শনিবার মোদীর আক্রমণে বিদ্ধ হতে পারেন সংসদ থেকে বহিষ্কৃত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত মাসেই জানিয়েছিলেন, কৃষ্ণনগর থেকে আবারও তাঁর দলের প্রার্থী হবেন মহুয়া। তাই মোদীর নিশানায় তিনি থাকতে পারেন বলেই বিজেপির একাংশের মত।
হুগলির আরামবাগে শুক্রবার সভা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার তিনি সভা করবেন নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। শুক্রবার রাতে কলকাতায় রাজভবনে ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবার কলকাতা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদ হেলিকপ্টারে কৃষ্ণনগরের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার কথা তাঁর। সেখানে পৌঁছে সাড়ে ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত একটি সরকারি কর্মসূচিতে যোগ দেবেন। একগুচ্ছ প্রকল্পের শিলান্যাস ও উদ্বোধন করার কথা তাঁর। শুক্রবার আরামবাগেও তেমনটা ছিল। সরকারি প্রকল্পের উদ্বোধনের পরে কৃষ্ণনগর কলেজ মাঠে বিজেপির সভায় যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। ১২টা পর্যন্ত সভাস্থলে থাকার পরে রাজ্য ছাড়বেন।