—প্রতীকী ছবি।
আসন সমঝোতার প্রশ্নে দু’পক্ষের আলোচনা এখনও চলছে। সেই প্রক্রিয়া চলাকালীনই কংগ্রেসের মনোভাবে অসন্তোষ দানা বাঁধছে বাম শিবিরে। শুধু বামফ্রন্টের শরিক দলই নয়, সিপিএমের মধ্যেও তৈরি হচ্ছে উষ্মা। তবে একই সঙ্গে তাঁরা বলছেন, সামান্য কিছু বিরোধের জেরে গোটা সমঝোতা ভেস্তে যাক, কোনও ভাবেই তা কাম্য নয়।
বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রে আগেই দলের জেলা সভাপতি ও প্রাক্তন বিধায়ক মিলটন রশিদের নাম প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে কংগ্রেস। ওই আসনটি নিজেরা নিয়ে বীরভূম জেলারই বোলপুর আসন কংগ্রেসকে ছাড়ার পক্ষপাতী ছিল সিপিএম। সিউড়িতে রবিবার ছিল সিপিএমের বীরভূম জেলা কমিটির বৈঠক। তার পরে দলের পলিটব্যুরো সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র বলেছেন, ‘‘বীরভূম আসনে আমরা লড়তে চাই। এতে কোনও সন্দেহ নেই। কংগ্রেসের নেতারাও জানেন, জেলার দু’টি আসনের মধ্যে বীরভূম আসনটাই আমাদের কাছে অগ্রগণ্য ছিল। কিন্তু কংগ্রেস প্রথমেই তালিকায় এই আসন দিয়েছেন। ওঁরাও জোর করছিলেন এই আসনের জন্য।’’ তবে একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই একটা আসনের জন্য তো আর জোট ভেঙে যেতে পারে না! আমাদের লড়াই বিজেপি আর তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। তাই বীরভূমে কংগ্রেস প্রার্থী দিলেও জেলার দু’টি আসনেই আমরা সমান ভাবে লড়ব।’’
উত্তরবঙ্গের কোচবিহার আসনে বামফ্রন্টের তরফে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীর নাম ঘোষণা হয়ে যাওয়ার পরেও শনিবার রাতে সেখানে প্রার্থী দেওয়া হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। এই ঘটনাও সমঝোতার পক্ষে ভাল সঙ্কেত নয় বলে মনে করছেন সিপিএম তথা বাম নেতৃত্ব। পুরুলিয়া আসন ঘিরে ফ ব-র সঙ্গে সিপিএমের টানাপড়েন চলছে বামফ্রন্টের অন্দরে। কিন্তু বামেদের তরফে পুরুলিয়ায় কংগ্রেসের নেপাল মাহাতোর বিরুদ্ধে এখনও কোনও প্রার্থী ঘোষণা করা হয়নি। বাম নেতৃত্বের আশঙ্কা, তার আগেই কোচবিহার নিয়ে কংগ্রেসের পদক্ষেপ পরিস্থিতি জটিল করতে পারে। তবে প্রদেশ কংগ্রেসের এক নেতার বক্তব্য, ‘‘কিছু বাম শরিক দলের মনোভাবের জন্য হয়তো কিছু সমস্যা হচ্ছে। তবে বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের স্বার্থে বোঝাপড়া প্রয়োজন। ভুল বোঝাবুঝি বা টানাপড়েন কিছু থাকলে আলোচনা করেই তা মিটিয়ে নেওয়া যাবে বলে মনে হয়।’’
উত্তর ২৪ পরগনার শিল্পাঞ্চলে ব্যারাকপুর আসন নিয়েও এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি সিপিএম ও কংগ্রেস। বিজেপি এ দিনই অর্জুন সিংহের নাম আনুষ্ঠানিক ভাবে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে। ওই আসনে প্রার্থী নিয়ে সিপিএমের মধ্যে নানা দাবি রয়েছে। সমস্যা সামলাতে দলের রাজ্য কমিটির এক তরুণ সদস্যের নাম প্রার্থী হিসেবে ভাবা হয়েছিল, যিনি উত্তর ২৪ পরগনার বাসিন্দা নন। একই কারণে ২০১৪ সালে সিপিএমের তৎকালীন জেলা সম্পাদক গৌতম দেব ব্যারাকপুরে প্রার্থী করেছিলেন সুভাষিণী আলিকে। তবে ওই তরুণ নেতা ব্যারাকপুরে প্রার্থী হতে উৎসাহী নন বলে সিপিএম সূত্রের খবর। এমতাবস্থায় আসনটি শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসকে ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, এখনও পরিষ্কার নয়। বিকল্প হিসেবে আবার ওই জেলার বনগাঁ আসন নিয়েও কংগ্রেসের সঙ্গে সিপিএমের বার্তা বিনিময় চলছে।