গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বারাসতে বামফ্রন্ট মনোনীত ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থী হিসেবে সপ্তাহ দেড়েক আগে প্রবীর ঘোষের নাম ঘোষণা করেছিলেন ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু। কিন্তু গত সোম এবং মঙ্গলবার সেই প্রবীরকে ঘিরেই অভিযোগ ওঠে, বিজেপির শিক্ষক সংগঠনের সঙ্গে তাঁর যোগ রয়েছে। সেই সূত্রেই বুধবার আনন্দবাজার অনলাইনে লেখা হয়েছিল, বারাসতে প্রার্থীবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। বাস্তবে হলও তাই। বুধ-বিকেলে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বৈঠকে বসেছিল বামফ্রন্ট। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, বারাসতে প্রার্থী বদলানো হবে। প্রবীরের বদলে প্রার্থী করা হচ্ছে ফরওয়ার্ড ব্লকের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক তথা রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়কে। অন্য দিকে, জয়নগরের কেন্দ্রেও প্রার্থী ঘোষণা করল বামেরা। সেখানে আরএসপি নেতা সমরেন্দ্রনাথ মণ্ডলকে প্রার্থী করা হয়েছে।
সঞ্জীব বারাসত পুরসভার তিন বারের কাউন্সিলর ছিলেন। ২০০৫, ২০১০ এবং ২০১৫ সালে তিনি পুরভোটে লড়ে বারাসত পুরসভার ১৬ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন। ৩৩ বছর বয়সে তিনি হয়েছিলেন বারাসত পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানও। এ বার সেই সঞ্জীবকেই লোকসভার লড়াইয়ে নামাল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তবে ‘পরিবর্ত’ হিসেবে মাঠে নামলেন তিনি।
এর আগে প্রার্থী ঘোষণা করে আসানসোলের ক্ষেত্রে পিছিয়ে যেতে হয়েছিল বিজেপিকে। ভোজপুরি গায়ক পবন সিংকে প্রার্থী করেছিল পদ্মশিবির। কিন্তু সেই পবনের কিছু মিউজ়িক ভিডিয়োকে ‘বাঙালি-বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে সমাজমাধ্যমে প্রচার শুরু করেছিল তৃণমূল। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পবন আসানসোলের ময়দান ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। ঘটনাচক্রে, বুধবারেই আসানসোলে পরিবর্ত প্রার্থী হিসেবে বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিদায়ী সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার নাম ঘোষণা করেছে বিজেপি। একই দিনে বামেরাও বারাসতে প্রার্থী বদল করল। তা-ও আবার ‘বিজেপি-যোগের’ অভিযোগে। প্রসঙ্গত, একই ভাবে কংগ্রেসও ঘাটালের প্রার্থী বদলাতে পারে। তাঁর বিরুদ্ধেও বিজেপি যোগের অভিযোগ রয়েছে।
প্রবীরের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই জেলা ফরওয়ার্ড ব্লক নেতৃত্ব বুধবার দুপুরে রাজ্য কমিটির সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানেই প্রার্থী বদলের সিদ্ধান্ত হয়। তার পর তা পাশ হয় বামফ্রন্টের বৈঠকে। ইতিমধ্যেই বহু দেওয়ালে প্রবীরের নাম লেখা হয়ে গিয়েছিল। এই ঘোষণার ফলে আবার বামকর্মীদের চুনের বালতি হাতে সেই নাম মুছতে বেরোতে হবে।