Lok Sabha Election 2024

‘সখ্যের’ সুফলে বাজিমাত কৃষ্ণের

প্রথমত, জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল ও ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর ‘বিরোধ’ চলছে। ওই দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলা কৃষ্ণকে তাই প্রার্থী করেছে দল।

Advertisement

গৌর আচার্য 

রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২৪ ১০:০৫
Share:

রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণ কল্যাণীর নাম ঘোষণা হতেই তৃণমূল কর্মীদের উচ্ছ্বাস। ছবি: গৌর আচার্য।

অযোধ্যায় রাম মন্দিরের উদ্বোধনের দিন এক হাতে তৃণমূলের পতাকা ও আরেক হাতে গেরুয়া পতাকা নিয়ে কর্মীদের নিয়ে রায়গঞ্জে মিছিল করেছিলেন কৃষ্ণ কল্যাণী। তৃণমূল সূত্রে খবর, এর পরেই রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জে বিজেপি ‘ভাঙার’ কাজে কৃষ্ণর ভূমিকা প্রশংসিত হয় তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। সেই সঙ্গে জেলার সব গোষ্ঠীর সঙ্গেই সমান ‘সখ্য’ কৃষ্ণের। মনে করা হচ্ছে, এ সব কারণেই এ বার রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রে তাঁকে প্রার্থী করল তৃণমূল।

Advertisement

কৃষ্ণকে রায়গঞ্জে প্রার্থী করার পিছনে তৃণমূলের অন্দরেই নানা কারণ উঠে এসেছে। প্রথমত, জেলা তৃণমূল সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল ও ইসলামপুরের তৃণমূল বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরীর ‘বিরোধ’ চলছে। ওই দুই গোষ্ঠীর সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলা কৃষ্ণকে তাই প্রার্থী করেছে দল। দ্বিতীয়ত, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে কৃষ্ণ একটানা রায়গঞ্জ ও কালিয়াগঞ্জ বিধানসভায় বিজেপিতে ভাঙন ধরিয়েছেন। তৃতীয়ত, করোনা আবহ থেকে নিয়মিত দুঃস্থ ও বিশেষ ভাবে সক্ষমদের সহযোগিতা করেছেন। রাজবংশী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে কৃষ্ণর বড় ভূমিকা রয়েছে। তবে তৃণমূলে কৃষ্ণর ‘বিরুদ্ধ’ গোষ্ঠীও রয়েছে। তাঁরা প্রচারে কতটা সক্রিয় হবেন, সে প্রশ্নও থাকছে।

কৃষ্ণর বক্তব্য, “দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আমার উপর আস্থা রাখায় আমি কৃতজ্ঞ। রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের প্রচারকে সামনে রেখে মানুষের কাছে ভোট চাইব। মানুষের আশীর্বাদ পাব বলে আমি আশাবাদী।’’ কানাইয়া ও করিম এক সুরে দাবি করেছেন, দলের প্রার্থী হিসেবে কৃষ্ণকে জেতানোর জন্য দলের সবাই এক জোট হয়ে লড়বেন।

Advertisement

এ দিন বিকালে কলকাতায় উত্তর দিনাজপুরের তৃণমূল নেতৃত্ব ও জেলার তৃণমূল বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক করেন কৃষ্ণ। সেখানে দলের রাজ্য নেতারাও ছিলেন। বৈঠকে দলের স্বার্থে সবাইকে এক হয়ে প্রচারে নামার বিষয়ে আর্জি জানান কৃষ্ণ। কৃষ্ণ বলেন, ‘‘জেলায় তৃণমূলে দ্বন্দ্ব নেই। প্রার্থী হিসেবে আমার সমর্থনে সবাই এক হয়ে প্রচারে নামার শপথ নিয়েছেন।”

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে রায়গঞ্জ কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়ে বিধায়ক নির্বাচিত হন কৃষ্ণ। এর পর, কয়েক মাসের মধ্যে তিনি তৃণমূলে যোগ দেন। রবিবার তৃণমূল তাঁকে রায়গঞ্জের প্রার্থী ঘোষণা করার পর কৃষ্ণ বলেন, ‘‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগেই নিয়ম মেনে আমি বিধায়ক ও পিএসির চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেব।’’ কৃষ্ণ বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিলে রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে উপ নির্বাচন হবে। এ বিষয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি বাসুদেব সরকারের বক্তব্য, “কোথাও উপনির্বাচন হলে কোটি কোটি সরকারি টাকা খরচ হয়। উপনির্বাচন না হলে উন্নয়নের কাজ হতে পারে।” তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষের বক্তব্য, “বিভিন্ন কেন্দ্রের বিজেপির বিধায়কেরা লোকসভা ভোটে দাঁড়ালে, তখনও নেতারা আক্ষেপের কথা বলবেন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement