Lok Sabha Election 2024

ভোটে লড়ার অর্থ নেই স্বয়ং অর্থমন্ত্রীর! নির্মলা কতটা গরিব? সুকান্ত-দিলীপ অথৈ জলে, পিছিয়ে মোদীও

রাজ্যসভার সাংসদ কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে লোকসভা ভোটে দাঁড়াতে বলেছিলেন বিজেপি নেতৃত্ব। অর্থাভাবের কথা জানিয়ে সরে এসেছেন তিনি। কিন্তু সত্যিই কতটা গরিব তিনি?

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২৪ ১৭:১৪
Share:

অর্থমন্ত্রীর অর্থাভাব নিয়ে অনেক জল্পনা। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চান না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। কারণ হিসাবে তিনি দলকে জানিয়েছেন, ভোটে লড়াই করার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ নেই তাঁর। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তাঁর অর্থাভাবের কথা নিজেই প্রকাশ্যে জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “আমার বেতন এবং সঞ্চয় অল্প। সেটা দেশের অর্থ নয়।”

Advertisement

দিল্লিবাড়ির লড়াইয়ে রাজ্যসভার অনেক সদস্যকেই এ বার টিকিট দিয়েছে বিজেপি। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডাও। তিনি এত দিন রাজ্যসভার সদস্য ছিলেন। একই ভাবে নির্মলাও তিন বার রাজ্যসভার সদস্য হয়েছেন। শেষ বার জিতেছেন ২০২২ সালে। সেই সময়ে নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হলফনামায় নির্মলা জানিয়েছিলেন, তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ২,৬৩,৭৭,৮৬১ টাকা।

ঘটনাচক্রে, নির্মলার মতো দু’কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীরও। ২০১৯ সালের হলফনামা বলছে মোদীর মোট সম্পত্তি ছিল ২,৫১,৩৬,১১৯ টাকা। দেখা যাচ্ছে, সর্বশেষ সম্পত্তির হিসাবে স্বয়ং মোদীর চেয়ে একটু হলেও এগিয়েই আছেন নির্মলা। তার পরেও নির্মলা কেন বললেন, তাঁর কাছে ভোটে লড়ার মতো অর্থ নেই?

Advertisement

রাজনীতির সঙ্গে যাঁদের যোগাযোগ রয়েছে, তাঁরা জানেন কোনও প্রার্থীই সাধারণত নিজের সঞ্চিত অর্থের ভরসায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন না। দলের পক্ষেই তাঁর খরচ বহন করা হয়ে থাকে। বিজেপির মতো ‘ধনী’ দলের ক্ষেত্রে তো বটেই। কিন্তু নির্মলা যে দাবি করেছেন, তাতে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদার বা মেদিনীপুরের সাংসদ তথা বর্ধমান-দুর্গাপুর আসনের বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষের ভোটের লড়াইয়ে অর্থাভাবে হাবুডুবু খাওয়ার কথা! গত পাঁচ বছরে সাংসদ থাকার ফলে তাঁদের বেতন বাবদ প্রাপ্ত অর্থের কতটা সঞ্চিত রয়েছে, তা জানা যাবে এ বারের মনোনয়নে হলফনামা জমা দিলে। তবে পাঁচ বছর আগে যখন দিলীপ, সুকান্ত ভোটে লড়েছিলেন, তখন তাঁদের সম্পত্তি ছিল কোটির থেকে অনেক দূরে। ২০১৯ সালে সুকান্তের ঘোষিত সম্পত্তি ছিল ৫৮,২৫,৮৬৬ টাকা। দিলীপের ৪৫,৩৬,৪৬২ টাকা।

নির্মলা জানিয়েছেন, তাঁকে তামিলনাড়ু বা অন্ধ্রপ্রদেশের কোনও আসন থেকে লড়তে বলা হয়েছিল লোকসভা ভোটে। পাশাপাশিই তিনি জানিয়েছেন, সেই প্রস্তাব তিনি খারিজ করে দিয়েছেন ভোটে লড়ার ‘যথেষ্ট টাকা নেই’, এই যুক্তি দিয়ে। তবে সেটিই যে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর ভোটে লড়তে না-চাওয়ার মূল কারণ নয়, তা-ও নির্মলার কথাতেই স্পষ্ট হয়েছে। তিনি বলেছেন, “অন্ধ্রপ্রদেশ কিংবা তামিলনাড়ু, যেখানেই ভোটে দাঁড়াই, সেখানে জেতার একাধিক মাপকাঠি রয়েছে। যেমন, আপনি সেখানকার গোষ্ঠী বা ধর্মের মানুষ কি না। আমি মনে করি না আমি ওটা করতে পারব।” একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, “আমি এক সপ্তাহ থেকে দশ দিন সময় নিয়েছিলাম। তার পরে শুধু বললাম, না, (নির্বাচনে) লড়ার মতো টাকা আমার নেই।’’

যাবতীয় প্রশ্নের সূত্রপাত সেখানেই। অতীতে বার বার রাজ্যসভায় জিতে সংসদে আসা প্রতিরক্ষা থেকে অর্থ মন্ত্রক পাওয়া নির্মলা কি তবে লোকসভা নির্বাচনের লড়াই নিয়ে ‘শঙ্কিত’? আরও প্রশ্ন, নির্মলা অর্থাভাবের কারণ দেখানোর পরে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব কি দলের তরফে সহযোগিতার প্রস্তাব দেননি? অর্থমন্ত্রীর অর্থাভাব নিয়ে এখন অনেক জল্পনা। অনেকে এমনও বলছেন যে, নির্মলার স্বামী পরাকলা প্রভাকর নির্বাচনী বন্ড নিয়ে যে প্রশ্ন তুলেছেন, তার সঙ্গেও যোগ থাকতে পারে ভোটে না দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement