Interim Budget 2024

সামনেই লোকসভা, মহিলা ভোটের অঙ্ক মাথায় রেখেই অন্তর্বর্তী বাজেট পড়লেন মহিলা অর্থমন্ত্রী

নির্মলা সীতারামন সার্বিক ভাবে মহিলাদের ক্ষমতায়নের কথা বলেছেন। তবে গভীরে গেলে দেখা যাবে, তার মধ্যেও গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিয়েছেন দেশের মহিলা অর্থমন্ত্রী।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৩:২৫
Share:

নির্মলা সীতারামন। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

নির্মলা সীতারামনকে অর্থমন্ত্রীর পদে বসানোর পর দ্বিতীয় মেয়াদে নরেন্দ্র মোদী সরকার বার্তা দিতে চেয়েছিল, মহিলাদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন তাদের অন্যতম লক্ষ্য। লোকসভা ভোটের আগে অন্তর্বর্তী বাজেট পড়তে গিয়ে মহিলা ভোটকেই মূল লক্ষ্য করতে চেয়েছেন নির্মলা। তাঁর ভাষণে যেমন ছিল, কী করা হয়েছে সেই ফিরিস্তি, তেমনই ছিল কী করতে চান সেই পরিকল্পনার কথাও।

Advertisement

তিন তালাক প্রথা তুলে দেওয়া থেকে লোকসভা এবং বিধানসভায় এক-তৃতীয়াংশ মহিলা সংরক্ষণকে আইনি করার কথা বলেছেন অর্থমন্ত্রী। পাশাপাশিই তিনি বলেন, ‘লাখপতি দিদি’র সংখ্যা এক কোটি থেকে বাড়িয়ে দু’কোটি করতে চান আগামী পাঁচ বছরে। বাজেট বক্তৃতায় নির্মলার দাবি, দেশের এক কোটি মহিলা এখন লাখপতি। সেই সংখ্যা দু’কোটিতে নিয়ে যেতে চায় এই সরকার।

কারা এই ‘লাখপতি দিদি’? গত বছর অগস্টেই ‘বিশ্বকর্মা প্রকল্প’ ঘোষণার পাশাপাশি ‘লাখপতি দিদি’ প্রকল্প ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র। এই প্রকল্পে গ্রামীণ এলাকার মহিলাদের নানা রকম কারিগরি দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। যার সাহায্যে প্রতি বছর অন্তত ১ লক্ষ টাকা করে উপার্জন করতে সমর্থ হবেন ওই মহিলারা। মূলত গ্রামীণ মহিলাদের আর্থিক ভাবে স্বাধীন করাই ছিল এই প্রকল্পের লক্ষ্য। মহিলা ক্ষমতায়নের প্রসঙ্গে বৃহস্পতিবার লোকসভায় তাঁর বাজেট বক্তৃতায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, দেশে আবাস যোজনায় যে বাড়ি হয়েছে, তার ৭০ শতাংশ মালিকানা মহিলাদের। কর্মজীবী মহিলার সংখ্যাও এই পাঁচ বছরে ২৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে দাবি করেছেন নির্মলা। আশাকর্মী থেকে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের নানাবিধ সুবিধার প্রসঙ্গও উল্লিখিত হয়েছে অন্তর্বর্তী বাজেটে। সার্বিক ভাবে নির্মলা তাঁর বাজেট বক্তৃতায় এই ধারণা তৈরি করতে চেয়েছেন যে, সমাজের সব অংশের মহিলার ক্ষমতায়নের বিষয়ে অগ্রাধিকার দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সেই ক্ষমতায়ন যেমন অর্থনৈতিক পরিসরে, তেমন রাজনৈতিক পরিসরেও রয়েছে।

Advertisement

ভারতের রাজনীতিতে অনেক বছর ধরেই এই কথা চালু রয়েছে— নির্বাচনে জেতা-হারার ক্ষেত্রে মহিলা ভোট অন্যতম সূচক। এ কথা অনস্বীকার্য যে, সেই সূচকের সবচেয়‌ে বড় উদাহরণ বাংলা। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’ প্রকল্প মোটামুটি গোটা দেশেই মডেল হয়ে উঠেছে। মধ্যপ্রদেশে দীর্ঘ দিন শাসনের পরেও প্রতিষ্ঠান বিরোধিতার হাওয়াকে রুখে দিয়ে বিজেপির ক্ষমতায় ফিরে আসার নেপথ্যে শিবরাজ সিংহ চৌহানের ‘লাডলি বহেনা’ প্রকল্প কাজ করেছিল। সেই প্রকল্পের নাম আলাদা হলেও ছাঁচটা ছিল মমতার ‘লক্ষ্মীর ভান্ডার’-এর মতোই।

বৃহস্পতিবার অন্তর্বর্তী বাজেটের বক্তৃতায় নির্মলা সার্বিক ভাবে মহিলা ক্ষমতায়নের কথা বলেছেন। তবে গভীরে গেলে দেখা যাবে, তার মধ্যেও গ্রামীণ মহিলাদের ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিয়েছেন দেশের মহিলা অর্থমন্ত্রী। দেশের অধিকাংশই গ্রাম। নিঃসন্দেহে ভোটের আগে সেই মহিলা মনকেই ছুঁতে চেয়েছেন নির্মলা। ৯-১৪ বছর বয়সি মেয়েদের ‘সার্ভাইক্যাল ক্যানসার’ প্রতিষেধক টিকা বিনামূল্যে দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন অর্থমন্ত্রী। তিন তালাকের প্রসঙ্গ তুলে সংখ্যালঘু মহিলাদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দেওয়ার বিষয়টিও তাঁর বৃহস্পতিবারের বাজেট বক্তৃতায় তুলে ধরতে চেয়েছেন নির্মলা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement