যোগী আদিত্যনাথ। — ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নড্ডার পরে এ বার ভোটের প্রচারে ‘সংখ্যালঘু’ জনগোষ্ঠীকে নিশানা করার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে। শুক্রবার সম্ভলের বিজেপি প্রার্থীর সমর্থনে আয়োজিত এক জনসভায় আদিত্যনাথ বলেন, ‘‘এই নির্লজ্জ কংগ্রেসের লক্ষ্য হল, গোহত্যা করে সংখ্যালঘুদের মাংস খাওয়ায় অধিকার দেওয়া।’’
মোরাদাবাদের সভায় যোগীর অভিযোগ, কংগ্রেস নেতৃত্বের উদ্দেশ্য গোমাতাকে কসাইদের হাতে তুলে দেওয়া। মোদী-নড্ডার মতো সরাসরি ‘মুসলিম’ শব্দ ব্যবহার না করলেও যোগীর নিশানায় দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী বলেই বিরোধীদের অভিযোগ। প্রধানমন্ত্রী মোদীও শুক্রবার দুপুরে বিহারের অরারিয়ায় বিজেপির সভায় বলেছিলেন, ‘‘কর্নাটকে দলিত, অনগ্রসরদের কোটা ছাঁটাই করে মুসলিমদের দিতে চাইছে কংগ্রেস।’’
সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সমীক্ষায় জানানো হয়েছে, মোদীর জমানায় দেশে ধনী-গরিবের অসাম্য বেড়েছে। ক্ষেত্র বিশেষে সেই অসাম্য ছাপিয়ে গিয়েছে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনকেও! দেশের সম্পদ মুষ্টিমেয় কয়েক জনের হাতে কুক্ষিগত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেস নেতৃত্ব ধনীদের সম্পদের হিসাব করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিরোধীদের অভিযোগ, মোদীর ‘ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতিদের বাড়বাড়ন্ত নিয়ে আমজনতার মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে বুঝতে পেরেই বিজেপি নেতৃত্ব মেরুকরণের পথ বেছে নিয়েছেন।
গত ২১ এপ্রিল রাজস্থানের বাঁশওয়াড়ায় বিজেপির সভায় মোদী বলেন, ‘‘প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অতীতে বলেছিলেন, দেশের সম্পদে সর্বাগ্রে অধিকার মুসলিমদের। সেই কারণেই সমীক্ষা করার পরিকল্পনা নিয়েছে কংগ্রেস। যাতে দেশবাসীর কষ্টার্জিত অর্থ মুসলিম ও অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া যায়।’’ এর পরে সোমবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেসের নজর আপনার সম্পত্তির উপরে রয়েছে। ক্ষমতায় এলে এরা মা-বোনেদের মঙ্গলসূত্র ছিনিয়ে নেবে। কাদের বিলিয়ে দেবে, তা আপনারা জানেন।’’
যদিও মনমোহন প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বলেছিলেন, ‘‘দেশের সম্পদে অগ্রাধিকার পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীগুলির।’’ তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাহের বক্তৃতাতেও এসেছে মুসলিম প্রসঙ্গ। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে নিশানা করে তিনি বলেছেন, ‘‘আপনারা দেশে সংবিধানের পরিবর্তে শরিয়তের শাসন চালু করতে চান কি না, তার স্পষ্ট ব্যাখ্যা দিন।’’ মেরুকরণের রাজনীতির অভিযোগ উঠেছে বিজেপি সভাপতি নড্ডার বিরুদ্ধেও। শুক্রবার তিনি বলেন, ‘‘কংগ্রেস এবং তাদের ‘ইন্ডি’ (‘ইন্ডিয়া) জোটের গোপন উদ্দেশ্য হল তফসিলি জাতি-জনজাতি (এসসি-এসটি) এবং অন্য অনগ্রসরদের (ওবিসি) অধিকার কেড়ে নিয়ে তা মুসলিমদের দিয়ে দেওয়া।’’