ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান এর প্রচার হোডিং। ঘাটালের বিদ্যাসাগর স্কুল মাঠে।
দেবকে ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের রূপকার বলে আগেই প্রচার শুরু করেছিল তৃণমূল। এ বার তা স্পষ্ট হল বিশালাকার হোর্ডিংয়ে।
ঘাটাল শহরের বিবেকানন্দ মোড় ও বিদ্যাসাগর হাই স্কুল মাঠের কোণে দেওয়া হয়েছে বিশালাকার দুটি হোর্ডিং। তাতে লেখা দেব ‘ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের চ্যাম্পিয়ন’। নীচে লেখা ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়িত করবে রাজ্যই। বড় হোর্ডিংয়ে বড় করে ছবি রয়েছে দু’জনের। দেব এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। দু’জনেরই হাসি মুখ। দেব আছেন করজোড়ে। হোর্ডিংয়ে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবিও রয়েছে। তবে তাঁর ছবি তুলনায় ছোট। হোর্ডিংয়ে সেই ছবির অবস্থান উপরে এক কোণে। উপরে অন্যদিকের কোণে রয়েছে তৃণমূলের প্রতীক জোড়া ফুল।
মূলত তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও ঘাটালের দলীয় প্রার্থী দেবের উদ্যোগেই যে ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান গতি পেয়েছে তা জেনে গিয়েছে সকলে। কারণ, ঘাটালে প্রচারে এসে সে কথা বলেছেন দু’জনেই। পাশাপাশি এই উদ্যোগে যে মুখ্যমন্ত্রীও সমান ভাবে উৎসাহী এবং তৎপর তা জানাতেও ভোলেননি দু’জনেই। তবে মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে প্রচারের আলোকবৃত্তে রয়েছেন মূলত ওই দু’জনই। এর আগে দেবের প্রচারে শোনা গিয়েছিল, ‘‘ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের রূপকার দেব আপনাদের সামনে হাজির হচ্ছেন।’’ এ বার মৌখিক নয়। দেব ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের রূপকার হলেন লিখিত ভাবে। অন্তত পোস্টারে দাবি করা হল তাই। শুধু ঘাটাল শহরের দু’জায়গায় নয়। এই পোস্টার দেখা গিয়েছে দাসপুর-সহ অন্য জায়গাতেও। তৃণমূলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভাপতি আশিস হুতাইত বলেন, ‘‘দলের তরফ থেকে এই হোর্ডিং দেওয়া হয়েছে।’’
তৃণমূল জেলা সভাপতির দাবি, হোর্ডিং দিয়েছে দল। কিন্তু হোর্ডিংয়ে তৃণমূল শব্দটির উল্লেখ নেই কোথাও। কাদের পক্ষ থেকে পোস্টার, হোর্ডিং দেওয়া হচ্ছে তা জানার সহজ উপায় হচ্ছে সৌজন্য। কিন্তু এই বিশালাকার হোর্ডিয়ে নেই কোনও সৌজন্য। ফলে প্রশ্ন উঠছে এমন হোর্ডিং দিল কে বা কারা? প্রশ্নের শেষ নয় এখানেই। তৃণমূলের অন্দরের কিছু অস্বস্তিকর প্রশ্ন তুলেছে এই হোর্ডিং। নীচুতলার একাংশের বক্তব্য, দেব মাস্টারপ্ল্যানের চ্যাম্পিয়ন না হয় মানা গেল। অভিষেকের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে এ কথাও ঠিক। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর অবদান কি এতই কম যে কোনওরকমে হোর্ডিংয়ে স্থান পেয়েছেন তিনি। রাজ্যে ক্ষমতায় রয়েছে শাসক দল। ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত করবে রাজ্য সরকার। দল ও সরকারের প্রধান তো মমতাই। তা হলে তাঁর মুখ এত ছোট কেন? কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। তাদের বক্তব্য, কাজ শেষ হওয়ার পরই কোনও ক্ষেত্রে কাউকে কোনও প্রকল্পের রূপকার, চ্যাম্পিয়ান বলা যায়। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে তো এখনও কাজ শুরুই হয়নি।
বন্যা রুখতেই ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানের পরিকল্পনা। তাকে ঘিরেই চলে রাজনীতি। ভোট। কৃতিত্ব দাবি। এ বারও তার অন্যথা হচ্ছে না। এক পোস্টারে কৃতিত্ব দাবি করতেই বন্যার জলের মতো ধেয়ে আসছে প্রশ্নবাণ।