সদানন্দ গৌড়া। — ফাইল চিত্র।
বেঙ্গালুরু উত্তর লোকসভা আসনের টিকিট না পেয়ে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিতে চলেছেন তিনি। কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সদানন্দ গৌড়াকে ঘিরে সোমবার থেকে এমনই জল্পনা শুরু হয়েছে সে রাজ্যে। মঙ্গলবার সেই জল্পনা উস্কে সদানন্দ বললেন, ‘‘বুধবার আমার পরবর্তী রাজনৈতিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করব।’’ ‘অন্য দলের’ সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ হয়েছে বলেও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। কংগ্রেসের একটি সূত্র জানাচ্ছে, মাইসুরু আসন থেকে ‘হাত’ চিহ্নের প্রার্থী হতে পারেন সদানন্দ।
বেঙ্গালুরু উত্তরের দু’বারের সাংসদ সদানন্দকে এ বার টিকিট দেয়নি বিজেপি। সেখানে প্রার্থী করা হয়েছে আর এক প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার ঘনিষ্ঠ নেত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শোভা করান্দলাজেকে। তার পরেই সোমবার বিজেপি ছাড়ার ‘বার্তা’ দিয়েছিলেন ৭১ বছরের নেতা। কর্নাটকের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পা গত সপ্তাহেই বিজেপি ছেড়ে শিমোগা লোকসভা আসনে ইয়েদুরাপ্পা-পুত্রের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে লড়ার কথা ঘোষণা করেছেন। এই পরিস্থিতিতে সদানন্দ দল ছাড়লে কন্নড় রাজনীতিতে বিজেপি ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও অতীতে সে রাজ্যের বিজেপি সভাপতি এবং নরেন্দ্র মোদী সরকারের রেলমন্ত্রীর মতো গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন ভোক্কালিগ্গা জনগোষ্ঠীর গুরুত্বপূর্ণ নেতা সদানন্দ। গত বছর কর্নাটকে বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার। সম্প্রতি তিনি আবার পদ্মশিবিরে ফিরে এসেছেন।
এক দশক আগে কর্নাটকে লিঙ্গায়েত ‘ভোটব্যাঙ্ক’ নিশ্চিত করার পরে ভোক্কালিগাদের কাছে টানতে তৎপর হয়েছিলেন তৎকালীন বিজেপি নেতৃত্ব। ২০১১ সালে অগস্টে দুর্নীতির মামলায় অভিযুক্ত লিঙ্গায়েত নেতা ইয়েদুরাপ্পাকে সরিয়ে ভোক্কালিগা নেতা সদানন্দকে মুখ্যমন্ত্রী করা হয়েছিল। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা ক্ষমতায় না থাকলেও সে সময়ে সরকারের রাশ লিঙ্গায়েত নেতাদের হাতে থাকায় ভোক্কালিগাদের সমর্থন কুড়োনোর প্রশ্নে ব্যর্থ হন মাত্র এক বছরের জন্য মুখ্যমন্ত্রিত্বের দায়িত্বে থাকা সদানন্দ।
২০১২-র জুলাইয়ে তাঁকে সরিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে লিঙ্গায়েত নেতা জগদীশ শেট্টারকে বসিয়েছিল বিজেপি। ২০১৪ সালে প্রথম মোদী সরকার ক্ষমতায় এলে সদানন্দকে রেল মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয়। দ্বিতীয় মোদী সরকারের আমলে প্রথম দু’বছর কেন্দ্রীয় রসায়ন ও সার মন্ত্রকের দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে। কিন্তু ২০২১ সালে সদানন্দকে মন্ত্রিত্ব থেকে সরিয়ে রাজ্যে দলীয় সংগঠনকে শক্তিশালী করার দায়িত্ব দিয়েছিল দল। কিন্তু গত বছর ইয়েদুরাপ্পা-পুত্র বিজয়েন্দ্রকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি করার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল সদানন্দের। এ বার কি তা বিচ্ছেদের পথে?