(বাঁ দিকে) ইয়েদুরাপ্পা এবং ঈশ্বরাপ্পা। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা ভোটের দ্বিতীয় প্রার্থিতালিকা ঘোষণার পরেই বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতিভঙ্গের অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার বিদ্রোহের ‘বার্তা’ দিয়েছিলেন তিনি। শনিবার সেই অবস্থানে অটল থেকে কর্নাটকের প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী কেএস ঈশ্বরাপ্পা জানিয়ে দিলেন, লোকসভা ভোটে নির্দল প্রার্থী হিসাবে শিমোগা কেন্দ্র লড়বেন তিনি।
২০০৯ সাল থেকে বিজেপির দখলে থাকা শিমোগায় এ বার বিজেপি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পার পুত্র তথা বিদায়ী সাংসদ বিওয়াই রাঘবেন্দ্রকে আবার প্রার্থী করেছে। কংগ্রেস প্রার্থী করেছেন কর্নাটকের প্রয়াত প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী এসআর বঙ্গারাপ্পার কন্যা তথা সে রাজ্যের বর্তমান স্কুল শিক্ষামন্ত্রী মধু বঙ্গারাপ্পার দিদি গীতা শিব রাজকুমারকে। গীতা কন্নড় চলচ্চিত্র তারকা প্রয়াত রাজকুমারের পুত্রবধূ।
এই পরিস্থিতিতে প্রভাবশালী লিঙ্গায়েত নেতা ঈশ্বরাপ্পার নির্দল প্রার্থী হওয়ার ঘোষণার পদ্মশিবির বিপাকে পড়ল বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ। বিদ্রোহী নেতার দাবি, ২০২২ সালে কর্নাটকের বিধানসভা ভোটের সময় তৎকালীন রাজ্য বিজেপির সভাপতি তথা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হাভেরী আসনটি তাঁর পুত্র কান্তেশকে ছাড়া হবে। কিন্তু মঙ্গলবার ঘোষিত প্রার্থিতালিকায় দেখা গিয়েছে ওই আসনে পদ্ম চিহ্নে লড়বেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বাসবরাজ বোম্মাই। ঘটনাচক্রে, কর্নাটক বিজেপির সভাপতি পদে এখন রয়েছেন ইয়েদুরাপ্পার আর এক পুত্র বিজয়েন্দ্র।
ইয়েদুরাপ্পার জেলা শিবমোগ্গার প্রভাবশালী বিজেপি নেতা ঈশ্বরাপ্পা ২০২২ সালের গোড়ায় দুর্নীতি এবং এক ঠিকাদারকে আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন। তার জেরে মন্ত্রিসভা থেকে ইস্তফা দিতে বাধ্য হন। এর পর বিধানসভা ভোটেও টিকিট পাননি তিনি। তাঁর ছেলে কান্তেশকেও মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সে সময় জল্পনা তৈরি হয়েছিল, প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জগদীশ শেট্টার এবং আর এক প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী লক্ষ্মণ সড়াভীর মতো ঈশ্বরও কংগ্রেসে যোগ দেবেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। সে কারণে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী স্বয়ং ফোন করে ঈশ্বরাপ্পাকে ধন্যবাদ জানিয়েছিলেন। ঈশ্বরাপ্পা বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, ‘‘সে সময় ইয়েদুরাপ্পা আমাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, লোকসভা ভোটে হাভেরীতে কান্তেশকে প্রার্থী করা হবে। কিন্তু তা মানা হল না।’’ ১৯৮৯ সালে কংগ্রেসের হাত থেকে শিমোগা বিধানসভা ছিনিয়ে নিতে পেরেছিলেন তৎকালীন তরুণ বিজেপি নেতা ঈশ্বরাপ্পা। সেই থেকে টানা জিতেছিলেন ২০১৮ পর্যন্ত। প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে এ বার কি তিনি বিজেপিকে হারাবেন শিমোগা লোকসভায়?