গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
আসন রফা ঘোষণার পরেই অন্ধ্রপ্রদেশে শরিকি অশান্তি শুরু হল এনডিএর অন্দরে। বৃহস্পতিবার রাতে কাঁকিনাড়া জেলার পীঠাপুরমে তেলুগু অভিনেতা-রাজনীতিক পবন কল্যাণের কুশপুতুল পোড়ানোর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখালেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডুর দল তেলুগু দেশম পার্টি (টিডিপি)-র কর্মী-সমর্থকেরা। দলীয় দফতরের সামনে ওই বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় পতাকা এবং কাগজপত্রে আগুনও লাগান তাঁরা।
আসন রফার সূত্র অনুযায়ী জনসেনা পার্টির ভাগে পড়েছে পীঠাপুরম বিধানসভা আসন। পবন স্বয়ং সেখানে প্রার্থী হবেন বলে বৃহস্পতিবার ঘোষণা করা হয়। তার পরেই শুরু হয় অশান্তি। টিডিপির স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, কোনও অবস্থাতেই এই আসন জনসেনাকে ছাড়া যাবে না। প্রসঙ্গত, লোকসভা ভোটের সঙ্গেই অন্ধ্রপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন হবে। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী জগন্মোহন রেড্ডির দল ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে হারাতে হাত মিলিয়েছে বিজেপি, টিডিপি এবং জনসেনা।
রফাসূত্র অনুযায়ী অন্ধ্রে লোকসভার ২৫টি আসনের মধ্যে টিডিপি ১৭, বিজেপি ৬ এবং জনসেনা ২টিতে লড়বে। বিধানসভার ১৪৪টি আসনের মধ্যে টিডিপি ১৪৪, জনসেনা ২১ এবং বিজেপি ১০টিতে প্রার্থী দেবে। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির সঙ্গে জোটে ছিলেন চন্দ্রবাবু। কিন্তু অন্ধ্রের বিশেষ মর্যাদার দাবিতে ২০১৮ সালে এনডিএ ছেড়েছিল টিডিপি। ২০১৯-এর লোকসভা এবং অন্ধ্রপ্রদেশ বিধানসভা ভোটে তারা একাই লড়াই করেছিল। সেই ভোটে জগন্মোহন রেড্ডির ওয়াইএসআর কংগ্রেস পার্টির কাছে হেরে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি হারিয়েছিলেন চন্দ্রবাবু। ছ’বছর পরে আবার এনডিএ-তে প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তাঁর।
পবন ২০১৯-এ লোকসভা-বিধানসভা ভোটের আগে জনসেনা গড়ে আলাদা ভাবে লড়েছিলেন। কিন্তু দু’টি কেন্দ্রে লড়েও বিধায়ক হতে পারেননি। তবে বিশাখাপত্তনম জেলা গজ়ুয়াকা এবং নরসাপুরম জেলার ভীমাবরম, দু’টি আসনেই টিডিপি প্রার্থীকে পিছনে ফেলে দ্বিতীয় হয়েছিলেন তিনি। ১৭৫ আসনের অন্ধ্র বিধানসভায় মাত্র একটিতে জিতেছিল তাঁর দল।
পবনের দাদা চিরঞ্জীবীও তেলুগু চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা। ২০০৯-এ ভোটের ঠিক আগে নিজের দল প্রজারাজ্যম পার্টি গড়ে বিধায়ক হয়েছিলেন তিনি। পরে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হন। তবে দাদার সঙ্গে প্রজারাজ্যম পার্টির প্রচার করলেও পবন কখনও কংগ্রেসে যোগ দেননি। এ বার দাক্ষিণাত্যের ওই রাজ্যে তিন দলের জোট ক্ষমতাসীন ওয়াইএসআর কংগ্রেসকে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে।