তমলুক লোকসভার বিজেপি প্রার্থী তথা অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
তমলুকের বিজেপি প্রার্থী তথা প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হল থানায়। হামলা, ভাঙচুর, খুনের চেষ্টার অভিযোগ-সহ ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং অস্ত্র আইনেও অভিযোগ দায়ের হয়েছে অভিজিৎ-সহ বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীর নামে। আর এই অভিযোগ দায়ের করেছেন এসএসসি মামলার রায়ে চাকরিহারা শিক্ষকেরা। তাঁদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ।
শনিবার তমলুকের বিজেপি প্রার্থী অভিজিতের মনোনয়ন দিতে যাওয়ার আগে একটি মিছিল করে বিজেপি। ওই মিছিল তমলুক হাসপাতাল মোড়ে চাকরিহারা শিক্ষকদের অনশনমঞ্চের কাছে পৌঁছতেই শুরু হয় গন্ডগোল। স্লোগান, পাল্টা স্লোগান, ধাক্কাধাক্কিতে উত্তপ্ত হয় পরিস্থিতি। ওই ঘটনায় অনশনমঞ্চে উপস্থিত একাধিক চাকরিহারা শিক্ষক আহত হন বলে অভিযোগ। এ নিয়ে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ-সহ বেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মীর বিরুদ্ধে তমলুক থানায় এফআইআর দায়ের হয়েছে। অভিযোগকারীদের হুঁশিয়ারি, ‘‘অনশনমঞ্চে হামলায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করা না হলে রাজ্য জুড়ে বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।’’
স্থানীয় সূত্রে খবর, শনিবার বিজেপির মিছিল যাওয়ার সময় তৃণমূল সমর্থিত ওই অনশনমঞ্চ থেকে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ‘চোর-চোর’ আওয়াজ ওঠে। সেই সময় মিছিল থেকে কয়েক জন জুতো নিয়ে চাকরিহারাদের অনশনমঞ্চের দিকে তেড়ে যান বলে অভিযোগ। মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুরের পাশাপাশি ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের হামলায় বেশ কয়েক জন শিক্ষক জখম হয়েছেন। শনিবার কোনও রকমে পরিস্থিতি সামাল দেয় পুলিশ।
কিন্তু ওই ঘটনার প্রতিবাদে পরে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন অনশনরত চাকরিহারা শিক্ষকেরা। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল তৃণমূল প্রাইমারি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি মইদুল ইসলাম বলেন, “অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে আমরা চাকরিখেকো বলেই জানতাম। এঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই শুভেন্দু অধিকারীর হোমটাউন তথা অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে কেন্দ্র থেকে প্রার্থী হয়েছেন সেখানে গত ২৯ এপ্রিল থেকে অনশন চালাচ্ছেন চাকরিহারা শিক্ষকেরা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে চাকরিহারারা এই আন্দোলনে শামিল হয়েছেন। শনিবার সেই অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মিছিল থেকে পরিকল্পিত ভাবে আমাদের ওপর হামলা হয়েছে। আমি নিজেও অনশন করছি।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যে ভাবে পুলিশের সামনে আমাদের উপর হামলা হয়েছে, আমাদের প্রাণসংশয়ের অবস্থা তৈরি হয়েছিল। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে রাজ্যে বড়সড় আন্দোলনে নামছি আমরা।’’
তবে ওই ঘটনার পর থেকে মুখে কুলুপ এঁটেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। শনিবার রাতেই তমলুকের হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়েছিলেন অভিজিৎ নিজে। তবে চাকরিহারাদের অনশন মঞ্চে হামলার বিষয়ে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।