Lok Sabha Election 2024

দার্জিলিংয়ে রাজু বিস্তার বিরুদ্ধে প্রার্থী হবেন বিজেপি বিধায়ক? নিরস্ত করতে কথা চান বিশাল

রাজুর পাশাপাশি প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রিংলাকেও দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার কথা ভাবা হয়েছিল। এ কথা জানার পরেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন বিষ্ণু।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৪ ১৬:৫৭
Share:

(বাঁ দিকে) বিজেপি প্রার্থী রাজু বিস্তা। বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

দার্জিলিংয়ের ভূমিপুত্রকে দলের তরফে প্রার্থী না করা হলে তাঁর বিরুদ্ধে ভোটে প্রার্থী হবেন তিনিই। এমনটাই ঘোষণা করেছিলেন কার্শিয়াংয়ের বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা। রবিবার রাতে দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের দফতর থেকে প্রকাশিত প্রার্থী তালিকায় দেখা যায় দার্জিলিং কেন্দ্রে আবারও প্রার্থী হয়েছেন বিদায়ী বিজেপির সাংসদ রাজু বিস্তা। সেই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই দলীয় সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণু সমাজমাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন, নির্দল প্রার্থী হিসেবে তিনি দার্জিলিং লোকসভায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এমন ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর অস্বস্তিতে পড়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাই দার্জিলিং জেলা সংগঠনের দায়িত্ব থাকা বিজেপি বিধায়ক বিশাল লামা বিষ্ণুকে তাঁর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাবেন। কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়কের বিদ্রোহী মনোভাবের কথা দলের অন্দরে সকলেরই জানা ছিল। এমনকি বিধানসভায় অম্বেডকর মূর্তির নিচে পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে ধর্না দিয়েছিলেন এই বিধায়ক। ওই একই দিনে বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে বিক্ষোভ দেখিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন বিষ্ণু।

Advertisement

এমন আচরণের পরেও বিজেপি নেতৃত্ব বিষ্ণুর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি। কিন্তু রবিবার তাঁর আচরণে ক্ষুব্ধ রাজ্য বিজেপির একাংশ। তাঁর এমন ভূমিকা নিয়ে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীও। বিষ্ণুর এহেন ঘোষণার পর কালচিনির বিধায়ক বিশাল কার্শিয়াঙে তাঁর বাড়ি গিয়ে দেখা করবেন বলে মনস্থির করেছেন। বিষ্ণু যাতে নিজের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন, সেই বিষয়ে অনুরোধ জানানো হবে তাঁর কাছে। এ প্রসঙ্গে কালচিনির বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা বিজেপি পরিবারের সদস্য। এক পরিবারের সদস্য হলে যে কোনও বিষয়ে সমস্যা হতেই পারে। সমস্যা তৈরি হয়েছে বলে তিনি আর আমাদের পরিবারের সদস্য নন, এমনটা তো নয়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে তাঁর সঙ্গে কথা বলে বিজেপি প্রার্থীর হয়ে প্রচারে নামানোর চেষ্টা করব।’’ প্রসঙ্গত, বিজেপির তরফে দার্জিলিং জেলা সংগঠনের দায়িত্বে রয়েছেন কালচিনির বিধায়ক বিশাল। বিষ্ণুর মনোভাবের কথা জেনে তাঁর সঙ্গে আগেও এ বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। তবে কোনও ভাবেই বিষ্ণুকে তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরানো যায়নি।

এ প্রসঙ্গে কার্শিয়াঙের বিজেপি বিধায়ক বলেন, ‘‘আমি প্রথম থেকেই জানিয়ে আসছিলাম যে, বিজেপি থেকে দার্জিলিঙের কোনও ভূমিপুত্রকে প্রার্থী করা হোক। কারণ, ২০০৯ সালে রাজস্থান থেকে যশোবন্ত সিংহকে, ২০১৪ সালে দিল্লি থেকে সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়াকে, ২০১৯ সালে রাজু বিস্তাকে মণিপুর থেকে এনে প্রার্থী করা হয়। কোনও বারই দার্জিলিংঙের ভূমিপুত্রকে প্রার্থী না করা হলে পাহাড়ের মানুষের মনের কথা বুঝবে কী করে? তাই আমি চেয়েছিলাম এ বার অন্তত দল পাহাড়ের কোনও ব্যক্তিকে প্রার্থী করুক। তেমনটা না হওয়ায় আমি প্রার্থী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’’ প্রসঙ্গত, পাঁচ বছর আগে যখন রাজু দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী হন, তখন তিনি মণিপুরের ভোটার ছিলেন। দার্জিলিং জেলা বিজেপির এক নেতার কথায়, ‘‘এখন আর আমাদের সাংসদকে মণিপুরের লোক বলা চলে না। কারণ, তিনি দার্জিলিং লোকসভা কেন্দ্রের ভোটার হয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, নিজেও এই লোকসভা কেন্দ্রের বাসিন্দা হয়ে গিয়েছেন। তা ছাড়া গত পাঁচ বছরে তিনি যে ভাবে এলাকার মানুষ এবং বিজেপি কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে শাসকদলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছেন, তাতে তাঁর বিরুদ্ধে বিষ্ণুপ্রসাদের বিরোধিতার কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছে না দল।’’ উল্লেখ্য, রাজুর পাশাপাশি প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধনকেও দার্জিলিং কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করার কথা ভাবা হয়েছিল বিজেপির তরফে। তিনি আবার সিকিমের বাসিন্দা। এমন কথা জানার পরেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে দাঁড়ানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন বিষ্ণু। সংগঠনের তরফে তাকে নিরস্ত করার যে প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে তা আদৌ সফল হয় কি না, তা ভবিষ্যৎই বলবে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement