Lok Sabha Election 2024 Results

বাংলা থেকে একাধিক নাম, চর্চায় পূর্ণমন্ত্রীও, দৌড়ে এগিয়ে সুকান্ত, শমীক

সকলকে মানিয়ে মন্ত্রিসভা গঠনই এখন সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ‘টিম মোদী’র কাছে। বিজেপির একটি সূত্রের ইঙ্গিত, তার মধ্যেই মোদী মন্ত্রিসভায় এক জন পূর্ণ মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী পেতে পারে বাংলা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ জুন ২০২৪ ০৭:৩৬
Share:

(বাঁ দিকে) সুকান্ত মজুমদার এবং শমীক ভট্টাচার্য (ডান দিকে)। —নিজস্ব চিত্র।

রাজ্যে বিজেপির ফল খারাপ হলেও নরেন্দ্র মোদীর তৃতীয় বারের মন্ত্রিসভায় পূর্ণমন্ত্রী পেতে পারে বাংলা। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় এই প্রথম শরিক নিয়ে ঘর করতে হবে মোদীকে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন শরিক দলের তরফে মন্ত্রিত্বের জন্য দর কষাকষি শুরু হয়ে গিয়েছে। সকলকে মানিয়ে মন্ত্রিসভা গঠনই এখন সব চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ‘টিম মোদী’র কাছে। বিজেপির একটি সূত্রের ইঙ্গিত, তার মধ্যেই মোদী মন্ত্রিসভায় এক জন পূর্ণ মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী পেতে পারে বাংলা।

Advertisement

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় কৃষ্ণনগরের বিজেপি সাংসদ সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় পূর্ণমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার পরে দু’বার বিজেপির মন্ত্রিসভা গঠন হলেও পূর্ণ মন্ত্রিত্বের শিকে ছেঁড়েনি বাংলার সাংসদদের বাইরে। প্রথম মোদী সরকারের সময়ে বাংলা থেকে বাবুল সুপ্রিয় ও সুরিন্দর সিংহ অহলুওয়ালিয়া কেন্দ্রে প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। দ্বিতীয় মোদী সরকারের আমলে বাংলা থেকে ৬ জন মন্ত্রিত্ব পেয়েছিলেন। তবে সকলেই প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। প্রথম পর্যায়ে দেবশ্রী চৌধুরী ও বাবুল প্রতিমন্ত্রী হয়েছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে শান্তনু ঠাকুর, জন বার্লা, সুভাষ সরকার ও নিশীথ প্রামাণিক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্বভার সামলেছিলেন। কিন্তু এই লোকসভা নির্বাচনে বার্লা টিকিট পাননি। সুভাষ এবং নিশীথ হেরে গিয়েছেন। শান্তনু ফের জিতেছেন। একটি সূত্রের দাবি, এনডিএ-র নতুন মন্ত্রিসভাতেও দেখা যেতে পারে তাঁকে। উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রিসভায় থাকতে পারেন আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা। এ ছাড়াও তমলুকের জয়ী সাংসদ, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ও লড়াইয়ে আছেন বলে সূত্রের ইঙ্গিত।

তবে শান্তনুর লড়াই রানাঘাটের সাংসদ জগন্নাথ সরকার ও বিষ্ণুপুরের সাংসদ সৌমিত্র খাঁয়ের সঙ্গে। তার মধ্যে সৌমিত্র ইতিমধ্যে ‘বেসুরো’ বাজতে শুরু করেছেন। এক দিকে দলের নেতাদের খোলাখুলি সমালোচনা, অন্য দিকে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ধারণা, দলবদলের জল্পনা উস্কে দিয়ে দলের উপরে চাপ বাড়ানোর কৌশল নিয়েছেন সৌমিত্র। সে ক্ষেত্রে তাঁকে মন্ত্রিত্ব দিয়ে সাময়িক ভাবে তাঁর পরবর্তী কোনও আকস্মিক পদক্ষেপ আটকানোর চেষ্টা করতে পারে দল।

Advertisement

বিজেপি সূত্রের দাবি, রাজ্য থেকে পূর্ণমন্ত্রী পাওয়ার ক্ষেত্রে দু’টি নাম ভাসছে। দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার দ্বিতীয় বার বালুরঘাট থেকে জিতে সংসদে যাচ্ছেন। তাঁর পূর্ণমন্ত্রী হওয়ার সম্ভবনা আছে। তবে তেমনটা হলে রাজ্য সংগঠনের শীর্ষ পদে বিজেপি তাঁকে না-ও রাখতে পারে। সে ক্ষেত্রে দলের রাজ্য সংগঠনে ব্যাপক রদবদল আসতে পারে। বাংলায় ফল খারাপ হওয়ার পরেই দলের কর্মীদের একাংশ দিলীপ ঘোষকে রাজ্য সভাপতি দেখতে চাইছেন। এই প্রসঙ্গে দিলীপ অবশ্য বলেছেন, ‘‘দল যখন হারে, সঙ্কট যখন আসে, তখন কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। মন বিচলিত হয়। তখন তারা একটা শক্ত খুঁটি আঁকড়ে ধরতে চায়।’’ সুকান্ত মন্ত্রী হলে তিনিই হবেন মোদী মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের প্রতিনিধি। তখন আবার মনোজের মন্ত্রিত্ব পাওয়ার সম্ভবনা কমবে।

একটি সূত্রের দাবি, পূর্ণমন্ত্রিত্বের দৌড়ে আছেন রাজ্যসভার সাংসদ শমীক ভট্টাচার্যও। রাজ্য থেকে দলের সাংসদদের মধ্যে বিজেপি রাজনীতিতে সব চেয়ে বর্ষীয়ান তিনি। এ ছাড়া, তিনি সঙ্ঘ পরিবারের ঘনিষ্ঠও। অন্দরের খবর, সঙ্ঘের চাপেই তিনি রাজ্যসভার সাংসদ হয়েছেন। লোকসভায় দলের খারাপ ফলের কারণে আদি নেতাদের গুরুত্ব বাড়তে পারে। সেই অঙ্কে মন্ত্রিত্ব পেতে পারেন শমীক। যদিও দলে মন্ত্রিত্বের দৌড় প্রসঙ্গে শমীকের বক্তব্য, ‘‘এটা সম্পূর্ণ প্রধানমন্ত্রীর বিবেচ্য বিষয়। প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় দল এবং সংগঠনের সঙ্গে বসে ঠিক করবেন, কাকে কী দায়িত্ব দেওয়া হবে। বিজেপির মতাদর্শ নিয়ে যাঁরা রাজনীতি করেন, মন্ত্রিত্ব নিয়ে তাঁদের বাড়তি আবেগ নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement