—প্রতীকী চিত্র।
ভোটপর্ব মেটার পরেও গভীর রাত পর্যন্ত তেতে রইল দুর্গাপুর। বিজেপি দুর্গাপুর ও কোকআভেন থানায় বিক্ষোভ দেখায়। পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতের অভিযোগও তোলে। যদিও পুলিশ অভিযোগ মানেনি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ভোটের দিন বিকেলে তানসেন রোড এলাকায় তৃণমূল, সিপিএম ও বিজেপি— তিন দলেরই বুথ কার্যালয় ভাঙচুর করা ও কর্মীদের মারধরের অভিযোগ তোলে সিপিএম ও বিজেপি। পাল্টা বিজেপি ও সিপিএমের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলে তৃণমূল। রাজ্যের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদারের কটাক্ষ, “গণতন্ত্রের নাম করে যাঁরা না কি কান্না কাঁদেন, তাঁরা গণতন্ত্রের উৎসবের শেষ বেলায় আর নিজেদের ধরে রাখতে পারলেন না।” কয়েকজন কর্মী জখম হয়েছেন বলে দাবি তৃণমূলের। শেষ পর্যন্ত অশান্তির ঘটনায় জড়িত অভিযোগে পুলিশ বিজেপির যুব সভাপতি প্রদীপ মণ্ডল-সহ চার জন কর্মীকে আটক করেছে।
এই খবর পেয়েই দুর্গাপুর থানায় যান দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-সহ দলের কর্মীরা। তাঁরা থানার ভিতরে ঢুকে পড়েন। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিধায়ক। তাঁর বক্তব্য, অশান্তির ঘটনায় এক তরফা ভাবে বিজেপির কর্মীদের আটক করা কিছুতেই তাঁরা মানবেন না। তিনি দাবি করেন, হয় আটক বিজেপি কর্মীদের ছেড়ে দিতে হবে। তা না হলে তৃণমূলের অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে হবে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ পরে আটকদের ছেড়ে দেয়। লক্ষ্মণের অভিযোগ, “শাসক দলের কর্মীদের ধরার ক্ষমতা নেই তৃণমূলের দলদাস পুলিশের। তাই বাধ্য হয়ে আমাদের বিক্ষোভের চাপে পুলিশ আটক কর্মীদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হল।” যদিও পুলিশ জানায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রাখতে আইন মেনেই সাময়িক কয়েকজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
এ দিনই সন্ধ্যায় ভোট মেটার পরে নেপালিপাড়া হিন্দি হাই স্কুলের বুথে দলীয় পোলিং এজেন্টদের আটকে রাখা হয় বলে অভিযোগ বিজেপির। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের বাইরে বার করে দেয়। বিজেপি নেতা চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, স্কুলের বাইরে বেরোতেই তাঁদের পোলিং এজেন্টদের বেধড়ক মারধর করে তৃণমূলের কয়েকজন। অবিলম্বে তাঁদের গ্রেফতারের দাবিতে তাঁর নেতৃত্বে বিজেপির কর্মীরা কোকআভেন থানার সামনে গভীর রাত পর্যন্ত অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
চন্দ্রশেখরের দাবি, “এক মন্ত্রীর অনুগ্রহে এই থানায় আসা এক আধিকারিক শাসক দলের (তৃণমূল) হয়ে নির্লজ্জের মতো কাজ করে চলেছেন।” যদিও সেই অভিযোগ মানেনি পুলিশ। অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “হারের ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই এ ভাবে পরিবেশ অশান্ত করার চেষ্টা করছে।”