রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। —ফাইল চিত্র।
উত্তরবঙ্গে নির্বাচন চলাকালীন বাংলার রাজ্যপালকে সেখানে না-যাওয়ার পরামর্শ দিল নির্বাচন কমিশন। তারা জানিয়েছে, নির্বাচনের দিন রাজ্যের রাজ্যপাল যদি নির্বাচনক্ষেত্রে উপস্থিত থাকেন, তবে তা ভোটের আদর্শ আচরণ বিধির পরিপন্থী। যে হেতু উত্তরবঙ্গের ওই তিন কেন্দ্রে ভোটের প্রচার পর্ব শেষ এবং সাইলেন্স পিরিয়ড চলছে, তাই ওই এলাকার ভোটার ছাড়া আর কেউ সেখানে যেতে পারবেন না। ফলে রাজ্যপালও কোচবিহার গেলে তা হবে বিধিভঙ্গের শামিল।
শুক্রবার থেকে শুরু হচ্ছে লোকসভা ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া। রাজ্যে প্রথম দফার নির্বাচন হবে উত্তরবঙ্গের তিন লোকসভা কেন্দ্র— জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারে। এর মধ্যে ভোটঘোষণার পর থেকে বার বার উত্তপ্ত হয়েছে কোচবিহার। অশান্তির খবর এসেছে দিনহাটা, শীতলখুচি থেকে। এ ছাড়াও গত কয়েক বছরে হওয়া প্রতি ভোটপর্বেই কোচবিহার উত্তপ্ত হয়েছে। সম্ভবত সেই জন্যই রাজ্যপাল ভোট চলাকালীন সরেজমিনে কোচবিহারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে চেয়েছিলেন। রাজ্যপাল বলেছিলেন, ভোট চলাকালীন তিনি নিজে কোচবিহারে থাকবেন। সরেজমিনে খতিয়ে দেখবে এলাকার পরিস্থিতি এবং নিরাপত্তার ব্যবস্থা। কিন্তু সেই সফরে বাধা দিল কমিশনই।
তবে শুধু নির্বাচনী বিধিভঙ্গই নয়, রাজ্যপালকে কোচবিহারে না-যাওয়ার পরামর্শের নেপথ্যে অন্য কারণও রয়েছে। রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যপাল কোনও জেলায় গেলে কিছু প্রোটোকল মানতে হয়। প্রথমত, তিনি যে জেলায় যাবেন, সেখানে তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে উপস্থিত থাকতে হয় সেই জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারকে। শুধু তা-ই নয়, রাজ্যপাল এলে তাঁর নিরাপত্তার জন্যও রাখতে হয় বিশেষ ব্যবস্থা। কিন্তু ভোট চলাকালীন যে হেতু জেলাশাসক জেলার নির্বাচনেরও দায়িত্বপ্রাপ্ত (ডিস্ট্রিক্ট ইলেকশন অফিসার বা ডিইও) , তাই তাঁর পক্ষে ভোটের কাজ সামলে সেই দায়িত্ব পালন করা সম্ভব নয়। বিশেষ করে ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে তিনি ব্যস্ত থাকবেন মূলত ভোটের নানা কাজ নিয়েই। তাতে রাজ্যপালের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সমস্যা হতে পারে। এই সমস্ত দিক বিচার করেই রাজ্যপালকে কোচবিহারে না-যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কমিশন।